শুক্রবার, ১৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

কোরবানির প্রস্তুতি

মুনাফাখোরি মনোভাব কাম্য নয়

দেশের পাঁচ দশকের ইতিহাসে এ বছর প্রথমবারের মতো দেশি গরুতেই দেওয়া হবে কোরবানি। প্রতি বছর কোরবানির পশুর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ অনুমোদিত এবং অননুমোদিত পথে আমদানি হয় ভারত ও মিয়ানমার থেকে। এমনকি নেপাল থেকেও আসত কোরবানির পশু। গত বছর করোনাভাইরাসের আগ্রাসন সত্ত্বেও বিপুলসংখ্যক পশু এসেছে প্রতিবেশী দুই দেশ থেকে। এবারই প্রথম বিদেশি গরু ছাড়াই সম্পন্ন হবে কোরবানি। বাংলাদেশে গরুর দাম ভারত ও মিয়ানমারের চেয়ে গড়ে দ্বিগুণ। যে কারণে সীমান্তে কড়াকড়ি সত্ত্বেও অবৈধ পথে গরু আমদানিতে বাদ সাধা কখনো সম্ভব হয়নি। এ বছর মহামারী ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ায় দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত বন্ধ। চোরাকারবারিদের তৎপরতাও প্রায় স্তব্ধ। এবার কোরবানির চাহিদার তুলনায় দেশে গরু ও ছাগল বেশি উৎপাদন হয়েছে বলে দাবি করেছেন খামার মালিকরা। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর ১ কোটি ২০ লাখ গবাদি পশু কোরবানি হলেও এবার বেশি হবে বলে আশা করছেন তারা। খামারিদের মতে দেশে এবার কোরবানিযোগ্য গবাদি পশু রয়েছে ১ কোটি ৫০ লাখ। এর মধ্যে কোরবানিযোগ্য গরু ৫৫ লাখ এবং ছাগল-ভেড়া -মহিষ ৯৫ লাখ। যদিও করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছর ১ কোটি ২০ লাখ গবাদি পশু কোরবানি করা হয়েছিল। এবার পরিস্থিতির উন্নতি হলে কোরবানির পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে। তবে হাটে গরুর কোনো সংকট হবে না বলে খামার মালিকরা আশ্বস্ত করেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথ প্রক্রিয়ায় কোরবানির হাট বসাতে সরকারের পক্ষ থেকে ১৮ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দেশি পশু দিয়ে কোরবানি সম্পন্ন হলে তা একটি আশাজাগানিয়া খবর হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে বিদেশি পশু আমদানি না হওয়ায় খামারিরা অতিমুনাফায় মেতে উঠলে তা হবে তাদের জন্য আত্মঘাতী প্রবণতা। সে ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষেরই দাবি থাকবে বিদেশ থেকে পশু আমদানির। ভারত ও মিয়ানমারের চেয়ে বাংলাদেশে গরুর দাম দ্বিগুণ হওয়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। আমরা খামারিদের স্বার্থ সংরক্ষণের পক্ষে তবে সাধারণ মানুষের স্বার্থ যাতে কোনোভাবে ক্ষুণ্ণ না হয় তা-ও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর