শিরোনাম
সোমবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

কিশোর অপরাধ

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কঠোর হতে হবে

যেসব অপরাধীর বয়স ১৮ বছরের নিচে, তাদের শিশু উন্নয়ন সংশোধন কেন্দ্রে রাখা হয় এই উদ্দেশে, তারা যাতে নিজেদের সংশোধনের সুযোগ পায়। বাংলাদেশের শিশু আইন-২০১৩ অনুযায়ী, ১৮ বছর বা এর কম বয়সী শিশু-কিশোরের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের জেলে নেওয়ার পরিবর্তে উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠাতে হবে, যাতে তারা সংশোধিত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে। তারপরও শিশু-কিশোরদের অপরাধ প্রবণতা বাড়ছে। লকডাউনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে কিশোর অপরাধ মাথাচাড়া দিয়েছে। খুলনায় শনিবার পাঁচটি হামলার ঘটনায় ছয়জনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। লকডাউনের সময় সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত পাড়া-মহল্লায় উঠতি কিশোর-যুবকদের আড্ডা বেড়েছে। মাদক বিক্রি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় উদ্বেগ ছড়াচ্ছে। গ্রুপ করে বখাটে কিশোররা মাদক সেবন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, খুনের মতো অপরাধে যুক্ত হচ্ছে। এ ছাড়া তুচ্ছ ঘটনা সিনিয়র-জুনিয়র নিয়ে বিবাদেও হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা, ব্ল্যাকমেলিং ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের কয়েকটি ঘটনায় কিশোর অপরাধীদের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, কিশোরদের অপরাধে জড়ানোর প্রবণতা কমেনি, বরং প্রকোপ ও পরিধি-দুই-ই বেড়েছে। তারা বিভিন্ন গ্যাং গড়ে তুলছে। তারা ভয়াবহ অপরাধ এমনকি জড়িয়ে পড়ছে জঙ্গিবাদেও। অন্যদিকে অভিভাবকরা অর্থ উপার্জনে ব্যস্ত। কারণ, সমাজে অর্থ-বিত্তশালীদের মূল্যায়ন বেশি হতে দেখছেন তারা। একটা সময় ভালো ছাত্র, গাইয়ে, নৃত্য বা আবৃত্তি শিল্পীদের কদর ছিল; এখন নেই। কিশোরদের সামনে কোনো রোলমডেল নেই। কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিদের পছন্দের প্রবণতা হলো সেলুনগুলোয় হানা দেওয়া। কে কেমন চুল পরিচর্যা করবে এর সঙ্গে অপরাধের কোনো সম্পর্ক নেই। কিশোরেরা কেন অপরাধে জড়াচ্ছে,  তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা থাকলেও সরকারের বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর তাতে আগ্রহ নেই।  তাই ভালো ভালো আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করা হলেও সেসবের বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর