বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:০০ টা

ক্রিপস মিশন

ক্রিপস মিশন হলো ১৯৪২ সালের ২৩ মার্চ ক্যাবিনেট মন্ত্রী স্যার স্ট্যাফোর্ড ক্রিপসের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ভারতে প্রেরিত একটি মিশন। এ মিশনের মাধ্যমে ভারতকে নতুন কিছু প্রস্তাব দেওয়া হয়। শ্রমিক দলের একজন চরমপন্থি সদস্য ও সে সময়ের হাউস অব কমন্সের নেতা ক্রিপস ভারতীয় জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের একজন প্রবল সমর্থক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দুটি বিষয়ের ওপর বিবেচনা করে ক্রিপস মিশন প্রণোদিত হয়। প্রথমত, ১৯৪০ সালের অক্টোবরে গান্ধী কর্তৃক সত্যাগ্রহ আন্দোলনের আহবান, যার উদ্দেশ্য ছিল ভারতে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ব্রিটিশদের যুদ্ধ তৎপরতাকে বিঘিœত করা এবং ব্রিটিশদের স্বার্থে এর সমাপ্তি টানা। দ্বিতীয়ত, যুদ্ধে জাপানিদের হাতে সিঙ্গাপুর (১৯৪২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি), রেঙ্গুন (৮ মার্চ) ও আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের (২৩ মার্চ) পতন সমগ্র ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক কাঠামোকে হুমকির সামনে ফেলে দিয়েছিল। এ রকম সংকটময় পরিস্থিতিতে ব্রিটিশরা উপলব্ধি করেছিল, ভারতীয়দের সমর্থন পেতে হলে কিছু কাজ করতে হবে।

ক্রিপস প্রস্তাবে যুদ্ধের পর যত দ্রুত সম্ভব ব্রিটিশ কমনওয়েলথের ভিতর একটি ভারতীয় ইউনিয়ন গঠনের ইচ্ছার কথা পুনরাবৃত্তি করা হয় এবং তার জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব পেশ করা হয়। ইলেকটোরাল কলেজের মতো কাজ সম্পাদনের জন্য প্রাদেশিক আইন পরিষদ কর্তৃক একটি সংসদীয় সভা নির্বাচিত করতে হবে। এ সংসদই এরপর চুক্তি সম্পাদনের জন্য ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবে। এতে কমনওয়েলথ থেকে ভবিষ্যতে বের হয়ে যাওয়ার অধিকারের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল। যোগদানের বিষয়টি ভারতীয় রাষ্ট্রসমূহের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে দেশীয় রাজন্যবর্গের সম্পাদিত চুক্তি পরিবর্তনের সুযোগ রাখা হয়। পরবর্তী যুদ্ধকালীন সম্পূর্ণ সময়ে এ প্রস্তাব ভারতীয় রাজনীতিতে প্রাধান্য বজায় রাখে। যদিও ব্রিটিশ কর্মকর্তারা দাবি করেন, ক্রিপস প্রস্তাব তার সরলতা ও স্পষ্টতার জন্য চিহ্নিত, তার পরও ব্যাপক দ্ব্যর্থবোধকতা ও ভুল বোঝাবুঝির জন্য শেষ পর্যন্ত এটি বিফল হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর