মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০১৯ ০০:০০ টা

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সুবীর নন্দী

৭২ ঘণ্টা পর তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে

শোবিজ প্রতিবেদক

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে সুবীর নন্দী

একুশে পদক পাওয়া জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী গুরুতর অসুস্থ। রবিবার রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছে। আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান জানিয়েছেন, হাসপাতালে আনার পর সুবীর নন্দীকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ৭২ ঘণ্টা পর তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে। সুবীর নন্দী এখন সিএমএইচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. তৌফিক এলাহির তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। গতকাল সুবীর নন্দীকে দেখতে তার পরিবারের পক্ষ  থেকে সিএমএইচে যান জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জাতীয় সমন্বয়ক সামন্ত লাল  সেন। সেখান থেকে ফিরে এসে তিনি বলেন, ‘অবস্থা ভালো নয়। সুবীর নন্দী দীর্ঘদিন ডায়াবেটিস রোগে ভুগছেন। তার হার্টে বাইপাস অপারেশন হয়েছে। কিডনির সমস্যা আছে। নিয়মিত ডায়ালাইসিস করাতে হয়। গতকাল হাসপাতালে আনার পর তার মারাত্মক কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি জটিল। এখন তাকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে। প্লিজ, সবাইকে তার জন্য দোয়া করতে বলবেন।’ সুবীর নন্দীর জামাতা ড. রাজেশ সিকদার বলেন, ‘আমরা মৌলভীবাজার গিয়েছিলাম আত্মীয়ের বাড়িতে। সেখানে একটা অনুষ্ঠান ছিল। ঢাকায় ফেরার  ট্রেনে ওঠার জন্য বিকালে মৌলভীবাজার থেকে শ্রীমঙ্গলে চলে আসি। বাবা ট্রেনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভাগ্যক্রমে সেখানে একজন চিকিৎসক ছিলেন। তার পরামর্শে আমরা বিমানবন্দর স্টেশনে নেমে যাই। আমরা বাবাকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যেতে  চেয়েছিলাম, কারণ দীর্ঘদিন সেখানেই তিনি চিকিৎসা করাচ্ছেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাত ১১টার দিকে তাকে দ্রুত সিএমএইচ হাসপাতালে নিয়ে যাই।’ বরেণ্য সংগীতশিল্পী সুবীর নন্দী ৪০ বছরের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে আড়াই হাজারেরও বেশি গান  গেয়েছেন। পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার  পেয়েছেন। ১৯৫৩ সালের ১৯ নভেম্বর হবিগঞ্জ  জেলার বানিয়াচং উপজেলার নন্দীপাড়ায় সুবীর নন্দীর জন্ম। তিনি সিলেট বেতারে প্রথম গান করেন ১৯৬৭ সালে। এরপর ঢাকা রেডিওতে সুযোগ পান ১৯৭০ সালে। রেডিওতে তার প্রথম গান ‘যদি কেউ ধূপ জ্বেলে  দেয়’। বেতার থেকে টেলিভিশন, তারপর চলচ্চিত্রে  গেয়েছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। ১৯৭৬ সালে আবদুস সামাদ পরিচালিত ‘সূর্যগ্রহণ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে  প্লেব্যাকে আসেন সুবীর । ১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় আজিজুর রহমানের ছবি ‘অশিক্ষিত’। সেই সিনেমায় সাবিনা ইয়াসমিন আর সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘মাস্টার সাব আমি নাম দস্তখত শিখতে চাই’ গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। সুবীর নন্দী গেয়েছেন ‘দিন যায় কথা থাকে’, আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’, ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’, ‘আশা ছিল মনে মনে’, ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, ‘বন্ধু তোর বরাত নিয়া’, ‘তুমি এমনই জাল পেতেছ’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’ ইত্যাদি।

 

 

সর্বশেষ খবর