বর্তমান ব্যস্ততার কথা শুনতে চাই?
এখন টিভি চ্যনেলের লাইভ অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতা মূলক অনুষ্ঠানে বিচারক, দেশে বিদেশে স্টেজ শো ইত্যাদি নিয়েই মূলত ব্যস্ত আছি। আজ থেকে ঢাকায় সাউথ এশিয়ান মিউজিক শো শুরু হচ্ছে। এতেও অংশ নিচ্ছি। এইতো এভাবেই ব্যস্ত সময় পার হচ্ছে।
আপনার দৃষ্টিতে সংগীতের বর্তমান অবস্থা কেমন?
গীতিকার ও সুরকার এই দু'য়ের মধ্যে যদি সমন্বয় না থাকে, তবে সেই সৃষ্টি থেকে বিরত থাকা উচিত। এখন সুরকারদের ওপর নির্ভর করে গান লিখতে হয়। আগে এটা ছিল না। এখন গায়ক ও সুরকারের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। তাছাড়া সংগীত হচ্ছে গুরুমুখী বিদ্যা। বর্তমানে এ বিষয়টিকে কেউ প্রয়োজন মনে করে না। এ কারণেই এখনকার গান ও শিল্পীদের স্থায়িত্ব কম। গানের সুদিন ফিরিয়ে আনতে সব অব্যবস্থা দূর হওয়া দরকার।
একজন শিল্পীর সামাজিক দায়বদ্ধতা কতটুকু?
শিল্পীর দায়বদ্ধতার শেষ নেই। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় শিল্পীরা তাদের পরিবেশনার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করেছিল। শুধু মুক্তিযুদ্ধের সময়ে নয়, দেশের যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে শিল্পীরা এসে পাশে দাঁড়ায়। উভয়ে দেশকে সমৃদ্ধ করতে এক কাতারে এসে কাজ করে। অন্যদিকে বাংলা সংগীতকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা এবং পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ভালো শিল্পী খুঁজে বের করার দায়িত্ব সিনিয়র শিল্পীদেরই। তাই ২০০৩ সাল থেকে বিভিন্ন সংগীত প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি।
কবে নাগাদ আপনার নতুন অ্যালবাম বাজারে আসবে?
দীর্ঘদিন ধরে 'শ্রীমতি' শিরোনামের একটি নতুন অ্যালবামের কাজ করছি। শীঘ্রই অ্যালবামটি বাজারে আসবে। পুরো অ্যালবামটিই মেলোডি ধাঁচের গান নিয়ে সাজানো। ১২টি গান সংবলিত এ অ্যালবামের সুর ও সংগীত আয়োজন করছেন বাসুদেব ঘোষ।
বর্তমান অডিও শিল্পের অবস্থা কেমন?
অডিও শিল্পের অবস্থা মৃতপ্রায়। ইন্টারনেটের সাহায্যে গান ডাউনলোড, পাইরেসিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এখন এই শিল্প। এ অবস্থায় কোনো প্রতিষ্ঠিত শিল্পীরই নিজের অর্থ খরচ করে অ্যালবাম প্রকাশের ইচ্ছা থাকার কথা নয়। অধিকাংশ তরুণ শিল্পীই আজ নিজের টাকা খরচ করে অ্যালবাম বাজারে আনছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
আপনার পুরনো জনপ্রিয় গান নিয়ে কোনো অ্যালবাম করার পরিকল্পনা আছে?
আপাতত নেই। একটি অ্যালবাম করতে পাঁচ-ছয় লাখ টাকা ব্যয় হবে। অডিও পাইরেসির কারণে খরচের টাকা ফেরত আসার সম্ভাবনাও নেই। শিল্পীরা সত্যিই আর্থিকভাবে বিপর্যস্ত হচ্ছেন। তাই দিন দিন অ্যালবাম বের করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
রিয়েলিটি শো থেকে অনেক শিল্পী খুঁজে বের করা হচ্ছে, কিন্তু তাদের অনেকেই এখন সংগীতের সঙ্গে নেই। এ বিষয়ে কিছু বলবেন?
আমাদের দায়িত্ব সম্ভাবনাময়ী শিল্পীদের খুঁজে বের করা। কিন্তু শিল্পীকে তো নিজের যোগ্যতায় টিকে থাকতে হবে। অধিকাংশ নবীন শিল্পী নিজের যোগ্যতা প্রমাণে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই তারা টিকছে না।
নতুনদের জন্য কোনো উপদেশ আছে?
শিল্পী একদিনেই হয় না। মানুষের কণ্ঠ জন্মগতভাবে পাওয়া। তারপরও নিয়মিত সংগীতচর্চার পাশাপাশি চেষ্টা ও আত্মবিশ্বাস থাকলে যে কারও পক্ষেই সাফল্য অর্জন করা সম্ভব। নবীন শিল্পীদেরও গান নিয়ে সাধনা করতে হবে।
* শোবিজ প্রতিবেদক