বুধবার, ২০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

ঢাকামুখী জনস্রোত

কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হোক দেশজুড়ে

ঢাকা বিশ্বের অন্যতম সমস্যা জর্জরিত মহানগরী। এ পরিচিতি কোনোভাবেই গর্বের নয়, স্বস্তির তো নয়ই। বিশ্বের বসবাসের অযোগ্য ১৪০টি নগরীর মধ্যে ঢাকার অবস্থান ১৩৭তম। ভয়াবহ বায়ুদূষণের নগরী হিসেবে ঢাকা পাকাপোক্ত অবস্থান করে নিয়েছে। বায়ুদূষণ কেড়ে নিচ্ছে মানুষের আয়ু। শব্দদূষণ এ মহানগরীর হাজার হাজার মানুষের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত করছে দারুণভাবে। ঢাকা মহানগরী আজ থেকে ৫০ বছর আগেও ছিল সবুজ সমৃদ্ধ এক জনপদ। সে নগরী ক্রমেই ইট-কংক্রিটের স্তূপে পরিণত হচ্ছে। বিশ্বের অন্যতম নোংরা নগরী হিসেবে ঢাকার পরিচিতি কিছুতেই হটানো যাচ্ছে না। একসময় ঢাকায় ‘রাতে মশা দিনে মাছি, এ নিয়ে ঢাকায় আছি’ কথাটি প্রবাদবাক্য হয়ে উঠেছিল। মাছি উৎপাদনের উৎসগুলো বন্ধ হওয়ায় রাজধানীর কোথাও মাছির উপদ্রব নেই এটি সত্যি। তবে মশার উপদ্রব সেই সাত দশক আগের মতোই প্রকট। রাজধানী ঢাকা বিশ্বের শীর্ষ যানজটের নগরীগুলোর একটি। ফুটপাথেও নেই হাঁটার পরিবেশ। দূষণ ও অস্বস্তিকর জীবনের কারণে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। বসবাসের অযোগ্য নগরী, ইট-কংক্রিটের বস্তি ইত্যাদি নানা অভিধা সত্ত্বেও ঢাকার জনসংখ্যা হুহু করে বাড়ছে। কিছুতে ঠেকানো যাচ্ছে না ঢাকামুখী জনস্রোত। বিশেষজ্ঞদের মতে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ এখন শহরবাসী। এ সংখ্যার ৬০ ভাগ আবার বাস করছে চারটি বড় শহরে। স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ হারে বাড়ছে শহর এলাকার জনসংখ্যা। এ হার অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সাল নাগাদ ঢাকার জনসংখ্যা ২ কোটি ৮০ লাখে পৌঁছাবে। বসবাসের অযোগ্য নগরী হওয়া সত্ত্বেও মানুষ ঢাকামুখী হচ্ছে পেটের দায়ে। কর্মসংস্থানের সিংহভাগ সুযোগ ঢাকায় হওয়ায় বাধ্য হয়ে আসছে তারা। এ প্রবণতা ঠেকাতে রাজধানীর বাইরে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। শিল্পকারখানা স্থাপন করতে হবে দেশের প্রতিটি প্রান্তে। ছোট ছোট শহরগুলোতেও নাগরিক সুবিধা সৃষ্টির নিতে হবে উদ্যোগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর