সোমবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : মেহের আফরোজ শাওন

আমার প্রতিটা দিনই সুন্দর

আমার প্রতিটা দিনই সুন্দর

মেহের আফরোজ শাওন। এই নামটি বললেই আর কোনো পরিচয়ের দরকার হয় না। অসামান্য প্রতিভার অধিকারী এই তারকা একাধারে একজন অভিনেত্রী, কণ্ঠশিল্পী, নৃত্যশিল্পী, নির্মাতা ও স্থপতি।  নিশাদ ও নিনিতকে নিয়েই চলছে তাঁর দিবানিশি। সমসাময়িক ব্যস্ততা নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন - পান্থ আফজাল

 

এবারের ভালোবাসা দিবস শাওনের জন্য কতখানি বিশেষ?

আমার কাছে আগের ১৪ ফেব্রুয়ারি যেমন, এখনকারটাও তেমনই। আসলে প্রতি বছর যেমন করে এই দিনটা চলে যায়, এবারও যাবে হয়তো। আমার কাছে দিবস নিয়ে আলাদা করে যেমন কোনো আবেগ নেই, আবার দিবসের কোনো বিরোধিতাও নেই। আছে না, অনেকেই বলে এসবের কী দরকার! প্রতিদিনই ভালোবাসি, এক দিন আলাদা থাকলে অসুবিধা কোথায়? যারা কার্ড বিক্রি করেন, যারা ফুল বিক্রি করেন তাদের তো লাভ হলো! যারা একটু লাল রঙের শাড়ি পরতে চান বা লাল ড্রেস পরতে চান ভালোবাসা দিবসে তাদেরও একটু লাভ হলো। যারা একটু ভাবছেন পরিবারকে সময় দেওয়া হচ্ছে না তারা এদিন পরিবারকে সময় দিলেন, সেটা ভালো নয়? তাই আমার মনে হয় সবাই যদি ভালো থাকে তাহলে ভালোবাসা দিবসটা খুবই সুন্দর। আমি যদি নিজের কথা বলি তাহলে বলব আমার প্রতিটা দিনই সুন্দর। যেদিন আমি ভালো থাকি সেদিনটাই আমার কাছে ভালোবাসার দিন। যেদিন আমি একটু টেনশনে থাকি, যেদিন আমার বাচ্চাগুলোর শরীর খারাপ থাকে, মার একটু টেনশন থাকে সেদিনটাকে আমার মনে হয় খুবই খারাপ। যাই হোক, এই ভালোবাসা দিবসে জানাচ্ছি সবাইকে অফুরন্ত ভালোবাসা। ভালোবাসার ভালো থাক।

 

বর্তমানে ওটিটি অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতাদের জন্য বড় একটি প্ল্যাটফরম। এই মাধ্যমে অভিনয়ে কবে দেখা যাবে আপনাকে?

অভিনয় তো করতেই চাই কিন্তু কেউ নেয় না... হাহাহা। না আসলে আমি দুষ্টামি করে বললাম। অভিনয় করার আগ্রহ আছে এবং আমি আগ্রহটা জানিয়েছি কিছু পরিচিত নির্মাতা বন্ধুকে। তবে অভিনয় করতে চাইলেই সঙ্গে সঙ্গে শুরু করা যায় না। আমার বয়স, আমার যোগ্যতা অনুযায়ী সেরকম একটা চরিত্র তো পেতে হবে। যখন সবকিছু মিলে যাবে তখনই হবে। আসলে পুরোটা একটা সময়ের ব্যাপার, একটা ক্লিক করার বিষয় আছে। হয়তো দেখা যাবে সবকিছু ঠিকঠাক মতো হলে। আমার দিক থেকে কোনো আপত্তি নেই। মাঝখানে বড় একটি সময় আমিই আপত্তি করে গেছি। আমার ভালো লাগত না, আমার ইচ্ছা হতো না। এখন কিন্তু আমার ইচ্ছা হয়। ওটিটির নতুন নতুন ভালো কাজ দেখেই আমার এই আগ্রহটা বেড়েছে।

 

আর নির্মাতা হিসেবে...

নির্মাণে দেখা যাবে। আমি একটু বড় সময় বিরতি নিয়েছি। আমার দুটি সন্তানই বয়ঃসন্ধিকাল পার করছে। এই বয়ঃসন্ধিকালটা আমরা পার করেছি একভাবে। তবে এখনকার প্রজন্মের বয়ঃসন্ধিকালটা এখনো আমি বুঝে উঠতে পারছি না। পেরে উঠছি না। সে জন্য আমার একটু সময় বিরতি যাচ্ছে। তবে আশা করছি আমি এ বছরের শেষ নাগাদ একটি কাজ শুরু করব।

 

এই সময়ের কোন কোন কাজ ভালো লেগেছে?

অনেক কাজ আছে। আমি আসলে নাম ধরে সেগুলো বলতে পারব না। বলতেও চাই না। আমি খুব গর্বিত যে, বাংলাদেশে এখন অনেক ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। বিশেষ করে যদি বলি, পাশের দেশের একটি ওটিটি প্ল্যাটফরমে তাদের কাজের চেয়ে বাংলাদেশের কাজের জয়জয়কার বেশি এবং আমি সম্প্রতি কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলায় গিয়েছিলাম। সেখানে রাস্তাঘাটে, ট্যাক্সিতে, খাবারের দোকানসহ সবখানে বাংলাদেশের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জয়গান শুনেছি। তারা মুগ্ধ হয়ে বাংলাদেশের অভিনয়শিল্পীদের অভিনয় দেখে। মুঠোফোনে বসে গোগ্রাসে আমাদের দেশের শিল্পীদের দেখে। নির্মাণগুলো দেখে। এটি একটি অনেক বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমি এ নিয়ে খুবই গর্বিত।

 

জয়া-বাঁধনদের মতো ওপারের সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা রয়েছে কি?

ইচ্ছার কথা যদি বলি মানুষের ইচ্ছার কিন্তু কোনো সীমা নেই। বলে না স্কাই ইজ দ্য লিমিট। আমার কিন্তু স্কাইও লিমিট নয়, আমার কাছে মহাকাশও সীমা হতে পারে না। আসলে ইচ্ছা তো অনেক কিছুই আছে। যদি ভালো সুযোগ পাওয়া যায়, হয়েও তো যেতে পারে। কিন্তু আমি আগে থেকে কিছুই বলতে পারছি না।

 

জীবনে অনেক নাটক-সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এই সময়ে কোন ধরনের সিনেমা বা কোন ধরনের চরিত্র করতে চান?

আমি সেই ধরনের সিনেমা বা সেই ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে পারব কি না তা নির্মাতারাই ভালো জানেন। তবে আমার করার মতো কিছু থাকতে হবে। তাহলে যে কোনো চরিত্রই সুন্দর হয়ে উঠবে।

 

এবার অন্য প্রসঙ্গ, হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে বিয়ের দিন এমন কোনো মজার ঘটনা আছে, যা শেয়ার করা যায়?

বিয়ের দিন আমার স্বামী হুমায়ূন আহমেদ আমার হাতে ১০ লাখ টাকা দিয়ে বললেন, ‘যাও গয়না কিনে নিয়ে এসো’। তো আমি হঠাৎ করে ভাবলাম গয়না কীভাবে কিনতে হয়? আমি তো জানি না। কারণ এক জীবনে আমার মা, আমার বাবা একটু একটু করে কিছু করে দিয়েছিলেন। কি আর করা, আমি দোকানে চলে গেলাম। দরদামও করতে পারি না, বুঝিও না। আমি আবার অনেক বড় গয়না পছন্দ করি না। তো ছোট্ট গয়না কিনলাম খুবই অল্প দামে। এরপর গয়না কিনে বাড়ি ফিরে হুমায়ূন আহমেদের হাতে ৮ লাখ টাকা ফেরত দিয়ে বললাম, আমার গয়না কেনা শেষ। তিনি অবাক হয়ে বললেন, এটা তোমার বিয়ের গয়না! আসলে এত ছোট গয়না, কিন্তু সেটিই আমার কাছে বড় স্মৃতি।  অনেক বেশি মূল্যবান।

 

ইমন সাহার সঙ্গে নতুন একটি গানের প্রজেক্ট...

এটি নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না।  তবে রেকর্ডিং শেষ। অচিরেই এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে। 

সর্বশেষ খবর