সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিশ্ববিদ্যালয় নৈরাজ্য

কর্তাব্যক্তিরা সচেতন হোন

দেশে ব্যাঙের ছাতার মতো দ্রুতলয়ে বাড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা। পাবলিক আর প্রাইভেট মিলে এ মুহূর্তে দেড় শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। শিক্ষিত বেকার উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়। তারপরও আরও নয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বর্তমানে দেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৩টি। সাতক্ষীরা, শরীয়তপুর, নারায়ণগঞ্জ, মেহেরপুর, লক্ষ্মীপুর, ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, বগুড়া ও নাটোরে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হলে মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ৬২টিতে। অথচ বিদ্যমান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমস্যার অন্ত নেই। ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশে ১৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও ৫৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হয়েছে। একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠলেও গুণগত মান রক্ষা করা হচ্ছে না। বোদ্ধাজনদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ানো সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। পরিকল্পনা ছাড়াই অনেক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে। আবার কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্ষমতা না থাকলেও নতুন নতুন বিভাগ খোলা হচ্ছে। ফলে শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণার ক্ষেত্রেও অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, দেশের ছয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় কোনো বরাদ্দ রাখেনি। আর ১৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরে কোনো প্রকাশনা ছিল না। নানা সূচকে পিছিয়ে থাকায় আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিংয়েও পিছিয়ে থাকছে এ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। উপাচার্য ও শিক্ষকরা শিক্ষক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন ব্যাপকভাবে। তাদের কথাবার্তা ও চালচলনে দলবাজির মনোভাব রাজনৈতিক কর্মীদের জন্যও লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।  আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উচ্চশিক্ষা বিস্তারে খোলা হলেও মাত্র ৩-৪টি বাদে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য দুই হাতে ব্যবসা করা। ফলে দুনিয়ার ৮০০ সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেও নেই বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। এটি বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার মান কোন পর্যায়ে তারই প্রতিবিম্ব। এ ব্যাপারে কর্তাব্যক্তিরা সচেতন না হলে বিশ্ববিদ্যালয় নৈরাজ্যের ইতি ঘটবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর