বিগত হাজার বছরে বিশ্ববাসী যেসব মহামারির সম্মুখীন হয়েছে করোনাভাইরাস বা কভিড-১৯ তার মধ্যে ভয়াবহ। গত তিন বছরে এ মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছে কোটি কোটি মানুষ। প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৫ লাখ মানুষ। বিশ্বের উৎপাদন ব্যবস্থায় এই মহামারি যে অপপ্রভাব রেখেছে তা কাটিয়ে উঠতে বহু বছর লেগে যাবে এমন আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। বাংলাদেশ করোনাভাইরাস বা কভিড-১৯ সৃষ্ট বিপর্যয় মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোর তুলনায় সফলতার পরিচয় দিয়েছে। দেশের ১৫ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনার বিরল কৃতিত্বও দেখিয়েছে বাংলাদেশ। কভিড-১৯ চীনসহ কয়েকটি দেশে ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। এ মহামারি যে বাংলাদেশে আবার থাবা বিস্তার করবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বাংলাদেশে সংক্রমণ প্রতিরোধে ২০ ডিসেম্বর দেশব্যাপী একযোগে শুরু হয়েছে টিকার চতুর্থ ডোজ কার্যক্রম। তবে টিকা গ্রহণে মানুষের মধ্যে আগ্রহের অভাব একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা। প্রথম দিনে চতুর্থ ডোজ নিয়েছেন মাত্র ৫ হাজার ৫৩৯ জন। দ্বিতীয় দিনে সেই সংখ্যা বেড়ে ১৫ হাজার ৪৬৮ জনে দাঁড়ালেও পূর্ববর্তী ডোজগুলোর তুলনায় তা নগণ্য। বুধবার পর্যন্ত মোট চতুর্থ ডোজ টিকা নিয়েছেন ২১ হাজার ৪৮৩ জন। এর মধ্যে আগে পরীক্ষামূলকভাবে নিয়েছিলেন ৪৭৬ জন। গত বছর জানুয়ারিতে দেশে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হলে মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। এক দিনে ৩ লক্ষাধিক প্রথম ডোজ, ৫ লক্ষাধিক দ্বিতীয় ডোজ ও দেড় লক্ষাধিক মানুষের বুস্টার বা তৃতীয় ডোজ নেওয়ার রেকর্ডও রয়েছে। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি দেশে প্রথমবারের মতো করোনা টিকার প্রয়োগ শুরু হয়। একই বছরের এপ্রিলে দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়। ওই বছরের শেষ দিকে বিভিন্ন হাসপাতালে পরীক্ষামূলক বুস্টার ডোজ প্রয়োগ শুরু হলেও চলতি বছরের ১৯ জুলাই সারা দেশে একযোগে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কভিড-১৯ এর সংক্রমণ যেহেতু বাড়ছে, সেহেতু টিকা নেওয়ার সুযোগ পেয়েও অবহেলা করা আত্মঘাতী মনোভাবের নামান্তর। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে যথাযথ প্রচারণা চালানো হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।