সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

পোশাকশিল্পের পরিবেশ

জিএসপি সুবিধা ফেরত দেওয়া হোক

বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব কারখানা এখন বাংলাদেশে। ময়মনসিংহের ভালুকার একটি পোশাক কারখানা পেয়েছে এই স্বীকৃতি। শুধু প্রথম স্থান অধিকারই নয়, বিশ্বের সবচেয়ে পরিবেশবান্ধব ১০টি কারখানার ৮টিই বাংলাদেশের। বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানায় দুর্ঘটনার পর বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা বন্ধ করে দেয়। গত এক যুগে পোশাকশিল্পসহ কলকারখানার উন্নয়নে ব্যাপক অগ্রগতি ঘটেছে। পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার দিক থেকে এখন সারা বিশ্বে বাংলাদেশই এগিয়ে। এ অর্জন সম্ভব হয়েছে সরকার ও দেশের তৈরি পোশাকশিল্প উদ্যোক্তাদের দূরদর্শিতা এবং প্রবল ইচ্ছাশক্তি ও উদ্যোগের কারণে। পোশাক খাতের কিছু অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনার পর এ শিল্প পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়। গত এক যুগে সরকারের উৎসাহ, উদ্যোক্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম, নিরাপত্তা খাতে হাজার কোটি টাকা ব্যয় এবং পোশাক ক্রেতাদের সহায়তায় বাংলাদেশের পোশাকশিল্প নিরাপদ শিল্প হিসেবে এখন বিশ্বে রোল মডেল অবস্থান তৈরি করেছে। পরিবেশ ও শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে এ শিল্পের উদ্যোক্তারা আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পণ্যকে দেওয়া জিএসপি সুবিধা বন্ধ করার পর দেশের পোশাকশিল্পের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হলেও সে সংশয় পাশ কাটিয়ে পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ শুধু এগিয়েছে। জিএসপি সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া সত্ত্বেও এক যুগে বাংলাদেশের রপ্তানি আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১১ সালে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ছিল ১৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয় ছিল ৪২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ এক যুগের ব্যবধানে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় তিনগুণ।  পরিবেশ উন্নয়নে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে প্রথম স্থানে থাকলেও জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে আভাস মেলেনি কোনো পক্ষ থেকে। শ্রম পরিবেশ উন্নয়নে জিএসপি সুবিধা শুধু ফিরিয়ে দেওয়া নয়, বাংলাদেশি পণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাও উন্নত বিশ্বের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর