শুক্রবার, ২ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : জয়া আহসান

‘বিউটি সার্কাস’র জার্নিটা অসাধারণ ছিল

‘বিউটি সার্কাস’র জার্নিটা অসাধারণ ছিল

দুই বাংলার দর্শকনন্দিত অভিনেত্রী জয়া আহসান। তাঁর বহুল প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘বিউটি সার্কাস’। বসুন্ধরা গুঁড়া মসলা নিবেদিত ইমপ্রেস টেলিফিল্মের এই সিনেমাটি ২৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পাচ্ছে সারা দেশের সব প্রেক্ষাগৃহে। ইতোমধ্যেই সিনেমাটি নিয়ে প্রচারণার ছক পরিকল্পনায় ব্যস্ত নির্মাতা মাহমুদ দিদার। মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমা ও সমসাময়িক কাজ নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

অবশেষে ‘বিউটি সার্কাস’ প্রেক্ষাগৃহে আসছে...

এটি একটি বিগ বাজেটের ফিল্ম। মাহমুদ দিদার যে আয়োজন করে চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন তার তুলনা হয় না। চলচ্চিত্রটির জন্য শুভকামনা অশেষ।

 

এর জার্নিটা কেমন ছিল?

কাজটি আমার অভিনয় জীবনের খুব রোমাঞ্চকর কাজের একটি। ‘বিউটি সার্কাস’-এর জার্নিটা অসাধারণ ছিল! এমন একটি ভিন্নধর্মী চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ এসেছিল সার্কাস প্রদর্শনকারী সেজে, তাও আবার এক জম্পেশ সার্কাসের স্টেজে! পুরো অভিজ্ঞতা আমার জন্য সম্পূর্ণ নতুন ছিল, সামনে থেকে কখনো দেখার সুযোগ হয়নি।

 

আপনার চরিত্র ও শুটিং অভিজ্ঞতা জানতে চাই।

এই সিনেমায় আমার চরিত্রের নাম বিউটি। সার্কাস দলের একজন নারী সার্কাসকন্যা। আমরা যখনই যে চরিত্র রূপদান করি, সেই চরিত্রটা হয়ে ওঠার জন্য যেসব প্রস্তুতির প্রয়োজন সেগুলো তো করি আসলে। একটা সার্কাসের দল ছিল ‘বিউটি সার্কাস’-এর শুটিংয়ে, দীর্ঘদিন ধরে শুটিং করতে হয়েছে। একজন সার্কাস সদস্যকে উপস্থাপন করতে যা যা করতে হয়, আসলে সবই আমাকে করতে হয়েছে। বিশাল আয়োজনে সত্যিকারের সার্কাস তাঁবুর নিচে শুটিং অভিজ্ঞতা দারুণ ছিল।

 

কোনো প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল কি?

সিনেমাটি করতে গিয়ে নানা কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। প্রতিবন্ধকতা ছিল, তারপরও আমরা চেষ্টা করেছি। পারফরমারের জায়গা থেকে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। প্রায় ২০০ জনের নির্মাণসঙ্গী নিয়ে ২ হাজার গ্রামবাসীর অংশগ্রহণে চিত্রধারণের কাজ করেন নির্মাতা। এর জন্য বিশাল সার্কাস প্যান্ডেল নির্মাণ ও গ্রাম্যমেলার আয়োজনও করা হয়।

 

ইরানি সিনেমায় অভিনয় অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

একজন সংগ্রামী নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। নতুন করে আমাকে দেখা যাবে। অনেক আগেই ‘ফেরেশতে’ সিনেমাটির শুটিং শেষ করেছি। এটি আমার ক্যারিয়ারে নতুন মাত্রা যোগ করবে, এটা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি। অসম্ভব সুন্দর একটি গল্পের সিনেমা।

 

শিল্পী জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া কী?

একজন শিল্পী এক জীবনে নানারকম চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান। একই মানুষ কত রকম মানুষের চরিত্রে অভিনয় করেন। এক জীবনে অনেক জীবন পান। এটা কি অভিনয়শিল্পী না হলে সম্ভব হতো? কখনই হতো না। শিল্পী জীবনে এটাকে বড় পাওয়া বলে মনে করি।

 

সবচেয়ে প্রিয় কাজ কী?

বাগান করা। এটা যে কতটা শান্তি দেয় তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। গাছের পরিচর্যা করা প্রিয় কাজ।

 

দুই বাংলায় ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে কী কী পার্থক্য রয়েছে?

কাজের ক্ষেত্রে ডিফারেন্স সেরকম কিছুই নেই। দুই বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতি একরকম। তবে কাজের ক্ষেত্রে কিছু কাঠামোগত পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশের পরিচালকরা খুব ভালো কাজ করছেন এখন। আর কলকাতায়ও ভালো ভালো সব ছবি হচ্ছে।

 

ভালো ছবি না পরিচালক, কোনটাকে বেশি প্রাধান্য দেন?

আমি এমন ছবিতেই কাজ করব, যেটা আমার আগে পছন্দ হবে। যেখানে আমি নিজেকে অনেকভাবে মেলে ধরতে পারব। এমন ছবি যা দর্শকের রুচির সঙ্গে যাবে। আমার কাছে কমার্শিয়াল বা আর্টফিল্মের কোনো আলাদা জায়গা নেই। যে ছবির শিল্পের মান মানুষ মনে রাখবে এমন ছবিই করতে চাই।

 

সব চরিত্রেই সহজে মানিয়ে যান। রহস্য কী?

কাছাকাছি চরিত্রে সবাই অভিনয় করতে পারে। অভিনয় শিল্পীদের সবচেয়ে বড় পাওয়া যে, এক জীবনে বহুজীবন বাঁচা যায়। এটা একটা মাধ্যম যেখানে কখনো বারবনিতার জীবনে অভিনয় করছি, কখনো বা সার্কাস পার্টির এক খিলাড়ির চরিত্রে, কখনো একজন প্রতিবন্ধীর মায়ের ভূমিকায়, কখনো সংগ্রামী নারীর ভূমিকায়-নানারকম শেডসে অভিনয় করা যায় এখানে। সবচেয়ে বড় কথা, আমার ওপর পরিচালকরা ভরসা করছেন।

 

ব্যক্তি জয়া এবং অভিনেত্রী জয়ার সম্পর্ক কেমন?

ব্যক্তি জয়া অনেক সহজ, সাধারণ। আপনার কাজ যেমন লেখালেখি করা, আমার কাজ ক্যামেরার সামনে অভিনয় করা। ব্যক্তিগতভাবে সেলিব্রেটিশিপটাকে পছন্দ করি না। আমি মনে করি যে যতটা সাধারণভাবে বাঁচতে পারে, জীবনযাপন করতে পারে সেই শিল্পী হয়। আমি আজকে যে এখানে ক্যামেরার সামনে রংচং মেখে স্পটলাইটে আছি, এটা হলো জয়া আহসানের ইমেজ!

 

জীবনের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য আছে কি?

আমি গন্তব্যে পৌঁছতে চাই না। গন্তব্যে পৌঁছে গেলেই শেষ। আমি জার্নিতেই থাকতে চাই।

 

নায়িকাদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনপ্রিয়তা কমে কিন্তু আপনার বেলায় হচ্ছে তার উল্টো। রহস্যটা কী?

যত বয়স হবে, অভিজ্ঞতা আসবে, কপালে ভাঁজ পড়বে, সেই আঁকিবুঁকি, অভিজ্ঞতা নিয়েই কিন্তু সৌন্দর্যটা। আমার কাছে মনে হয়, এটা আরও বেশি সুন্দর। আমি কতদিন থাকতে পারি! এমন নয় যে, আমি অনেক দিন জোর করে থাকব, দর্শক যদি অপছন্দ করে, বিরক্ত হয়ে যায়, ডেফিনিটলি তখন আর কাজ করব না। 

 

কলকাতার ফিল্মে আপনাকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়, এ দেশের ফিল্মে কি সেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে?

আমাদের এখানে প্রফেশনাল আচরণের একটু অভাব আছে। তবুও একটা বিষয় খেয়াল করে দেখবেন যে, প্রেমটা কিন্তু বেশি আমাদের ছবিতে পাওয়া যায়। হ্যাঁ, অনেক সময় দিনের শেষে ছবিটা হয়তো ছবি হয়ে ওঠে না। আসলে এটাও ঠিক যে, এ দেশে প্যাকেজিংটা ভালো নয়।  ওদের দেশে প্রথমেই যা হয় যে, ওরা পুরোটা আগেই দেখতে পায়। মানে আগে পুরোটা দেখে তারপর ওই অনুযায়ী তাঁরা সাজায়। আমরা স্বপ্নটা অনেক বড় করে দেখি কিন্তু আমাদের এক্সিকিউশনে অসুবিধা আছে।

সর্বশেষ খবর