শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

অর্থনীতিতে হুন্ডির থাবা

বিলাস পণ্য আমদানি বন্ধ হোক

সারা দুনিয়ার মতো বাংলাদেশেও অনুভূত হচ্ছে অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব। কভিডের কারণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সব দেশের উৎপাদন ব্যবস্থা। বিপর্যযের সম্মুখীন হয়েছে প্রতিটি দেশের অর্থনীতি। ভয়াবহ ওই মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশের সাফল্য ছিল ঈর্ষণীয়। ঘনবসতির এই দেশে লাখ লাখ মানুষ আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর হার ছিল তুলনামূলক বিচারে কম। কভিডের মধ্যেও মোটামুটি সচল ছিল অর্থনীতি। বিস্ময়কর হলেও সত্যি, পাঁচ দশকের মধ্যে কভিডের সময় বাংলাদেশের মুদ্রা টাকার দাম প্রথমবারের মতো ডলারের বিপরীতে বেড়েছে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতিতে যে মহামন্দার আঘাত হেনেছে তা বাংলাদেশের জন্যও অশনিসংকেত বলে বিবেচিত হচ্ছে। ডলার সংকটে ভুগছে দেশ। বিশ্ববাজারে চাল, গম, ভোজ্য তেল, চিনির দাম বেড়েছে অবিশ্বাস্যভাবে। গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দামও আকাশছোঁয়া। ফলে রপ্তানির তুলনায় আমদানিতে অর্থব্যয় বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এ পরিস্থিতিতে গাড়ি, মোটরসাইকেল, মোটর পার্টস, ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, বিভিন্ন ফলসহ বিলাসী পণ্য আমদানির নামে হুন্ডিতে টাকা পাঠানোর কারণে অর্থনীতির সর্বনাশ হচ্ছে। অল্প টাকার এলসি খুলে হুন্ডিতে বাকি টাকা পাঠানোর কারণে শিল্পকারখানার এলসিতে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। ফল আমদানিতে অর্থ পাচার হচ্ছে ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, ফল আমদানিতে প্রকৃত মূল্যের ২০ থেকে ২০০ ভাগ পর্যন্ত অতিরিক্ত দেখিয়ে এলসি করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব হুন্ডি বন্ধ করা গেলে ডলার সংকট অনেকটা কেটে যাবে। বিশ্ব অর্থনীতির দুঃসময়ে আমাদের দেশে ডলারের অভাবে শিল্পকারখানার মালিকরা এলসি খুলতে না পারায় ব্যবসা-বাণিজ্য থমকে যাচ্ছে। অনেকে ব্যাংক ঋণ নিয়ে শিল্পকারখানা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিলেও এলসির অভাবে মালামাল আনতে পারছেন না।  এভাবে শিল্প স্থাপনে ব্যাঘাত হলে এবং কাঁচামালের অভাবে কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেলে শ্রমিকরা চাকরি হারাবেন। এতে দেশে তৈরি হবে অস্থিতিশীলতা। দেশের অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে হুন্ডি বন্ধের পদক্ষেপ নিতে হবে। বিলাস পণ্যের আমদানি রোধও জরুরি।

সর্বশেষ খবর