বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০১৫ ০০:০০ টা

সেমাইটা একটু বেশি মিষ্টি

এরি হিরোহামা

সেমাইটা একটু বেশি মিষ্টি

সাত বছর আগের ঘটনা। ফাগুনকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেই আমি। ফাগুন বাংলাদেশি ছেলে। তখন আমি কানাডায় থাকি। পড়াশোনা শেষ করেছিলাম ওখানেই। সেখানেই ওর সঙ্গে আমার পরিচয়। জাপানে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা অনেকটা কম। কানাডায়ও খুব একটা বেশি নয়। ফলে এর আগে বাংলাদেশের কাউকে বা মুসলিম কাউকে জানার অতটা সুযোগ হয়নি। ওকে দেখার পর ভালোবেসে ফেলেছিলাম। ইসলাম ধর্মকেও জানার চেষ্টা করি এবং জানি। ভালো লেগেছিল। আর তাই সে সময় বিয়ে করে নিই আমরা। তারপর সোজা চলে আসি বাংলাদেশে। প্রায় ছয় বছর হয়ে গেল! এর আগে শুনেছি অন্য দেশের মেয়েকে এখানকার মানুষ বউ হিসেবে মেনে নিতে খানিকটা ঝামেলা করে। কিন্তু খুব অবাক হয়েছি যখন দেখেছি বিদেশ থেকে আসা আমাকে একদম মেয়ের মতোই জায়গা করে দিল এখানকার মানুষগুলো।

বাংলাদেশের খাবার অতটা পছন্দ করতাম না আগে। এখন অবশ্য বেশ ভালোই লাগে। সেমাইটা যদিও মাঝে মাঝেই বেশি মিষ্টি মনে হয়। বাংলাদেশের সবচেয়ে সেরা জিনিসটা হচ্ছে এখানকার কবিতা। খুব ভালো লাগে আমার এ দেশের কবিতাগুলো পড়তে! আমরা থাকি জাপানের টোকিওতে। ওখান থেকে দেড় ঘণ্টা দূরে একটা বড় মসজিদ রয়েছে। সবাই ঈদের দিন সকালে সেখানেই চলে যায় নামাজ পড়তে। বাংলাদেশের চিত্রটা অবশ্য ভিন্ন। এখানে চারপাশে অনেক মসজিদ। বিয়ের পর প্রায় সবগুলো ঈদই এখানে কাটিয়েছি আমি। ঈদের দিন সকালে উঠেই ফাগুন নামাজ পড়তে চলে যায়। আমি শাড়ি পরতে পছন্দ করি। তবে পরতে পারি না। আমার কাজের বুয়া আমাকে সাহায্য করে শাড়ি পরতে। তবে ঈদের দিনটাকে অনেক ভালোবাসি আমি। সবাই অনেক সুন্দর সুন্দর জামা পরে আর আনন্দ করে। দেখতে ভালো লাগে। কিছুদিন আগেও আমি আর ফাগুন- দুজন মিলেই ছিল আমাদের সংসার। এখন সেখানে আরেকজন এসেছে। আমাদের ছেলে। এবারের ঈদ ওকে নিয়ে আরও ভালো কাটবে বলে আশা করছি।

পেশা : ম্যানেজিং ডিরেক্টর, হিরোহামা বাংলাদেশ লিমিটেড, দেশ : জাপান

 

সর্বশেষ খবর