শনিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : সোহানা সাবা

সস্তা জনপ্রিয়তার জোয়ারে গা ভাসাতে চাই না

সস্তা জনপ্রিয়তার জোয়ারে গা ভাসাতে চাই না

সোহানা সাবা, জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী। বড় পর্দার পাশাপাশি এখন ছোট পর্দার অনুষ্ঠান নিয়ে আসছেন। এ ছাড়াও ছবি প্রযোজনা করতে যাচ্ছেন।  অভিনয় ও নির্মাণের ক্ষেত্রে মানকে প্রাধান্য দেওয়া এই অভিনেত্রীর বলা কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

আগামী চলচ্চিত্র নিয়ে পরিকল্পনা কিছু আছে?

আগামীতে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনা করতে চাই। আমার নিজের চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান খামারবাড়ি থেকেই চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করব, পুরোদমে প্রস্তুতি চলছে। অনেকটাই গুছিয়ে এনেছি। শিগগিরই এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। আশা করছি ভালো একটা কিছু করতে পারব। আমি আসলে সব সময়ই ভালো কিছুর সঙ্গে থাকতে চাই।

 

ভালো চলচ্চিত্রে দর্শক সিনেমা হলে ফিরছে, কেমন লাগছে?

মানসম্মত চলচ্চিত্র পেলে দর্শক স্বাচ্ছন্দ্যে সিনেমা হলে আসে, এ সত্যটি আবারও প্রমাণ হলো ‘পরাণ’ এবং ‘হাওয়া’ ছবি দুটি দিয়ে। সত্যি কথা বলতে দর্শক আসলে এ দেশের মাটি ও মানুষের গল্পের ছবি দেখতে চায়। এমন ছবিতে যখন তারা নিজেকে ও নিজের আশপাশের চিত্র খুঁজে পায় তখন স্বাচ্ছন্দ্যে সে চলচ্চিত্র দেখতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। সুতরাং গল্পের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ছবি নির্মাণ করলে দেশীয় চলচ্চিত্রের সুসময় ফিরবেই।

 

শুধু কী গল্পেই দর্শক সিনেমা হলে ফিরবে?

না, ভালো চলচ্চিত্রের সঙ্গে ভালো সিনেমা হলও লাগবে। কারণ দর্শক সুন্দর পরিচ্ছন্ন পরিবেশে ছবি দেখতে চান। যেমন সিনেপ্লেক্সের পরিবেশ মনোরম বলে সিনেপ্লেক্স ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ আছে। তাই দেশের সিনেমা হলগুলোর পরিবেশ দর্শকের মনের মতো করে গড়ে তুলতে হবে। তাছাড়া মানসম্মত নির্মাণ ও অভিনয় দরকার। একই সঙ্গে পর্যাপ্ত চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। এসব বিষয়ের সমন্বয় করতে পারলেই সব শ্রেণির দর্শক সিনেমা হলে ফিরবে বলে মনে করি।

 

গল্পে যদি নিজের দেশ ও মানুষের চিত্র না থাকে তাহলে সেই চলচ্চিত্রে আমার অভিনয় করার কোনো মানে আছে বলে মনে হয় না, করবও না। সস্তা জনপ্রিয়তার জোয়ারে কখনো গা ভাসাতে চাইনি। এখনো চাই না। আমাকে দর্শক এখনো মনে রেখেছে, ভালোবাসে এ কারণেই।  অর্থের মোহ বা সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য কখনো কোনো কাজ করতে চাই না, চাইবও না।

 

অভিনয়ের ব্যাপারে আপনি নাকি বেশ খুঁতখুঁতে, কেন এমনটা?

ওই যে বললাম, ভালো গল্পের ছবি হতে হবে। গল্পে যদি নিজের দেশ ও মানুষের চিত্র না থাকে তাহলে সেই চলচ্চিত্রে আমার অভিনয় করার কোনো মানে আছে বলে মনে হয় না, করবও না। সস্তা জনপ্রিয়তার জোয়ারে কখনো গা ভাসাতে চাইনি। এখনো চাই না। আমাকে দর্শক এখনো মনে রেখেছে, ভালোবাসে এই কারণেই।  অর্থের মোহ বা সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য কখনো কোনো কাজ করতে চাই না, চাইবও না।

 

আপনার আপকামিং ছবি নিয়ে দর্শকদের কী জানাবেন?

আমার আপকামিং ছবিগুলোতে দর্শক তাদের আশপাশের চরিত্রকেই খুঁজে পাবে। এমন গল্প ও চরিত্র ছাড়া যে কাজ করব না তা আগেই বলেছি। আমার দুটি ছবি আগামীতে আসছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আফজাল হোসেনের ‘মানিকের লাল কাঁকড়া’ ও অরুণা বিশ্বাসের    ‘অসম্ভব’। এসব ছবিতে আগের মতোই দর্শক আমাকে জীবনবোধের গল্প ও চরিত্রে দেখতে পাবেন।

 

ছোট পর্দায় প্রথমবারের মতো উপস্থাপনায় এলেন, কেমন লাগছে?

আসলে ‘তারার মেলা’ শিরোনামের এই অনুষ্ঠানটি গতানুগতিক ধারার বাইরের। এখানে সচরাচর এমন অনুষ্ঠানে যেমন তারকালাপ হয় তা না করে ঘরোয়া পরিবেশের আড্ডার আয়োজন করা হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে আমার দীর্ঘদিনের পরিচিত তারকাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। এতে তাদের সম্পর্কে ভালোভাবে জানি বলেই মন খুলে কথা বলা যায়। তাই এমন একটি ভিন্নধর্মী অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় যুক্ত হতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।

 

বেশির ভাগ সময়ই বিদেশে থাকেন, বিদেশ ভ্রমণ কেমন উপভোগ করেন?

সত্যি কথা বলতে, দেশের ইতিহাস আমাকে খুব টানে। আমি শুধু ঘুরে বেড়াই না, ওই দেশের ইতিহাসও জেনে নিই। শুটিংয়ের সুবাদে অনেক দেশ ঘুরেছি। আবার আমার নিজের দেশটাও অনেক সুন্দর। নিজের দেশেও ঘুরেছি। মিসরে গিয়েছি একবার। মালদ্বীপে একবার। আরও অনেক দেশে গেছি। সামনে ইউরোপে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। আমি দুনিয়া দেখতে চাই। দেখুন, কেউ টাকা জমায়, কেউ সম্পদ করে, নানারকম শখ মানুষের। আমার শখ ঘুরে বেড়ানো।

 

কিছু দিন আগে বিয়ে নিয়ে আপনি ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, এ বিষয়ে কিছু বলুন।

বিয়েটা জীবনের জন্য বড় বিষয়। এ বিষয়ে আমার প্রথম কথা- আমি বিয়ে করব। কালকেই করব তা বলিনি। বিয়ে করলে এমন কাউকে করব, যে আমাকে বুঝবে, আমিও তাকে বুঝব। বোঝাপড়াটা ভালো হতে হবে। তেমন কাউকে পেলে তখন সিদ্ধান্ত নেব।

সর্বশেষ খবর