সোমবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

অ্যান্টিবায়োটিক হুমকি

প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি নিষিদ্ধ হোক

অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার জনস্বাস্থ্যের জন্য সাক্ষাৎ হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। জীবন বাঁচাতে আবিষ্কৃত হয়েছিল যে অ্যান্টিবায়োটিক তার যথেচ্ছ ব্যবহার মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় আঘাত হানছে। মানবদেহে এর ব্যবহার অকার্যকর হয়ে পড়ছে। এ সংকট মোকাবিলায় ঔষধ প্রশাসনের উদ্যোগে অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহারে জরিমানার প্রস্তাব রেখে সংসদে তোলা হবে ওষুধ আইন-২০২২। প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে আইনের খসড়ায়। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, পৃথিবীতে পরবর্তী মহামারি হিসেবে দেখা দেবে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স সমস্যা। আইসিইউতে অনেক রোগীর শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না। কারণ অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার। এ বিপদ ঠেকাতে ওষুধ আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রির ক্ষেত্রে অনেক ফার্মেসি নিয়ম মানছে না। চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করলে জরিমানার বিধান রয়েছে আইনের খসড়ায়। আগে আইনগত দুর্বলতায় ব্যবস্থা নেওয়া যেত না, নতুন আইন হলে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে। অ্যান্টিবায়োটিকের অকার্যকারিতা রোধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওষুধটির পর্যায়ক্রমিক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিল। ২০১৯ সালে সংস্থাটি এ পর্যন্ত উদ্ভাবিত অ্যান্টিবায়োটিকগুলোকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করে। প্রথমে ‘অ্যাক্সেস’ শ্রেণি। এ শ্রেণির অ্যান্টিবায়োটিকগুলোর অকার্যকর হওয়ার প্রবণতা কম। এগুলো সাধারণত বেশি ব্যবহৃত হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে ‘ওয়াচ’ শ্রেণির অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ব্যবহার করতে হয় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে। আর ‘রিজার্ভ’ শ্রেণির অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হয় মরণাপন্ন রোগীদের ক্ষেত্রে বা আইসিইউতে। অ্যাক্সেস শ্রেণির অ্যান্টিবায়োটিক অকার্যকর হওয়ার প্রবণতা কম হলেও হাসপাতালগুলোতে এগুলোর ব্যবহার ২৮ শতাংশ। ওয়াচ শ্রেণির ব্যবহার এর দ্বিগুণের বেশি অর্থাৎ ৬৯ দশমিক ৪ শতাংশ। রিজার্ভ শ্রেণির অ্যান্টিবায়োটিক শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। বিশেষত আইসিইউতে রোগীদের ওপর অ্যান্টিবায়োটিক অকার্র্যকর হয়ে পড়ছে অপব্যবহারের কারণে। আমরা আশা করব শুধু অ্যান্টিবায়োটিক নয়, সব ধরনের ওষুধ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া বিক্রি নিষিদ্ধ করার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর