রবার্ট ক্লাইভ বাংলায় ব্রিটিশ শাসনের অন্যতম স্থপতি। ১৭৪৮ সালে মাদ্রাজ সেনাবাহিনীতে সর্বনিম্ন কমিশনপ্রাপ্ত অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। লেফটেন্যান্ট হিসেবে তিনি একবার এক মারাঠা নেতার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা এবং মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দেবীকোট দুর্গ অধিকার করেন। ক্লাইভের দেবীকোট দুর্গ অধিকারের বিবরণ দিতে গিয়ে মিল সেনাবাহিনীর অগ্রভাগে অবস্থান নিয়ে সৈন্যদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করায় ক্লাইভের বিরুদ্ধে হঠকারিতার অভিযোগ এনেছেন। ক্লাইভের পরবর্তী সামরিক তৎপরতার নিদর্শন তাঁর আর্কট অভিযান, যাতে তিনি প্রচলিত সামরিক নিয়মনীতি লঙ্ঘন করে নবাবের দুর্গে নৈশ অভিযান পরিচালনা এবং কোনো প্রাণহানি না ঘটিয়ে সিপাহিদের পালাতে বাধ্য করেন। ক্লাইভের দেবীকোট ও আর্কট অভিযান তাঁর বেপরোয়া স্বভাবের সাক্ষ্য বহন করে। ১৭৫৩ সালের প্রথম দিকে ক্লাইভ লন্ডনে ফিরে গেলে দাক্ষিণাত্যে তাঁর অব্যাহত বিজয়ের কৃতিত্বের জন্য তাঁকে বীরোচিত সংবর্ধনা দেওয়া হয়। কর্ণাটের যুদ্ধে তাঁর সাফল্যের জন্য কোর্ট অব ডিরেক্টর্স তাঁকে সম্মানিত করে এবং ভোজসভায় ‘জেনারেল ক্লাইভ’ নামে আখ্যাত করে তাঁকে রত্নখচিত তরবারি উপহার দেওয়া হয়। পলাশীর যুদ্ধে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করা রবার্ট ক্লাইভের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব। এর মাধ্যমে ভারতবর্ষে প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসন কায়েম হয়। ক্লাইভ ভারতবর্ষে ব্রিটিশ উপনিবেশ প্রতিষ্ঠায় মুখ্য ভূমিকা পালন করলেও তাঁর পরিণাম সুখের হয়নি। দেশে ফিরলে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে তিনি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন।