মিয়ানমারে সেনা অভিযানে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোহিঙ্গাদের এক উল্লেখযোগ্য অংশ পেশাদার অপরাধী। কক্সবাজারের ৩২টি ক্যাম্পকে তারা হাবিয়া দোজখ বানানোর চেষ্টা করছে অস্ত্রের ঝনঝনানিতে। আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে লিপ্ত বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপের অপচেষ্টায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। রোহিঙ্গাদের মর্যাদার সঙ্গে স্বদেশে প্রত্যাবাসনের কথা বলে বেশ কয়েকটি সংগঠন সক্রিয় রয়েছে কক্সবাজারের ক্যাম্পে। প্রত্যাবাসনের কথা বলে দৃশ্যত রোহিঙ্গাদের দলে টানলেও নেপথ্যে রয়েছে চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, অস্ত্র ও ইয়াবা ব্যবসার জন্য দল ভারী করা। ক্যাম্পে অবস্থান ধরে রাখতে তারা সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছে।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিটি ক্যাম্পেই হামলা-পাল্টা হামলা ঘটছে। আধিপত্য বিস্তারের জেরে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে গেল ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কমপক্ষে ১১৮টি হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে গত চার মাসে খুন হয়েছেন ১৮ জন। এসব খুনের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতা বা মাঝি ও স্বেচ্ছাসেবক। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোয় সক্রিয় ছোট-বড় সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে শতাধিক। এর একেকটির সদস্য সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ৫০০ জন। এ সন্ত্রাসীরা ব্লকভিত্তিক এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে। রোহিঙ্গাদের কারণে অসংখ্য গাছপালা ধ্বংস হয়েছে। কাটা হয়েছে পাহাড়-টিলা, বিপন্ন হয়ে পড়ছে সংরক্ষিত বনের হাতিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী। রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে পাচার হয়ে আসছে মাদক ও অবৈধ অস্ত্র। দেশের যুবসমাজের জন্য মাদক ভয়াবহ বিপদ সৃষ্টি করছে। প্রধানমন্ত্রী অতিসম্প্রতি ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের চলে যেতেই হবে।
দেশের একটি পরজীবী শ্রেণি ও পশ্চিমা দেশগুলোর চাপে সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছে। বাংলাদেশকে আপদমুক্ত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্যোগ নিতে হবে।