বৃহস্পতিবার, ২ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : - আফরান নিশো

ওজন আমি নিজের জন্যই কমিয়েছি

ওজন আমি নিজের জন্যই কমিয়েছি

এই সময়ে ছোট পর্দা-ওটিটির দর্শকনন্দিত নাম আফরান নিশো। তাঁর বৈচিত্র্যপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনীত প্রতিটি কাজে মুগ্ধ ভক্তরা।  এবার তাঁকে প্রথমবারের মতো দেখা যাবে বড় পর্দায়। রায়হান রাফীর ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার নায়ক নিশো, বিপরীতে রয়েছেন তমা মির্জা। আফরান নিশোর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

আগে যখন দেখা হয়েছিল সে তুলনায় অনেক স্লিম লাগছে। এত ওজন কমিয়ে ফেলার কারণ কী?

ওজন আমি নিজের জন্যই কমিয়েছি। আসলে আমি অনেক হেলদি হয়ে গিয়েছিলাম। আমি ৯১ ছিলাম, কাইজারের পর। তারপর ৭৮। অর্থাৎ অলমোস্ট ১৩ কেজি কমিয়েছি। এখন আবার ২ কেজি ওয়েট বেড়েছে। মানে এখন ৮০ কেজি আর কি।

 

ভক্তদের ধারণা সিনেমার জন্যই এই ওজন কমিয়ে ফেলা...

অনেকেই ভাবছেন সিনেমার জন্য কমিয়েছি, তা নয়। তবে হ্যাঁ, আমার ওজন কমানোর প্রসেসের সঙ্গে ‘সুড়ঙ্গ’ ফিল্মের যে ক্যারেক্টার, সেটা ম্যাচ হয়ে গেছে। এই চরিত্রটির জন্য একটু স্লিম থাকতে হবে। এত বেশি হেলদি নয়। একটা প্রসেসের মধ্যে থাকা ভালো। যত স্লিম থাকা যায় ততই বেটার। ওয়েট গেইন করাটা ইজি, লুজ করাটা অনেক টাফ। ভালো লাগছে, অনেকেই ভাবছে যে, আমি ফিল্মের জন্যই ওয়েট লুজ করছি। এটা অব দ্য রেকর্ডই রাখি।

 

ছোট পর্দায় থেকে ওটিটি, দীর্ঘ ২৩ বছরের জার্নি। এত বছর পর কেন মনে হলো যে, বড় পর্দায় কাজ করা উচিত?

সর্বদাই ইচ্ছা ছিল বড় পর্দায় কাজ করব। সবচেয়ে সহজ গল্পে কাজ করতে চেয়েছিলাম। ‘সুড়ঙ্গ’ তেমনই। তবে প্রতিটি কাজই চ্যালেঞ্জ ফিল করি। যেহেতু ফিল্ম, তাই এতে বাড়তি অ্যাফোর্ড অবশ্যই থাকবে। যদিও বৃদ্ধ বয়সে সিনেমায় নামার চেষ্টা করছি... হাহাহা। সবার দোয়া ও সাপোর্ট চাই। ৫ মার্চ থেকে সিলেটে শুটিং। শুটিং শেষে আরও ভালো অভিজ্ঞতা জানাতে পারব।

 

অনেক প্রথমের সঙ্গে যুক্ত হলেন...

সেটা ঠিক। প্রথমবার আমি বড় পর্দায় কাজ করছি। অন্যদিকে তমার সঙ্গে আমার প্রথম কাজ, রাফীর সঙ্গেও প্রথম। আলফা আইয়ের শাহরিয়ার শাকিলসহ বড় পর্দায় সবার সঙ্গেই আমার প্রথম কাজ। আসলে এতগুলো প্রথমে একটু রিস্ক থাকে। যেহেতু সবই হার্ড ওয়ার্কিং, ডেডিকেটেড। ভালো কিছু হবে।

 

তিন-চার দিন পরই শুটিং শুরু। প্রস্তুতি কেমন?

আমার সবসময় প্রিপারেশনটা শুরু হয় গল্প ভাবনা থেকে। তারপর স্ক্রিপ্ট থেকে প্রিপারেশন নিতে আমি পছন্দ করি। সো, স্ক্রিপ্ট এখনো ড্রাফট চলতেছে আমাদের। লাস্ট দুই দিন আগে আমরা ফাইনাল ড্রাফট পাইছি। খুব বড় হয়ে গিয়েছিল, শর্ট করা হয়েছে। আবার একটু অন্যভাবে ভাবা হচ্ছে।

 

গল্পে নিশোকে কি সুড়ঙ্গ খননকারী শ্রমিক হিসেবে দেখা যাবে?

আমার চরিত্র তো হলে গিয়ে দেখতে হবে। চরিত্র নিয়ে কি বলব! রাফী এই গল্পটা আমার সঙ্গে অনেক আগেই শেয়ার করেছিল। যখন জানতে পারি এটা ফিল্ম আকারে আসছে, তখন থেকেই একটা মনস্তাত্ত্বিক প্রিপারেশন ছিল। যেহেতু ‘সুড়ঙ্গ’, মাটির নিচে যাইতে হবে। এ জন্য হয়তো একটু সময় লাগছে। ফাইনালি মার্চের ফার্স্ট সপ্তাহে শুটে যেতে পারছি। 

 

বড় পর্দায় প্রথমবার, কতটা চ্যালেঞ্জিং মনে করছেন?

আমার কাছে প্রত্যেকটা কাজই চ্যালেঞ্জিং। তা বড় পর্দাই হোক কিংবা ছোট পর্দা। যখন আমরা অভিনয় করি, অভিনেতাদের কাছে সব কনটেন্টই এক। আমার অনেস্টি একই রকম থাকবে। হ্যাঁ, এখানে কিছুটা সুবিধা পাব। আমি বিগ অ্যারেঞ্জমেন্ট শুটিং করতে পারব। প্রোডাকশন টিমটাও বড়। এটা আমাকে অনেক হেল্প করবে। আসলে প্রতিটি  প্রোডাকশনই আমার কাছে চ্যালেঞ্জিং। যে কোনো কাজ করতে গেলেই আমি নার্ভাস হই। প্রত্যেকটা কাজেই ভাবতে হয়। যেহেতু এটা ফিল্ম, আমার চেষ্টা থাকবে একটু বেশি ইফোর্ট দেওয়ার। একই সময় রিলাক্স থাকারও চেষ্টা করি।

 

বড় পর্দায় কাজ বেড়ে গেলে ছোট পর্দার কাজ কি কমিয়ে দেবেন?

আমি কখনো একটা ছেড়ে দিলাম, আরেকটায় ঢুকে গেলাম-এরকম নই। আমি একসময় মডেল ছিলাম, তারপর টিভি নাটকে কাজ করেছি, ওটিটিতে কাজ করেছি, এখন হয়তোবা ফিল্ম নিয়ে ভাবছি। প্রত্যেকটা ডিফারেন্ট প্ল্যাটফরম। মানুষ যখন একটা প্ল্যাটফরমে অনেক বেশি কাজ করে তখন অন্য প্ল্যাটফরম নিয়ে তেমন করে চিন্তা করতে পারে না। যদি আমার সিনেমার ক্ষেত্রে ব্যস্ততা বেড়ে যায় তাহলে অন্য প্ল্যাটফরমকে বাদ দেওয়ার ধৃষ্টতা আমার নেই। আমি নাটক কখনো অফ করতে পারব না। তবে একটু কম কাজ হবে আর কি। কিন্তু যদি ফুলটাইম জুড়ে ফিল্মে কাজ করে নিজেকে প্রমাণ করতে পারি তাহলে হয়তোবা ফিল্মে সময় বেশি দেওয়া হবে। অন্য প্ল্যাটফরমে কাজ কমিয়ে দিতে হবে।

 

নাটকের মান কি ঠিকঠাক জায়গায় রয়েছে?

নাটকের মান ক্রমান্বয়ে ভালোই হচ্ছে। নাটক অনেক ভালো জায়গায় আছে। খুবই সুন্দর সুন্দর নাটক হচ্ছে। কিন্তু সংখ্যাটা বেশি হচ্ছে বলে ভালো নাটক আলাদা করতে পারছি না। এটা আসলে এরকম যে, সপ্তাহে আমরা এক দিন বিরিয়ানি খাইতাম। সো, বিরিয়ানির একটা টেস্ট পাইতাম। কিন্তু লাইফস্টাইল যদি আপগ্রেড হয়ে যায় তখন প্রত্যেক দিন বিরিয়ানি খাইলে বিরিয়ানির সেই টেস্ট আর পাওয়া যায় না। তখন ডাল-ভাত খুব ভালো লাগে। তখন আমরা সেই পুরনো দিনের কথা বলি।

 

নাটকের কাজ কমিয়ে দেওয়ার কারণ কী?

প্রায় ছয়-সাত মাস নাটকে কাজ করিনি। আমার কাছে মনে হচ্ছিল যে, এভরি সিঙ্গেল ডে আমি দৌড়াচ্ছি। প্রত্যেক দিন কাজ করছি। সো, আমার ব্রিদিং স্পেস ছিল না। আসলে লাইফে একটা সময় একটু স্থির হতে হয়। সো, একটা পজ দেওয়ার দরকার ছিল। দ্যাটস হোয়াই একটা পজ নিয়েছি। ফলে আমার মনস্তাত্ত্বিক জায়গায় একটা পরিবর্তন এসেছে।

 

ওটিটিতে কাজ করার সময়ও এই পরিবর্তন চোখে পড়েছে?

যখন কাইজার করি বা সিন্ডিকেট করি বা ওটিটি প্ল্যাটফরমের কাজগুলো যখন করি, তখনো আমার মধ্যে একটা পরিবর্তন ঘটছে। দীর্ঘ সময় ধরে একটা কাজ করার মজাটা অর্থাৎ ২০ দিন ধরে যখন আমি একটা চরিত্র লালন করে আসছি-সেখান থেকে বের হয়ে আসতে আমার একটু কষ্টই লাগে।  সেই চরিত্রকে অনেক মিস করি।

সর্বশেষ খবর