শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার :- ফেরদৌস আহমেদ

লেখক হিসেবে নিজেকে উপভোগ করছি

লেখক হিসেবে নিজেকে উপভোগ করছি

দুই বাংলার জনপ্রিয় নায়ক ফেরদৌস। প্রায় ২৫ বছরের অভিনয় এবং নির্মাতা ক্যারিয়ারের পাশাপাশি চলতি বছর লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন তিনি। একুশের বইমেলায় প্রকাশ পেয়েছে তার রচিত উপন্যাস, ‘এই কাহিনী সত্য নয়’।  এ বিষয় ও অন্যান্য প্রসঙ্গে এ নায়কের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

নায়ক-নির্মাতা থেকে লেখক হয়ে ওঠার গল্পটা কেমন?

বলতে পারি হঠাৎ করেই কাজটা হয়ে গেছে। আসলে আমার সব কাজই হঠাৎ করে হয়ে যায়। যেমন কলকাতায় আমার প্রথম ছবি ছিল ‘হঠাৎ বৃষ্টি’। আসলে আমার জীবনে এই ‘হঠাৎ’ শব্দটা কেমন জানি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে...হা... হা...। যা হোক এবার লেখক হয়ে ওঠার গল্পটাই বলি। আমি এক সময় যখন সাংবাদিকতা করতাম তখন থেকেই শখ ছিল বই লিখব। আমি আনন্দ ভুবন, প্রথম আলোসহ কয়েকটি পত্রিকায় গেস্ট এডিটর ছিলাম। প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান সাহেব বলতেন আপনার লেখার হাত ভালো, আপনি বই লিখেন। তাঁর কথায় আমার লেখালেখির প্রতি আগ্রহটা আরও বেড়ে যায়। ব্যস, এভাবেই এক সময় উপন্যাসটি লেখা শুরু করে দিলাম।

 

উপন্যাসটির প্রতিপাদ্য সম্পর্কে কিছু বলুন-

আসলে এটি একটি আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস। নিজের ছোটবেলার বেশ কিছু ঘটনা তো আছেই। তা ছাড়া একবার বিমানে করে কোথাও যাচ্ছিলাম। তখন আমার পেছনের সিটে বসা এক দম্পতির কিছু ইন্টারেস্টিং কথোপকথন আমাকে মুগ্ধ করেছিল। সব মিলিয়ে এসব বিষয় নিয়েই উপন্যাসটি লিখলাম।

 

এবার আপনার সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র নিয়ে ব্যস্ততার কথা শুনি-

দুই বাংলাতেই বেশ কিছু ছবির কাজ হাতে রয়েছে। ওপারে ‘মীরজাফর চ্যাপ্টার টু’ ছবির শুটিং শিগগিরই শুরু হবে। এ ছাড়া ওখানে আগের কিছু ছবি হাফ ডান হয়ে আছে। সেগুলোও শুরু হবে। পাশাপাশি নতুন একটি ছবির কথাও চলছে। এ ছবিতে আমার বিপরীতে থাকবেন নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। তিনি বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। এলেই ছবিটির কাজ নিয়ে সব চূড়ান্ত হবে। দেশেও আমার অভিনীত বেশ কিছু ছবির কাজ শেষ হয়ে আছে, সেগুলো অচিরেই মুক্তি পাবে। এবং আরও কিছু হাফ ডান হয়ে আছে।

 

বর্তমানে আমাদের দেশ স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশে ছবির গল্প ও নির্মাণ অবশ্যই স্মার্ট হতে হবে।  তাহলেই আমাদের ছবি দেশ-বিদেশের দর্শক দেখবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে

 

‘মীরজাফর চ্যাপ্টার টু’তে কেমন চরিত্রে কাজ করতে যাচ্ছেন?

আসলে এটি এমন একটি ম্যাচিউরড ক্যারেক্টর যা নিয়ে কয়েক বছর আগেও ভাবতে পারতাম না। অভিনয় জীবনের ২৫ বছর পর এখন মনে হয় এটি করার জন্য আমি এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আসলে সিরাজ-মীরজাফররা যুগ যুগ ধরেই আছে। এ ছবিতে আমার চরিত্রটি হলো বর্ডার এলাকায় থাকি এবং নিজেকে সিরাজউদ্দৌলা ভাবি। বর্ডারে রাজতন্ত্র বলে একটি কথা আছে সেটি নিয়ে কথা বলি। এটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমী একটি চরিত্র।

 

আবার কখন চলচ্চিত্র প্রযোজনায় আসছেন?

চলতি বছরই প্রযোজনায় আসছি।

 

এবারের গল্পটা কেমন হবে?

বাবা-মেয়ের সম্পর্ক নিয়ে এগুবে গল্পটি। গল্পভাবনা আমার। এটি বলা যায়, শিশুতোষ চলচ্চিত্র। আসলে আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে শিশুতোষ চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে না, এ ধরনের চলচ্চিত্রের দর্শক চাহিদা রয়েছে। শিশুরাও এমন চলচ্চিত্র পেলে খুশি হয়। তাই এমন  বিষয়ের চলচ্চিত্র নিয়েই এবার নির্মাণে আসব।

 

সম্প্রতি ভিন্নধর্মী গল্পের ছবি ‘হাওয়া’ ও ‘পরাণ’ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে, এটি কীভাবে সম্ভব হলো?

আমার কাছে এটি ভীষণ ইতিবাচক একটি দিক মনে হয়েছে।

এটি সম্ভব হয়েছে সময়োপযোগী নির্মাণ চিন্তার কারণে। আসলে নির্মাণের ক্ষেত্রে আমাদের দেশের বেশির ভাগ নির্মাতা সময়ের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছেন। আমরা শুধু বিগত দিনে হারিয়ে যাই। বর্তমানে আমাদের দেশ মানে স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশে ছবির গল্প ও নির্মাণ অবশ্যই স্মার্ট হতে হবে। তাহলেই আমাদের ছবি দেশ-বিদেশের দর্শক দেখবে এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আবার মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

 

আবার লেখক হওয়ার অনুভূতির কথা শুনি?

এই অনুভূতি অসাধারণ, লেখক হিসেবে নিজেকে বেশ উপভোগ করছি। কারণ বুদ্ধিজীবী শ্রেণি থেকে শুরু করে সবাই বইটির প্রশংসা করছেন। লেখক হিসেবে যখন বইপ্রেমীরা অটোগ্রাফ চায় তখন তৃপ্তিতে মনটা ভরে যায়। মনে পড়ে যায়, এক সময়   আমি হুমায়ূন আহমেদ স্যারের অটোগ্রাফ নিতাম। এই লেখালেখিটা চালিয়ে যেতে চাই।

সর্বশেষ খবর