আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা তার সেনা সরিয়ে নিচ্ছে সেপ্টেম্বরের মধ্যেই। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এমন ঘোষণা ভুল বলে কঠোর সমালোচনা করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। শুধু সমালোচনা নয়, আফগান জনগণের জন্য তিনি কুম্ভীরাশ্রুও প্রদর্শন করেছেন। বলেছেন, এর ফলে দেশটির নিরীহ মানুষ তালেবান সন্ত্রাসীদের হত্যাকান্ডের মুখে পড়বে। যে কথা ভেবে তার হৃদয় ভেঙে খানখান হয়ে যাচ্ছে। বুশের এ কান্নাকাটিকে সত্যি বলে ভাববেন জগৎ-সংসারে এমন কেউ আছেন কি না আমাদের জানা নেই। খোদ আমেরিকানরাই তাকে কী চোখে দেখেন তার প্রমাণ মেলে এক চুটকিতে।
বুশ শাসনামলে সম্ভবত ২০০৪ সালে আমেরিকাপ্রবাসী এক আত্মীয়ার কাছ থেকে চুটকিটি শোনা। চুটকিটি হলো- ‘আমেরিকান এক কিশোরের দামি ভিডিও গেম কেনার শখ হলো। বাবা-মা এতই কৃপণ যে তাদের কাছে ডলার চাইতে ভরসা হলো না। শেষমেশ অনেক ভেবে সে সিদ্ধান্ত নিল ভিডিও কিনতে ঈশ্বরের সাহায্য চাইবে। যেমন ভাবা তেমন কাজ। সে পরম দয়ালু ঈশ্বর বরাবর চিঠি লিখে ১০০ ডলার সাহায্য চাইল। তারপর চিঠিটা খামে ভরে ডাকটিকিট লাগিয়ে পোস্টবক্সে ফেলে দিল। পোস্ট অফিসের লোকেরা তো ঈশ্বর বরাবর চিঠি পেয়ে অবাক। কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা তাদের। শেষ পর্যন্ত তারা সিদ্ধান্ত নিল চিঠিটা হোয়াইট হাউসে পাঠানো যেতে পারে। যথারীতি চিঠিটা গেল প্রেসিডেন্ট বুশের কাছে। তিনি শিশুটিকে খুশি করতে কিছু ডলার পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন। ভাবলেন বাচ্চা মানুষ ১০০ ডলার দিয়ে ও কী করবে। ৫ ডলার পাঠালেই সে খুশি হবে।
দুই দিন পর বালকটি বুশের পাঠানো ৫ ডলার পেল। সে এজন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে আরেকটি চিঠি লিখল। তাতে লিখল- ‘হে ঈশ্বর! তোমার পাঠানো ডলারের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। কিন্তু তুমি ডলারগুলো সরাসরি আমার কাছে না পাঠিয়ে হোয়াইট হাউসের ছ্যাঁচড়দের কাছে কেন পাঠালে বুঝলাম না। ওরা তোমার দেওয়া ১০০ ডলারের ৯৫ ডলারই মেরে দিয়েছে। আমি তোমার কাছে এর বিচার চাই।’
জোক মানে জোক। এর মধ্যে হয়তো সরাসরি কোনো সত্য নেই। তবে আছে সত্যের কিছু ইশারা। আমেরিকান প্রশাসনের বিশ্বাসযোগ্যতা সে দেশের শিশুদের কাছেও যে প্রশ্নবিদ্ধ জোকটিতে সে ইশারা দেওয়া হয়েছে। অবশ্য বিশ্ববাসীর কাছে মার্কিনিদের বিশ্বস্ততার সংকট দীর্ঘদিনের। ভিয়েতনামের মার্কিন তাঁবেদার এক শাসক ক্ষমতাচ্যুতির পর মন্তব্য করেছিলেন, ‘আমেরিকা যার বন্ধু তার আর শত্র“র প্রয়োজন হয় না’। কথাটা যে কতটা সত্য তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন ইরানের ক্ষমতাচ্যুত শাহেন শাহ রেজা শাহ পাহলভি। তাঁবেদার এই শাসক মার্কিনিদের পা-চাটা বলে পরিচিত ছিলেন ইরানের জনগণের কাছে। মার্কিন শাসকদের জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে উপঢৌকন পাঠাতেন বলেও রটনা রয়েছে। ইরানে মার্কিন স্বার্থের প্রতিভূ বলে বিবেচিত হতেন শাহেন শাহ ও তার রাজ পরিবার। রেজা শাহ পাহলভির পতনের পর যুক্তরাষ্ট্র তাকে নিয়ে বেশ ফাঁপরে পড়ে। ইরানের নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সুযোগ রাখতে শাহেন শাহকে যুক্তরাষ্ট্র রাজনৈতিক আশ্রয় দিতেও রাজি হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি মিসরে যান। সেখানেও নাকি সিআইএর এজেন্টরা তাকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। উদ্দেশ্য ছিল শাহের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ইরানি মোল্লাদের আস্থায় আনা। কিন্তু সে চেষ্টা সফল হয়নি।
অভিযোগ করা হয়, ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওসামা বিন লাদেনের নেতৃত্বাধীন জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার সদস্যরা যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। বিশ্বের বৃহত্তম বাণিজ্য কেন্দ্র নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার ধ্বংস হয়ে যায় এ হামলায়। মার্কিন সামরিক সদর দফতর পেন্টাগনও হামলার শিকার হয়। এমনকি লাদেন বাহিনীর টার্গেটে পরিণত হয় মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয় হোয়াইট হাউসও। এ হামলায় ব্যবহৃত হয়নি কোনো বোমা। ব্যবহৃত হয়নি মারণাস্ত্র। চাকু বা ছুরি দিয়ে আল-কায়েদা সদস্যরা বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী বিমান হাইজ্যাক করে। সে বিমানগুলোর দুটি সরাসরি আঘাত হানে টুইন টাওয়ারে। আর তাতেই হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ও কয়েক লাখ কোটি ডলারের সম্পদ ধ্বংস হয়। বুশ এ হামলার জন্য যে প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া দেখান তা ছিল অপ্রত্যাশিত ও হঠকারিতার শামিল। তিনি হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড ঘোষণা করেন। ক্রুসেড শব্দটির প্রতিশব্দ হলো ধর্মযুদ্ধ। মধ্যযুগে মুসলমানদের কবল থেকে যিশুর জন্মস্থান জেরুজালেমকে মুক্ত করতে ইউরোপের খ্রিস্টান রাজারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড ঘোষণা করেন।
বুশের এ বেসামাল বক্তব্য দেশে-বিদেশে তীব্র সমালোচিত হলে তিনি ক্রুসেডতত্ত্ব থেকে সরে আসেন। তবে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার নামে যে যুদ্ধংদেহী তৎপরতা চালান তা ছিল প্রতিহিংসা চরিতার্থের নামান্তর। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে আফগানিস্তানে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করা হয় একের পর এক জনপদ। লাখ লাখ মানুষ প্রাণ হারায় তাতে। অথচ তথ্য-উপাত্ত প্রমাণ করে আমেরিকায় নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলায় একজন আফগানও জড়িত ছিল না। যত দোষ নন্দ ঘোষ তত্ত্ব তুলে অভিযোগ তোলা হয় যে আল-কায়েদার দিকে। এর পয়দা যুক্তরাষ্ট্রের একান্ত অনুগত দেশ সৌদি আরবে। আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন সৌদি আরবের নাগরিক। ধনাঢ্য লাদেন পরিবারের সঙ্গে বুশ পরিবারের ব্যবসায়িক সম্পর্কও রয়েছে। আফগানিস্তানে সোভিয়েত ইউনিয়ন বা রাশিয়ার আধিপত্য মোকাবিলা করতে আমেরিকাই লাদেনকে কাজে লাগায়। সোভিয়েত সেনারা আফগানিস্তান ছেড়ে পালানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের দর্শন ছিল ‘খেল খতম পয়সা হজম’। নিজেদের সৃষ্ট আল-কায়েদার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তারা। যে কারণে বিন লাদেনের চেলাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংঘাত গড়ে ওঠে।
আফগানিস্তানের পর সাদ্দামের নেতৃত্বাধীন ইরাকে হামলার জন্য বুশ ইশপের গল্পের নেকড়ের মতো অপযুক্তির আশ্রয় নেন। বলা হয়, ইরাক ভয়ংকর মারণাস্ত্র মজুদ করছে। শতভাগ ভুয়া এ অভিযোগের পক্ষে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ যেভাবে অপযুক্তি দেওয়া শুরু করেন তাতে মনে হয়েছে পৃথিবীটা এক ভয়ংকর উন্মাদের কবলে পড়েছে।
বুশ ২০০০ সালে প্রতিপক্ষের চেয়ে অনেক কম পপুলার ভোট পেয়েও ক্ষমতায় আসেন। ২০০৪ সালের ৪ নভেম্বরের নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে কুপোকাত করেন প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে। এ নির্বাচনে বুশ হেরে যাবেন জনমত জরিপে এমন চিত্রই ফুটে ওঠে। দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ২০০৩ সালের মার্চে ইরাকে হামলা চালান বুশ। মানব জাতিকে সাদ্দামের কবল থেকে রক্ষার জন্য ইরাকে হামলা চালানো দরকার, এ তত্ত্ব তুলে ধরেন তিনি। কিন্তু পরে প্রমাণিত হয় ইরাকে কোনো মারণাস্ত্র ছিল না। কোনো দেশের জন্যই হুমকি হয়ে দাঁড়ায়নি ইরাক। বুশের এ প্রতারণা ধরা পড়ার পর তার জনপ্রিয়তার ব্যারোমিটার নিম্নগামী হতে থাকে। ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী জন কেরির কাছে তিনি নিশ্চিতভাবে পরাজিত হবেন, এমনটিই মনে হচ্ছিল। কিন্তু নির্বাচনের মাত্র দুই দিন আগে আলজাজিরা টিভিতে আল-কায়েদা নেতা লাদেনের একটি অডিও টেপ প্রচারিত হলে হাওয়া ঘুরে যায়। নির্বাচনে জয়ী হন বুশ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবাদী কৃষ্ণাঙ্গ কবি ও নাট্যকার ইমামু আমিরি ৮ এপ্রিল, ২০০৫-এ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে তির্যক মন্তব্য করেন। জার্মান বেতার ডয়েচে ভেলের পক্ষে এ সাক্ষাৎকারটি নেন নির্বাসিত বাংলাদেশি কবি দাউদ হায়দার। ইমামু আমিরি দাউদ হায়দারকে বলেন, ‘বুশকে প্রথম ভোট দিয়েছেন কে জান? ওসামা বিন লাদেন। শূকর যেমন কচু চেনে লাদেন তেমনি বুশকে জানেন। ভোটের দুই দিন আগে হঠাৎ কেন লাদেন আমেরিকার বিরুদ্ধে হুঙ্কার দিলেন? কেন প্রচার করা হয় টেপ? এখন শুনছি ওই টেপ সত্যি নয়। আলজাজিরা টিভিকে ভয় দেখিয়ে লাদেনের চেহারা কোলাজ করে, কম্পিউটারে ভয়েস সাজিয়ে তৈরি করা হয়েছিল।’ প্রতিপক্ষকে হারানোর জন্য প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তারা প্রকৃতপক্ষে মানসিক রোগাক্রান্ত। এই মানসিক রোগ নিজের সুবুদ্ধিকে জিম্মি করে ফেলে। যেভাবেই হোক ক্ষমতা বা সুবিধা ভোগে উন্মাদ করে তোলে। অনেক মার্কিন নাগরিকও সে সময় বুশকে অসুস্থ মানসিকতার মানুষ হিসেবেই ভেবেছেন।
২০০৪ সালের মার্কিন নির্বাচনের আগে সে দেশের একজন সাইকো-অ্যানালিস্টের লেখা একটি বই এক বন্ধুর সৌজন্যে পড়ার সুযোগ হয়েছিল। ‘Bush on the couch’ নামের সাড়া জাগানো এ বইটির লেখক প্রফেসর জাস্টিন এ ফ্রাঙ্ক (এমডি)। এতে তিনি বুশের মনস্তাত্তি¡ক বিশ্লেষণ করেন। বলেন, বুশ ছোটবেলায় ছিলেন অতিশয় দুষ্ট। পক্ষান্তরে তার মা বারবারা বুশ ছিলেন রুক্ষ মেজাজের মহিলা। মার আদর বুশ তেমনভাবে উপভোগ করেননি, যা তাকে মানসিক চাপের মধ্যে ফেলে। যৌবনে এসে বুশ মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর দায়ে একবার গ্রেফতারও হন। কিন্তু এ মাদকাসক্তের চিকিৎসা হয়নি। বুশের দাবি, তিনি ঈশ্বরের দয়ায় মাদক ছাড়তে সক্ষম হন। বারে বসে মদ্যপানের বদলে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনায় সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছেন। বুশের এ আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা ধর্মান্ধরা পছন্দ করলেও চিকিৎসকরা মানতে রাজি নন। তাদের মতে মাদকাসক্তির জন্য প্রথাসিদ্ধ চিকিৎসা প্রয়োজন। বুশ তা না করায় তার মধ্যে অসুস্থতার লক্ষণগুলো রয়ে গেছে। খ্যাতনামা মনস্তাত্তি¡ক প্রফেসর জাস্টিন এ ফ্রাঙ্কের বক্তব্য যে শতভাগ ঠিক তার প্রমাণ মেলে বুশের আচরণে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের ঘটনার পর সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তিনি ক্রুসেড বা ধর্মযুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন অসুস্থ মানসিকতার কারণে। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আফগানিস্তান ও ইরাকে বুশ যে ধ্বংসলীলা চালান তার পেছনেও ছিল মানসিক অসুস্থতা। বোধগম্য কারণেই বুশ মনে করেন তিনি যা করছেন তা শতভাগ ঠিক।
সবারই জানা, আফগানিস্তানে বুশই সেনা পাঠান। দেশটি দখলের পর বলেছিলেন তারা আফগান জনগণকে তালেবান নামের শয়তানের থাবা থেকে মুক্ত করেছেন। আফগানিস্তানকে মানুষের বাসযোগ্য করে গড়ে তুলবেন। আমেরিকা তার লক্ষ্য পূরণে সফল হয়েছে এ কথা আমেরিকানরাও দাবি করতে পারবেন না। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিদেশনীতি নিয়ে বিতর্ক আছে এবং থাকবেই। তবে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনা সরানোর যে সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন তার সঙ্গে দ্বিমত পোষণের কোনো সুযোগ নেই। কারণ মার্কিন সেনা আফগানদের ‘শয়তানের’ থাবামুক্ত করার বদলে বরং তাদের সেদিকেই ঠেলে দিয়েছে। আফগানদের উপলব্ধিকে দিয়েছে ভোঁতা করে। আফগানরা যাতে নিজেদের ভাগ্য নিজেরা গড়তে পারে সেজন্য বিদেশি আধিপত্যের অবসানের বিকল্প নেই। এ ব্যাপারে প্রয়োজনে জাতিসংঘের তত্ত্ব বধানে শান্তি সেনা মোতায়েনের বিষয়টি বড়জোর ভাবা যেতে পারে। জাতিসংঘের উদ্যোগে সব পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে এমন একটি অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাও করা যেতে পারে। নির্বাচনে অস্ত্রবাজদের দাপট যাতে অনুভূত না হয় তা নিশ্চিত করতে নিরস্ত্রীকরণের ব্যবস্থা করতে হবে সবকিছুর আগে। তার বদলে বুশের মতো মানসিক অসুস্থ কারোর সমালোচনাকে পাত্তা দেওয়া ঠিক হবে না।
পাদটীকা : প্রফেসর জাস্টিন এ ফ্রাঙ্কের ‘Bush on the couch’ বইতে একটি চুটকি রয়েছে যা বুশকে লক্ষ্য করেই লেখা। এক মানসিক রোগী সব সময় মনেপ্রাণে বিশ্বাস করত সে মৃত। সে যে মৃত নয় তা কোনোভাবেই বিশ্বাস করানো যাচ্ছিল না। অনেক চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর একদিন ডাক্তার বললেন, মৃত মানুষের রক্তক্ষরণ হয় না। রোগী ডাক্তারকে বলল, আপনি ঠিকই বলেছেন। ডাক্তার রোগীর এ কথা শুনে নিজের এবং রোগীর আঙুল সুই দিয়ে ফুটো করে দেখালেন দুজনের হাত দিয়েই রক্তক্ষরণ হচ্ছে। রোগী এবার সোৎসাহে বলে উঠল, ডাক্তার আমি এত দিন ভুল বলেছি। এখন বুঝতে পারছি আসলে মৃত ব্যক্তিদেরও রক্তক্ষরণ হয়! -মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
ইমেইল : [email protected]