বৃহস্পতিবার, ১ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

অজুর গুরুত্ব ও ফজিলত

মুফতি মাহমুদুল হক জালীস

অজুর গুরুত্ব ও ফজিলত

কোনো কোনো ইবাদতের জন্য পবিত্রতা অপরিহার্য। নারী-পুরুষ উভয়কেই পবিত্র হওয়ার জন্য অজু করতে হয়। ইসলামের বিধান অনুসারে, অজু দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধৌত করে পবিত্রতা অর্জনের একটি মাধ্যম। এর আভিধানিক অর্থ, সৌন্দর্য ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। পরিভাষায় অজু বলা হয় পবিত্রতা অর্জনের নিয়তে নির্দিষ্ট অঙ্গসমূহে পানি ব্যবহার করা। পবিত্রতার ফজিলত প্রসঙ্গে কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে ইমানদারগণ, নিশ্চয়ই মুশরিকরা নাপাক বা অপবিত্র’ (সুরা তওবা-২৮)। অন্য আয়াতে আল্লাহ পবিত্রতার গুরুত্ব সম্পর্কে আরও বলেন, ‘তোমার পোশাক-পরিচ্ছেদ পবিত্র রাখ’ (সুরা মুদ্দাসসির-৪)।

যারা পবিত্রতা অর্জন করে আল্লাহ তাদের  প্রশংসা করেছেন। তাদের ভালোবাসার কথা বলেছেন। এ প্রসঙ্গে কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং ভালোবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদের’ (সুরা বাকারা-২২২)। আল্লাহ মসজিদে কুবার অধিবাসীদের প্রশংসা করেছেন। কারণ তারা ভালোভাবে পবিত্রতা অর্জন করে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালোবাসে। আর আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন’ (সুরা তওবা-১০৮)। অজুর মাধ্যমে পাপ মোচন হয় ও মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। হাদিসে এসেছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো মুমিন বান্দা যখন অজু করে, তখন মুখ ধৌত করার সময় পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে তার ওইসব গুনাহ বের হয়ে যায়, যার দিকে তার দুই চোখের দৃষ্টি পড়েছিল, যখন দুই হাত ধৌত করে তখন পানির সঙ্গে অথবা শেষ বিন্দুর সঙ্গে তার ওইসব গুনাহ বের হয়ে যায়, যেগুলো তার দুই হাতে সম্পাদন করেছিল। আবার যখন দুই পা ধৌত করে, তখন পানির সঙ্গে অথবা পানির শেষ বিন্দুর সঙ্গে তার ওইসব গুনাহ বের হয়ে যায়, যেগুলোর দিকে তার দুই পা অগ্রসর হয়েছিল; ফলে অজু শেষে লোকটি তার সমুদয় গুনাহ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হয়ে যায়’ (মুসলিম)।

অজুর গুরুত্ব কেয়ামতের দিনও প্রতীয়মান হবে। কারণ হাদিসে এসেছে, অজুর চিহ্ন দ্বারা কেয়ামতের ময়দানে উম্মতে মুহাম্মদিকে অন্যসব উম্মত থেকে পৃথক করা হবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন আমার উম্মতকে এমন অবস্থায় আহ্বান করা হবে, অজুর প্রভাবে তাদের হাত-পা ও মুখমন্ডল উজ্জ্বল থাকবে। তাই তোমাদের মধ্যে যে এ উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে নিতে পারে, সে যেন তা করে’ (বুখারি)। অজু করে কেউ যদি দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহ তাঁর জান্নাত ওয়াজিব করে দেবেন। হাদিসে এসেছে, হজরত উকবা ইবনে আমের জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, কোনো মুসলমান ভালোভাবে অজু করে অতঃপর খুশু-খুজুর সঙ্গে উত্তমরূপে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায় (আবু দাউদ)।

            লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম       মাদরাসা কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর