সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : জয়া আহসান

ব্যক্তি জয়া অনেক সহজ ও সাধারণ

ব্যক্তি জয়া অনেক সহজ ও সাধারণ

দুই বাংলার সিনে-দুনিয়ায় দাপটের সঙ্গে রাজত্ব করছেন জয়া আহসান।  একের পর এক বাঘা বাঘা ছবি তাঁর ঝুলিতে। বিভিন্ন চরিত্রে নিজেকে ভেঙে-গড়ে প্রমাণ করেছেন তিনি। ঢাকা-কলকাতার পর তুলনাহীন জয়া এবার পঙ্কজ ত্রিপাঠীর সঙ্গে বলিউডের ছবিতেও কাজ করছেন।  তাঁর সঙ্গে সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

 

ঢালিউড-টালিউডের পর এবার বলিউডে কাজ করছেন। পঙ্কজ ত্রিপাঠীর সঙ্গে শুটিংও শুরু হয়েছে। সবকিছু এত দ্রুত হলো, রহস্য কী?

কোনো রহস্য নেই! এটির শুটিং একটু তাড়াতাড়িই শুরু হয়েছে। মহরত হওয়ার পর ৬ ডিসেম্বর থেকে শুটিং শুরু হয়। তবে এখনো নাম চূড়ান্ত হয়নি। অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী তৈরি করছেন। শুটিং হবে কলকাতা ও মুম্বাই মিলে। আগামী বছর ছবিটি মুক্তির পরিকল্পনা করছেন ছবিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

 

কাজটিতে যুক্ত হতে খুবই কম সময় নিয়েছেন...

এই সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়ে বেশ রোমাঞ্চিত ছিলাম। তাই হ্যাঁ বলতেও সময় নিইনি। আর অনিরুদ্ধ-পঙ্কজের সঙ্গে কাজ করতে মুখিয়ে ছিলাম। কাজটি নিয়ে আমি খুব উচ্ছ্বসিত। ছবিটি ইনভেস্টিগেটিভ ড্রামা ঘরানার, যেখানে একটি ভেঙে যাওয়া পরিবারের এক হওয়ার হৃদয়স্পর্শী গল্প থাকবে।

 

সিনেমাটিতে যুক্ত হওয়ার পেছনে কারণ?

প্রথমত আমার প্রথম হিন্দি সিনেমা। স্ক্রিপ্ট পড়েছি, আমার চরিত্রটিও দারুণ। এরপর সিনেমাটির পরিচালক অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী এবং আমার সহ-অভিনেতা পঙ্কজ ত্রিপাঠী রয়েছেন। এটা আমার জন্য আনন্দের। আমি সর্বদা অনিরুদ্ধ-পঙ্কজের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছি।

 

কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের ২৮তম আসরে ‘ওসিডি’...

এর মধ্যেই ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নন্দন-২ এ এটি প্রদর্শিত হয়েছে। আর ২০ ডিসেম্বর রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবনে বিকালে দেখানো হবে ‘ওসিডি’।

 

বিশ্ব চলচ্চিত্র উৎসবে আপনার অভিনীত সিনেমা। কেমন লাগছে?

বিষয়টি ভাবতে ভালোই লাগে। সম্প্রতি ৫৩তম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব ইন্ডিয়া চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা করে আকরাম খানের ‘নকশিকাঁথার জমিন’। আইসিএফটি-ইউনেস্কো গান্ধী মেডেল অ্যাওয়ার্ড পুরস্কারের জন্য মনোনীতও হয়। এরপর ১৯তম বার্সেলোনা হিউম্যান রাইটস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রতিযোগিতা বিভাগে মনোনীত হয়ে প্রদর্শিত হয় সিনেমাটি।

 

শিল্পী জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া কী?

একজন শিল্পী এক জীবনে নানারকম চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পান। একই মানুষ কত রকম মানুষের চরিত্রে অভিনয় করেন। এক জীবনে অনেক জীবন পান। এটা কি অভিনয়শিল্পী না হলে সম্ভব হতো?

 

সবচেয়ে প্রিয় কাজ কী?

বাগান করা। এটা যে কতটা শান্তি দেয় তা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। গাছের পরিচর্যা করা প্রিয়।

 

দুই বাংলায় ছবি নির্মাণের ক্ষেত্রে কী কী পার্থক্য রয়েছে?

কাজের ক্ষেত্রে ডিফারেন্স সে রকম কিছুই নেই। দুই বাংলার ভাষা ও সংস্কৃতি একরকম। তবে কাজের ক্ষেত্রে কিছু কাঠামোগত পার্থক্য রয়েছে। বাংলাদেশের পরিচালকরা খুব ভালো কাজ করছেন এখন। আর কলকাতায়ও ভালো ভালো সব ছবি হচ্ছে।

 

ভালো ছবি না পরিচালক, কোনটাকে বেশি প্রাধান্য দেন?

আমি এখন ছবিতেই কাজ করব, যেটা আমার আগে পছন্দ হবে। যেখানে আমি নিজেকে অনেকভাবে মেলে ধরতে পারব। এমন ছবি যা দর্শকের রুচির সঙ্গে যাবে। আমার কাছে কমার্শিয়াল বা আর্টফিল্মের কোনো আলাদা জায়গা নেই। যে ছবির শিল্পের মান মানুষ মনে রাখবে এমন ছবিই করতে চাই।

 

সব চরিত্রেই সহজে মানানসই, রহস্য কী?

কাছাকাছি চরিত্রে সবাই অভিনয় করতে পারে। অভিনয়শিল্পীদের সবচেয়ে বড় পাওয়া যে, এক জীবনে বহু জীবন বাঁচা যায়। এটা একটা মাধ্যম যেখানে কখনো বারবনিতার জীবনে অভিনয় করছি, কখনো বা সার্কাস পার্টির এক খিলাড়ির চরিত্রে, কখনো একজন প্রতিবন্ধীর মায়ের ভূমিকায়, কখনো সংগ্রামী নারীর ভূমিকায়-নানারকম শেডসে অভিনয় করা যায় এখানে। সবচেয়ে বড় কথা, আমার ওপর পরিচালকরা ভরসা করছেন।

 

ব্যক্তি জয়া এবং অভিনেত্রী জয়ার সম্পর্ক?

ব্যক্তি জয়া অনেক সহজ, সাধারণ। আমার কাজ ক্যামেরার সামনে অভিনয় করা। ব্যক্তিগতভাবে সেলিব্রেটিশিপটাকে পছন্দ করি না। যে যতটা সাধারণভাবে বাঁচতে পারে, জীবনযাপন করতে পারে সেই শিল্পী হয়। আমি আজকে যে এখানে ক্যামেরার সামনে রংচং মেখে স্পটলাইটে আছি, এটা হলো জয়া আহসানের ইমেজ!

 

জীবনের নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য আছে কি?

আমি গন্তব্যে পৌঁছতে চাই না। গন্তব্যে পৌঁছে গেলেই শেষ। আমি জার্নিতেই থাকতে চাই।

 

নায়িকাদের বয়স বাড়লে জনপ্রিয়তা কমে কিন্তু জয়ার বেলায় উল্টো। রহস্যটা কী?

যত বয়স হবে, অভিজ্ঞতা আসবে, কপালে ভাঁজ পড়বে, সেই আঁকিবুঁকি, অভিজ্ঞতা নিয়েই কিন্তু সৌন্দর্যটা। আমার কাছে মনে হয়, এটা আরও বেশি সুন্দর। আমি কতদিন থাকতে পারি! এমন নয় যে, আমি অনেক দিন জোর করে থাকব, দর্শক যদি অপছন্দ করে, বিরক্ত হয়ে যায়, ডেফিনিটলি তখন আর কাজ করব না। 

 

দেশীয় ফিল্ম নিয়ে অভিমত কি?

এখানে প্রফেশনাল আচরণের একটু অভাব আছে। তবুও প্রেমটা কিন্তু বেশি আমাদের ছবিতে পাওয়া যায়। হ্যাঁ,  অনেক সময় দিনের শেষে ছবিটা হয়তো ছবি হয়ে উঠে না। আসলে এটাও ঠিক যে, এ দেশে প্যাকেজিংটা ভালো নয়। 

সর্বশেষ খবর