বৃহস্পতিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : ফারজানা ছবি

জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উদযাপনের আনন্দে পরিপূর্ণ

জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উদযাপনের আনন্দে পরিপূর্ণ

জনপ্রিয় অভিনেত্রী ফারজানা ছবি। প্রায় দুই যুগ ধরে অভিনয় করে চলেছেন।  দীর্ঘ এই পথযাত্রায় অনেক নাটক,  বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন। সম্প্রতি ওয়েবফিল্ম ও বেশ কিছু চলচ্চিত্রে বৈচিত্র্যময় ও চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর সঙ্গে সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

ফেসবুকে ঘুরে বেড়ানো কিছু সুন্দর মুহূর্ত শোভা পাচ্ছে। কোথায় গিয়েছিলেন?

কিছুদিন আগে পরিবারের সবাই মিলে ঘুরতে গিয়েছিলাম। এমন ছুটি শুরু হলো বাতাসের ঘ্রাণ, জলের আলাপ আর ঝরনার গান দিয়ে। একেবারে ফুল ফ্যামিলি! মা, শাশুড়ি, ভাসুর, হাজব্যান্ড, দুই ছেলে মিলে আমরা সাতজনের টিম। ১০ দিনের ট্যুর। কাপ্তাই লেক, শুভলং ঝরনা, ঝুলন্ত সেতু ছাড়াও রাঙামাটির সুন্দর কিছু স্পট ঘুরে দেখা হলো। এরপর রাঙামাটি থেকে ভিন্নভাবে বান্দরবানে প্রবেশ করলাম। সেখান থেকে নীলাচল। পরের দিন ভোরে উঠে গেলাম মিলনছড়ি, চিম্বুক পাহাড়, শৈলপ্রপাত, তিনটি ভিউ পয়েন্ট এরপর নীলগীরি। সেখান থেকে চেকপোস্ট ক্রস করে একটি রিস্কি ট্রেইলে ঘুরতে চলে গিয়েছিলাম। ডিমপাহাড়, আলীকদম, লামা হয়ে এরপর একেবারে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে এসে আমাদের গন্তব্য শেষ হলো। ভালো কিছু সময় কাটল পরিবারের সবার সঙ্গে।

 

বর্ষা শুরুর প্রথমদিকে কদম ফুল নিয়ে একটি পোস্ট করেছিলেন...

কদম আমার প্রিয় ফুল। বর্ষার প্রথমদিকে আমার সহকর্মী বোন আইরিন ও এক ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে কিছু কদম ফুল পেয়েছিলাম।

 

বাংলাদেশ বেতারে অভিনয় ও ঘোষণার কাজে যুক্ত হয়েছেন। কেমন লাগছে?

আমার জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত উদযাপনের আনন্দে পরিপূর্ণ। এটি নতুন এক আনন্দময় সম্মানজনক প্রাপ্তিযোগ। শ্রুতি নাটকে অভিনয়, আবৃত্তি এবং অ্যানাউন্সমেন্টে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে যুক্ত হওয়ার নেপথ্যের অনুপ্রেরণা ছিলেন কামাল আহমেদ ভাই, যাত্রী ফেরদৌসী আপা। এই দুজনের আন্তরিকতায় মুগ্ধ আমি।

 

দীর্ঘ সময় ধরে এখনো সমানতালে অভিনয় করছেন। এই টিকে থাকার রহস্য কী?

শিল্পীকে তাঁর অভিনয় গুণে টিকে থাকতে হয়। এখানে কাজ ছাড়া বেশি দিন টিকে থাকা যায় না। শিল্পী তাঁর কাজ দিয়ে নির্মাতাদের আস্থা তৈরি করবেন। তখনই সবাই তাঁকে দিয়ে কাজ করানোর জন্য আগ্রহী হয়ে উঠবে। এ ছাড়া বৈচিত্র্যময় চরিত্র দিয়ে দর্শকদের মনে জায়গা করে নিতে হয়। আর থাকতে হয় কাজের প্রতি স্বচ্ছতা, সততা আর নিষ্ঠা। তবে এখন নির্মাণের বৈচিত্র্যতার মতো ট্র্যাডিশনাল অ্যাকটিংয়ের বাইরে অভিনয়েও নতুনত্ব থাকা উচিত।  

 

আজ ‘নিঃশ্বাস’ প্রকাশ হচ্ছে। চরিত্র নিয়ে বিস্তারিত বলবেন কি?

একটি সিগনিফিকেন্ট চরিত্রে অভিনয় করেছি। চরকিতে রিলিজ হবে আজ। কিছু চরিত্রের লুক প্রকাশ পেয়েছে। তবে আরও কিছু চরিত্র রয়েছে, যেগুলো প্রকাশ হয়নি এখনো। রহস্য রাখার জন্য করা হয়েছে। খুবই আনন্দ নিয়ে কাজটি করেছি। রাফি অসম্ভব সিরিয়াস ও মেধাবী নির্মাতা। রাফিকে বলেছিলাম, ছোট চরিত্র হলেও তা যেন সিগনিফিকেন্ট হয়। রাফি সেভাবেই সম্মানটা দিয়েছে।

 

বেশ কিছু ধারাবাহিকে কাজ করছেন...

দীপ্তটিভিতে কায়সার আহমেদের ‘বকুলপুর সিজন ২’, মাছরাঙায় বৃন্দাবন দাসের রচনা ও সকাল আহমেদের পরিচালনায় ‘পিতা বনাম পুত্র গং’ এবং নাগরিক টেলিভিশনে সোহাগ কাজীর ‘বৌ বিরোধ’ প্রচার হচ্ছে।

 

নতুন একটি সাত পর্বের খন্ড নাটকের শুটিং করছেন আজ। নাটকটির নাম কি?

রুহুল আমিন পথিকের ‘সমগ্র বাংলাদেশ পাঁচ টন’। এটির গল্প খুবই মজার। একজন লোক মারা গেছে। তাঁকে স্বামী হিসেবে দাবি করে সাতজন স্ত্রী। বাকিটা রহস্যই থাক। এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক সিরিয়াস নাটক ও কমেডি নাটক করেছি। হরেক রকম চরিত্র করেছি। তবে সিরিয়াস বা কমেডি যেটাই করেছি পূর্ণ ডেডিকেশন দিয়েই করেছি।

 

মা, কানামাছি, মৃত্যুঞ্জয়, ময়ূরাক্ষী চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন, সেগুলোর অবস্থা কী?

অরণ্য আনোয়ারের ‘মা’ এবং ওয়েব সিরিজ ‘সীমানা পেরিয়ে’, অঞ্জন আইচের ‘কানামাছি’ করেছি। উজ্জ্বল কুমার মন্ডলের ‘মৃত্যুঞ্জয়’র কাজ শেষ। এই সিনেমার শুটিং করতে নড়াইলের এস এম সুলতানের আর্ট গ্যালারিতে গিয়েছিলাম। সেখানে বাউলের আখড়ায়ও গিয়েছি। কাছ থেকে তাঁদের জীবনযাপন দেখেছি। তাঁদের সাহচার্যে জীবন সমৃদ্ধ হয়েছে। অন্যদিকে রাশিদ পলাশের ‘ময়ূরাক্ষী’তে আমার অংশের কাজ শেষ করেছি। সিআইডি পুলিশ অফিসার চরিত্রে দেখা যাবে।

 

‘পরী তোমার জন্য’ কাজটি কি হয়নি?

অনেক প্রস্তুতি নিয়েও শেষ পর্যন্ত মিজানুর রহমান লাবুর এই কাজটি আর হয়নি। আরেকটি ভালো কাজ ছিল বিপ্লব হায়দারের ‘জ্যোৎ¯œা রাতে গল্প’। এখনো রিলিজ হয়নি কিছু জটিলতায়। এটির কাজে ১৭ দিন আউটডোরে ছিলাম। 

 

ছেলে অনির্বাণও কি মায়ের পথে হাঁটবে?

আমার মতোই আমার হাজব্যান্ডের অনেক আগ্রহ অনির্বাণ অভিনয় করুক, মায়ের মতোই শিল্পী হোক। যেমন লকডাউনের কঠোর সময় আমরা অসীম গোমেজদার নির্দেশনায় মোবাইলে ধারণ করে ‘এক চিলতে রোদ করেছিলাম’। সেখানে আমি, আমার দুই ছেলে, আমার হাজব্যান্ড তন্ময় এবং এ কে আজাদ সেতু নিজ বাসায় যুক্ত থেকে কাজটি করেছিলাম। এটি কিন্তু ৩-৪টা স্থানে আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কার পায়। এই কাজটির মাধ্যমে ভারতের হট্টমেলা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে  সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পাই আমি। নূর ইমরান মিঠুর ‘হেলিকপ্টার’ নামে ২২ মিনিটের একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছে অনির্বাণ। পার্শ্বচরিত্রে আমিও ছিলাম।

 

এ সময় ভিউয়ের প্রতিযোগিতা প্রসঙ্গে কী বলবেন?

সবাই ভিউ দেখে। ভিউয়ের ওপর সবকিছু পরিমাপ করা ঠিক নয়। অনেক সস্তা কাজের ভিউ বেশি হয়। আবার অনেক মানসম্পন্ন কাজের ভিউ কম হয়। তবে এখন ডিজিটাল প্ল্যাটফরম আসার কারণে সব কাজের মূল্যায়ন হচ্ছে। ওটিটিতে ঠিকঠাক বাজেট পাওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর