বুধবার, ৩১ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঘাতক ব্যাধি ক্যান্সার

আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে হবে

ক্যান্সার সারা দুনিয়ার মতো বাংলাদেশেও ঘাতক ব্যাধি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। স্বাধীনতার পর গত পাঁচ দশকে স্বাস্থ্য খাতের দৃষ্টিকাড়া উন্নতি হলেও স্বীকার করতে হবে চিকিৎসা সক্ষমতার দিক থেকে এখনো কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জিত হয়নি। বিশেষ করে ক্যান্সার চিকিৎসায় রয়েছে প্রকট সংকট। গত সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ ক্যান্সার স্টাডি গ্রুপ ও বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে এ সম্পর্কে যে তথ্যউপাত্ত উত্থাপন করা হয়েছে তা উদ্বেগের। দেশে প্রতি বছর দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। অথচ প্রতি ১০ হাজার ক্যান্সার রোগীকে সেবা দেওয়ার জন্য রয়েছে মাত্র একটি ক্যান্সার সেন্টার। জনবল ও অবকাঠামো সংকটে আক্রান্ত এক লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না।  দেশে এ পর্যন্ত ২৯ হাজার মানুষ মারা গেছে করোনা মহামারিতে। অথচ ক্যান্সারে মারা গেছে সাড়ে ৪ লাখের বেশি। শহরে ক্যান্সার শনাক্ত বেশি হলেও মৃত্যু কম। কিন্তু গ্রামে শনাক্ত কম হলেও মৃত্যু হার বেশি। গ্রামের রোগী জানে না আক্রান্ত হলে কোথায় যেতে হবে। ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসায় রয়েছে জনবল এবং অবকাঠামোর সংকট। দেশে রেডিয়েশন অনকোলজিস্ট মাত্র ২০৩ জন, মেডিকেল অনকোলজিস্ট ৩০ জন। জনবল এবং অবকাঠামোর সংকটে প্রায় ১ লাখ ক্যান্সার রোগী চিকিৎসা পাচ্ছেন না। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও ক্যান্সার আক্রান্তের হার বেশি। বাংলাদেশে প্রতি লাখে ক্যান্সার আক্রান্তের হার ১০৬ দশমিক ২, ভারতে ৯৭ দশমিক ১, নেপালে ৮০ দশমিক ৯, পাকিস্তানে ১১০ দশমিক ৪, মিয়ানমারে ১৩৬ দশমিক ৮। এ দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসায় দরিদ্র মানুষ আরও দরিদ্র হচ্ছে। প্রতি বছর ৫ লাখ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়ের কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। অনেক সম্পন্ন পরিবার সর্বস্ব হারিয়েছে পরিবারপ্রধান ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কারণে। ক্যান্সারের চিকিৎসা যেহেতু ব্যয়বহুল সেহেতু আক্রান্তদের পাশে সরকার কীভাবে দাঁড়াতে পারে সে ব্যাপারে ভাবতে হবে। নিতে হবে ফলপ্রসূ পরিকল্পনা। ধূমপান ও তামাক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিও প্রাসঙ্গিকতার দাবিদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর