শনিবার, ২৯ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার ঐশী

ভালোবাসাকে পুঁজি করে বাঁচতে চাই

ভালোবাসাকে পুঁজি করে বাঁচতে চাই

সাড়া জাগানো কণ্ঠশিল্পী ঐশী। এই পাওয়ার ভয়েস গায়িকা ক্যারিয়ারের অল্প সময়েই নিজস্ব গায়কি দিয়ে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছেন। বিশেষ করে ঐশীর স্টেজ পারফরমেন্স চোখে পড়ার মতো। বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে তিনি ক্লাসরুমের স্টেজ মাতিয়েছেন।  তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

 

গান নিয়ে ব্যস্ততা এখন কেমন?

গানের ব্যস্ততা বেশ ভালো। তবে ডাক্তারি পেশার কারণে হাসপাতালে আসতে হয়, এরপর আবার গান করতে হয়। তো সব মিলিয়ে বেশ ভালোই ব্যস্ততা যাচ্ছে। যদিও দেশের মৌসুমটা একটু অন্যরকম। যার কারণে অনুষ্ঠানের সংখ্যা কম। তারপরও গানের পরিবেশ তো মনে হয় ভালোই।

 

সামনে কোনো একক গান কি প্রকাশ হবে?

একক গান অবশ্যই প্রকাশ হবে। কাজ চলছে। শ্রোতারা টিএম রেকর্ডস থেকে অলরেডি দুটি গান পেয়েছে। একটা দুষ্টু পোলাপাইন। এরপর অল্প কিছুদিনের মাথায় ‘গাড়ির মেকানিক’ এলো। দুষ্টু পোলাপাইন  তো আলহামদুলিল্লাহ ব্লকবাস্টার হিট। আমার জন্য অন্যরকম একটা সৌভাগ্য বয়ে নিয়ে এসেছে এই গানটা এবং পরবর্তীতে যখন ‘গাড়ির মেকানিক’ প্রকাশ হয় তখন গানটিকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানুষের গ্রহণ করা দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে গিয়েছি। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতেই আরও কিছু গানের কাজ চলছে। আমার বিশ্বাস, এই গানগুলোও ধামাকা হবে। কাজ আগে একটু গুছিয়ে নেই। তারপর সময়মতো মানুষকে জানিয়ে দেব। সেই পর্যন্ত সারপ্রাইজ থাকুক সব!

 

এসএসসি ২০০১ ব্যাচের ক্লাসরুম গ্রুপের তৃতীয় বর্ষপূর্তির গান করেছেন...

এমন আয়োজনের সঙ্গে থাকতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে। বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটির রাজদর্শন হলে এসএসসি ২০০১ ব্যাচের ক্লাসরুম গ্রুপের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে প্রিয় কিছু গান গেয়েছি আমি। গানের সঙ্গে ক্লাসরুমের বন্ধুরা সবাই মিলে আনন্দে উল্লাসে মেতে ছিল। সেদিন আমার পছন্দের গানের মধ্যে ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড জয়ী গান ‘মায়া রে’ গেয়েছিলাম। কিছু সিনেমায় গাওয়া গান যেমন দয়াল ও দয়াল, রঙিলা বেবি গান করেছি। দুষ্টু পোলাপাইন, গাড়ির মেকানিক গান দুটি তো সর্বদা গাওয়ার তালিকায় থাকে। আমার গান ও প্রিয় কিছু লোক গান নিয়ে তালিকাটি সাজানোর চেষ্টা করেছি যেন ক্লাসরুমের বন্ধুরা সুন্দর একটা সময় কাটাতে পারে, আনন্দ উপভোগ করতে পারে। আমার পক্ষ থেকে ক্লাসরুমের তৃতীয় বর্ষপূর্তিতে অনেক অনেক শুভকামনা ও শুভেচ্ছা। এমন সুন্দরভাবে এতদূর পর্যন্ত বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে সামনে চলছে, সেটা সত্যিই অবাক করা ব্যাপার।

 

এ বছর আরও কোনো স্টেজ পারফরমেন্স আছে?

হ্যাঁ আছে। আজকের ক্লাসরুমের অনুষ্ঠানের পর আরও বেশ কিছু অনুষ্ঠানে গান করব। সেগুলো সময় হলে সবাই জানতে পারবেন।

 

একই সঙ্গে গান গাওয়া ও মেডিকেলে পড়াশোনা-সমন্বয়ে সমস্যা হচ্ছে না?

গান গাওয়া ও পড়াশোনা, দুটোই আসলে চমৎকার সাধনার জায়গা। প্রচন্ড কষ্টেরও জায়গা। অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তবে আমি আলহামদুলিল্লাহ বিগত বছরগুলোতে (৭ বছর ধরে) দুটোই মেইনটেইন করার চেষ্টা করেছি। কষ্ট তো হয়েছেই। কষ্ট না করলে তো কেষ্ট মেলে না। কষ্ট করতেই আমার ভালো লাগে। এই কষ্টের ভালো জায়গাটা নিয়েই আমি দুটো জায়গায়ই ভালোমতো সমন্বয় করেছি। সামনের দিনগুলোতেও সেইম চেষ্টা করব। অসুবিধা হয় না আসলে। অসুবিধা শব্দটা আমি কখনোই ব্যবহার করতে চাই না। বরং আমি যেভাবে দুটো প্রফেশনকে ভালোবেসে আছি, একইভাবে সামনেও থাকতে চাই। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন যেন সমান উদ্যম ও সাধনা নিয়ে দুটো প্রফেশনকে মেইনটেইন করে একইভাবে সামনেও এগিয়ে যেতে পারি।

 

বর্তমান ঐশীর মধ্যে কোনো পরিবর্তন চোখে পড়ে?

হাহাহা... আগের ঐশী আর এখনকার ঐশীর মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই। আগে যা ছিলাম, এখনো সে রকমই আছি। কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ভালোবাসার পরিবর্তন হয়েছে। যেমন আগে আমাকে তেমন করে কেউ চিনতেন না জানতেন না বা ভালোবাসতেন না, কিন্তু এখন আমি অনেক অনেক মানুষের ভালোবাসা পাই। এই ভালোবাসাটাকে পুঁজি করে আমি আজীবন বেঁচে থাকতে চাই।

 

সামনে আর কোনো সিনেমার গান করছেন?

‘মায়া রে’ গানটি গাওয়ার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিলাম। এটা অন্যরকম একটা অ্যাচিভমেন্ট আমার জন্য। এটা আমার জন্য অনেক বড় সম্মানের। আমি সর্বদা ফোকাস করেছি আমার কাজে। ডেডিকেশন ছিল কাজে, যেন গান ভালো হয়। আমি আপনমনে গান করার চেষ্টা করেছি। এখন নতুন চ্যালেঞ্জ, আমি যেন সামনে ভালো ভালো কিছু গান উপহার দিতে পারি।  সে কথা মাথায় রেখেই ভালো ভালো কিছু সিনেমার গান করছি। ইতোমধ্যেই দামালের একটি গান করেছি। সেটা ইতোমধ্যেই প্রকাশ হয়েছে। শান সিনেমার গান করেছিলাম। সামনে আরও কিছু কাজ আসবে।

 

অভিনয়ে আসার ইচ্ছা কি রয়েছে?

গান এবং মেডিকেল- এই দুটি প্রফেশনের বাইরে আর কোনো কিছু করার ইচ্ছা নেই আপাতত। আসলে ইচ্ছাই নেই বলব।

 

টিএম গ্যালাক্সিতে ঐশীর পথচলা কেমন হচ্ছে?

এই ট্যালেন্ট ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিতে আমি বাংলাদেশি হিসেবে কাজ করতে পারছি। আমার জন্য এটা বড় সৌভাগ্যের বিষয়। বাইরের দেশে কিন্তু শিল্পীরা এভাবেই ম্যানেজ হয়। কিন্তু আমাদের দেশে ব্যাপারটা একদমই নতুন। এই বিষয়টা টিএম গ্যালাক্সি নিয়ে এসেছে, আমি তাদের সাধুবাদ জানাই। সামনে অনেক কিছুই দেখা যাবে। আপাতত আমার ম্যানেজমেন্টটা টিএম গ্যালাক্সির মাধ্যমেই হচ্ছে।

 

ঐশী এক্সপ্রেস নিয়ে পরিকল্পনা?

এটা আমার টিম। আমরা অনেক বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করছি। এবং আমার বিশ্বাস, আমি এই টিমটাকে নিয়েই দেশ-বিদেশে ভ্রমণ করব, গান করব। আমার গানের সঙ্গী হিসেবে সর্বদা তাঁরা সঙ্গে থাকবেন, ইনশাল্লাহ।

সর্বশেষ খবর