শুক্রবার, ১৩ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

বিদেশ সফরে লাগাম

এ সিদ্ধান্ত অভিনন্দনযোগ্য

সরকারি কর্মচারী ও কর্মকর্তা হওয়া বাংলাদেশে আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়ার মতো সৌভাগ্য হিসেবেই ভাবা হয়। এ সৌভাগ্য অর্জনে বিসিএস ছাড়া অন্য প্রায় সব সরকারি চাকরি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যোগ্যতার বদলে উৎকোচ দেওয়া যে ভাগ্য নির্ধারণী ভূমিকা পালন করে এও ওপেন সিক্রেট। অফিস সহকারী থেকে শুরু করে কর্তাব্যক্তিদের অনেকেই উৎকোচ ছাড়া যে কাজ করেন না এ বিষয়টিও দেশবাসীর প্রায় সিংহভাগের জানা। সরকারকা মাল দরিয়া মে ঢাল নীতিতে বিশ্বাসীও তারা। ফলে যে কোনো প্রকল্পের নামে বিদেশ সফরের সুযোগ খোঁজেন সৌভাগ্যের বরপুত্ররা। তবে দুনিয়াজুড়ে যখন অর্থনৈতিক মন্দা চলছে তখন সরকার কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর নামের অভিজ্ঞতা অর্জনের আড়ালে প্রমোদ ভ্রমণে বাদ সাধার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিদেশ সফরে যেতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। এ সিদ্ধান্ত অবশ্যই অভিনন্দনযোগ্য। ইউক্রেন-রাশিয়ার চলমান যুদ্ধ এবং এর প্রভাবে বিশ্বজুড়ে মন্দা পরিস্থিতির পূর্বাভাস ছাড়াও রপ্তানি আয়ের তুলনায় আমদানি ব্যয় অস্বাভাবিক বাড়তে থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার সন্তোষজনক রিজার্ভ ধরে রাখতে সরকার ব্যয় সংকোচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। সন্দেহ নেই, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চলছে। অহেতুক ব্যয় করতে চাচ্ছে না সরকার। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়ে সরকার খুবই সতর্ক হয়েছে যা একটি ভালো দিক। এজন্য বিলাসপণ্যের আমদানিও যাতে কম হয়, সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলাসপণ্যে এলসি মার্জিন বাড়িয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে লাগাম টানার ইঙ্গিত রয়েছে। স্বীকার করতেই হবে, বর্তমানে বিশ্বের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। মনে হচ্ছে, সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যে বেতন-ভাতা পান তার সবকিছু আসে দেশবাসীর ট্যাক্সের টাকা থেকে। বিদেশ সফরের টাকাও আসে আমজনতার কাছ থেকে। সে অর্থের অপচয় বন্ধ অবশ্যই সুবুদ্ধি ও সুবিবেচনার। আমরা আশা করব অকারণে বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ শুধু নয়, দেশবাসী যাতে হয়রানি ও উৎকোচ ছাড়া সরকারি সব সেবা ভোগ করতে পারে সে ক্ষেত্রেও নিশ্চয়তা বিধান করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর