শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

সর্বোচ্চ আদালতের রায়

বাংলায় অনুবাদ ইতিবাচক

বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা। বুকের রক্ত ঢেলে বাঙালি এ ভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন করেছিল অসভ্য ও বর্বর পাকিস্তানি শাসনামলে। স্বাধীনতার পর সর্বস্তরে বাংলা ভাষা কায়েমের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। সাংবিধানিকভাবেও আদালতসহ সর্বত্র বাংলা ভাষা ব্যবহারে নৈতিক দায় সৃষ্টি হয়। কিন্তু নানা সীমাবদ্ধতায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বাংলা ভাষা  পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা সম্ভব হয়নি। আশার কথা, বিচারকের অনেকে এখন বাংলায় রায় দিচ্ছেন। যাঁরা প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধার অভাবে ইংরেজিতে রায় দিচ্ছেন তাঁদের সে রায় বিচারপ্রার্থীদের বোধগম্য করতে বাংলায় অনুবাদ করা হচ্ছে। স্মর্তব্য, ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে উচ্চ আদালতে বাংলায় রায় প্রদানের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছিলেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। পরবর্তী সময়ে ভারতের প্রধান বিচারপতির আমন্ত্রণে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে যোগ দেন তিনি। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-সংবলিত সফটওয়্যার ব্যবহার করে ইংরেজিতে প্রদত্ত রায় বাংলাসহ নয়টি ভাষায় অনুবাদ করছে। ভারত থেকে দেশে ফিরে তিনি তৎকালীন ভারতীয় হাইকমিশনারকে এ সফটওয়্যারটি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টকে সরবরাহের অনুরোধ জানান। পরে বর্তমান হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীকে এ বিষয়ে সহযোগিতার অনুরোধ করেন। এরপর ‘আমার ভাষা’ সফটওয়্যারটি উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে দেওয়া হয়। গত বছর ২১ ফেব্রুয়ারির আগে সুপ্রিম কোর্টে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সফটওয়্যারটি উদ্বোধন করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট তার শুরু থেকে ইংরেজি ভাষায় কার্যক্রম চালাচ্ছে। নতুন সফটওয়্যারটিতে সংশ্লিষ্ট সবাই অভ্যস্ত হয়ে উঠলে অন্তত রায়ের ক্ষেত্রে বাংলা অনুবাদ সম্ভব হবে। সুপ্রিম কোর্টে পুরোপুরিভাবে বাংলা চালুর লক্ষ্যে সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে হবে। আইনের রেফারেন্স বই বাংলায় অনুবাদ করাও জরুরি।সর্বস্তরের বাংলা চালুর দায় পূরণে যার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর