বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

চূড়ান্ত রায় আমার পক্ষেই আসবে : জায়েদ খান

আলাউদ্দীন মাজিদ

চূড়ান্ত রায় আমার পক্ষেই আসবে : জায়েদ খান

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বৈধ বলে ঘোষণা দেওয়া হাই কোর্টের রায় স্থগিত করেছে আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে নিপুণের লিভ টু আপিল গ্রহণ করেন আদালত। গত সোমবার আপিল বিভাগ এ আদেশ দিয়েছে। এতে চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বৈধতা পেয়েছেন আপিল বিভাগের রায়ে।

এ অবস্থার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দীর্ঘ বিবৃতি দিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন নায়ক জায়েদ খান। তিনি বলেন, মামলা খারিজ হয়নি, এটি চূড়ান্ত রায় নয়, এটি চূড়ান্ত আদেশ নয়, কারণ হাই কোর্ট আমাকে যে আদেশ দিয়েছিলেন মানে মোহাম্মদ হোসেন, সোহানুর রহমান সোহান গংরা অবৈধ ও অন্যায়ভাবে আমাকে যে আদেশটি দিয়েছিল আমার প্রার্থিতা বাতিলের, তা হাই কোর্ট বাতিল করেছিল, সেটিই আবার চেম্বার জজ স্থগিত করেন এবং স্থিতাবস্থা দিয়েছিলেন। তারপরও জোর করে নিপুণ শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেছিলেন। বর্তমানে আপিল বিভাগ হাই কোর্টের সেই আদেশ স্থগিত করেছে এবং নিপুণ মামলাটির শুনানির জন্য যে আবেদন করেছিলেন সেই শুনানির আবেদন আপিল বিভাগ গ্রহণ করেছে। কিন্তু এটাকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হচ্ছে এটিই চূড়ান্ত রায়। এ ব্যাখ্যাকে আমি আদালত অবমাননার শামিল বলে মনে করি। কারণ এ মামলার আবার চূড়ান্ত শুনানি হবে, সেটির রায় হবে, সেই রায়ের বিরুদ্ধে আবার রিভিউর আবেদন করা যাবে। তারপরই চূড়ান্ত রায় আসবে। আর চূড়ান্ত রায় আমার পক্ষেই আসবে। জায়েদ খান উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, এটি দুঃখজনক যে, শিল্পীদের ভোটে নির্বাচিত একজন প্রতিনিধি হয়েও শিল্পীদের সেবা আমি করতে পারছি না। জায়েদ দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, মোহাম্মদ হোসেন, সোহানুর রহমান সোহানরা নির্বাচনী আপিল বোর্ডে থেকেও তাদের এমন একটি বেআইনি অগঠনতান্ত্রিক কার্যক্রম ও সিদ্ধান্তের ফলে আজ শিল্পী সমিতির এই অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হয়েছে এবং আমার ভাবতেও অবাক লাগে যে, একটি মানুষ চূড়ান্ত ফল ঘোষণার পর বিজয়ী হয়ে শপথ গ্রহণ করে দায়িত্ব গ্রহণের পরও এ ধরনের বিস্ময়কর অবস্থা তৈরি হতে পারে- যা নজিরবিহীন। জায়েদ খান বলেন, আমি আদালতের কোনো জাল বা মিথ্যা সার্টিফিকেট দেখাইনি। যদি আমি রায় না পেতাম তাহলে নিপুণের যে আবেদন আপিল আদালত গ্রহণ করেছেন তা কোন রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে হয়েছে। সুতরাং আমার বিরুদ্ধে আনীত এই অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বানোয়াট। আমি এখনো দাবি করছি, আমি শিল্পীদের ভোটে নির্বাচিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং আদালত আমার প্রতি ন্যায়বিচার করবেন বলেই আমার বিশ্বাস। জায়েদ খান ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, একটি সমিতির একজন সভাপতি মানে সব শিল্পীর অভিভাবক। সমিতির সভাপতি হিসেবে ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেবের এমন পক্ষপাতমূলক বক্তব্য কারও কাম্য নয়। তিনি আদালতের রায়ের চূড়ান্ত আদেশ না পেয়েই বলে দিলেন ‘জায়েদ খানের এখন জাতিসংঘ ছাড়া আপিল করার কোনো জায়গা নেই।’

একজন সর্বজনশ্রদ্ধেয় সিনিয়র শিল্পী এবং শিল্পীদের অভিভাবক যদি এমন অযৌক্তিক ও পক্ষপাতমূলক কথা বলেন, তাহলে তা শিল্পীদের মধ্যে তার প্রতি অনাস্থা ও অসন্তোষ তৈরি করে।

জায়েদ খান আরও বলেন, যেখানে নিপুণ নির্বাচনী আপিল বোর্ডের রায় মেনে নিয়ে ও তাতে স্বাক্ষর করে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা মেনে নিলেন, তারপর আবার এই অন্যায় অভিযোগ কেন। জায়েদ খান বলেন, আমার কথা হলো রায়ের পর নির্বাচনী আপিল বোর্ডের আর কোনো কার্যক্রম থাকে না। অথচ কোন শক্তিতে মোহাম্মদ হোসেন, সোহানুর রহমান সোহান ও জেমী গংরা রায়ের পরও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কাগজ চালাচালি করেন।  এভাবে যদি কোনো অন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে চলচ্চিত্র শিল্পের যে কোনো সেক্টরের জন্য এটি কলঙ্কজনক ও নেতিবাচক নজির হয়ে থাকবে।

আমি আশা করছি, ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে  এবং ভোটারদের ভোটে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমি আমার পদে বহাল থাকব।

সর্বশেষ খবর