প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হলেও রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা স্থানীয়দের চেয়েও বেশি। তিনি তাদের ভাসানচরে স্থানান্তরে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছেন। বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুয়েন লুয়েস গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি তাকে এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, যেহেতু খুব শিগগিরই রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর কোনো নিশ্চয়তা নেই, তাই রোহিঙ্গাদের আরও উন্নত স্থান ভাসানচরে স্থানান্তর করা উচিত এবং জাতিসংঘ এ বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারে। রোহিঙ্গারা বর্তমানে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘনবসতিপূর্ণ জীবনযাপন করছেন। যদি রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য জীবিকার ব্যবস্থাসম্পন্ন ভাসানচরে স্থানান্তর করা যায়, তাহলে তারা বসবাসযোগ্য পরিবেশে মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবেন। কারণ, এখানে লাখেরও বেশি লোকের আবাসনের ব্যবস্থা রয়েছে। শেখ হাসিনা আরও বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে সামাজিক সমস্যা সৃষ্টি করছে। তাদের মধ্যে অনেকেই মাদক, অস্ত্র ও মানব পাচারে জড়িয়ে পড়েছে। রোহিঙ্গারা অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং জঙ্গিবাদেও জড়িত। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য খুবই প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ। প্রতিবেশী দেশে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সে দেশের সেনা অভিযানের মুখে তাদের বাংলাদেশ আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছিল মানবিক কারণে- জাতিসংঘসহ পশ্চিমা বিশ্বের অনুরোধে। কিন্তু সে অনুরোধের ঢেঁকি বাংলাদেশের জন্য বদহজম হয়ে দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘসহ পশ্চিমা দেশগুলো রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে এ যাবৎ তেমন কোনো ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এ দুর্ভাগ্যজনক অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে রেহাই দিতে রোহিঙ্গাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে জাতিসংঘ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এমনটিই প্রত্যাশিত।