আগামীকাল নজরুল জন্মজয়ন্তী। নজরুল সংগীত শিল্পী হিসেবে দিনটি কীভাবে কাটাবেন?
গান গেয়েই দিন চলে যাবে। আমাদের দেশে চ্যানেল আই একমাত্র নজরুল মেলা করে আসছে। এ মেলায় অংশ নেব। একজন নজরুল সংগীত শিল্পী হিসেবে মনে হয়, চ্যানেল আই ভালো একটি কাজ করছে। এ যুগে এসে আমরা আমাদের প্রাণের কবিকে হারিয়ে ফেলছি। নাগরিক ব্যস্ততার মাঝে তাই নজরুল মেলা চমৎকার একটি উদ্যোগ।
দেশে নজরুল চর্চা কেমন হচ্ছে?
অনেকে নজরুল সংগীত চর্চা করছেন। নজরুলের গানে যে বৈচিত্র্য তা হৃদয়ে ধারণ করছেন। তবুও বলব, নজরুল চর্চা আরও বেশি হওয়া উচিত।
একটা কমোন অভিযোগ আছে, জন্মদিন এবং মৃত্যুদিন এলেই আমরা রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকে স্মরণ করি। আপনি বিষয়টা কীভাবে দেখেন?
কথাটা একেবারে মিথ্যা না। কিছুদিন আগে আমি 'বিশ্ব অঙ্গনে নজরুল সংগীত' শীর্ষক একটি সেমিনারে গিয়েছিলাম। এ সেমিনারের মূলত ভাষ্য ছিল- আমাদের দেশের মিডিয়ার নজরুল সংগীতের প্রসারের ক্ষেত্রে কম আন্তরিকতা থাকার কারণেই বিশ্ব অঙ্গনে নজরুল সংগীত সেভাবে প্রতিষ্ঠিত নয়। তবে আমি মনে করি, আমাদের দেশের সব মিডিয়া বিশেষ করে স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলো যদি এগিয়ে আসে, তবে বিশ্ব অঙ্গনে নজরুল সংগীতের অবস্থান আরও অনেক বেশি দৃঢ় হতে পারে। আমাদেরই জাতীয় কবির সম্মান আরও অনেক বাড়বে। বর্তমানে আমাদের দেশে কয়েকটি টিভি ছাড়া এখন নজরুলের কোনো অনুষ্ঠানই হয় না।
এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কি?
আমার একটি কষ্টের কথা বলি। আমি যখন বঙ্গ সম্মেলনে গান করতে গিয়েছিলাম, তারা আমাকে গান করার জন্য সময় দিয়েছিল ১০ মিনিট। আমি আমার নির্দিষ্ট সময়ে শুরু করি এবং নির্দিষ্ট সময়ে শেষ করি। আমি যখন গান শেষ করে চলে আসছিলাম তখন সবাই আমাকে আরও ৩০ মিনিট গান করার জন্য অনুরোধ করে। আমি গল্পটা এই কারণে বললাম, কারণ তারা জানত না, আমি বাংলাদেশে নজরুল সংগীতের জন্য কী করেছি। আমাদের প্রচারণা যদি ভালো হতো তবে আমার নিজেকে নিজের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার হতো না।
আমাদের জীবনচর্চায় নজরুলকে কীভাবে রাখা যায়?
নজরুলের সৃষ্টি তো আমাদের মধ্যে একটা বোধ তৈরি করে। সেই বোধ থেকেই জীবনটাকে বিচার করা যায়। তাহলে জীবন আরও সুন্দর হবে।
একটু পেছনের গল্প বলুন। গানের ভুবনে আসার গল্পটি বলুন?
আমি তখন চট্টগ্রামে। প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। সে সময় গান শেখার জন্য আমার বড় তিন বোন সংগীত পরিষদে যেতেন। তারা গান করতে গেলেও আমি যেতাম খেলতে। কিন্তু খেলাটাকে পণ্ড করে আমি একমনে জানালার গ্রিল ধরে তাদের নাচ দেখতাম ও গান শুনতাম। আস্তে আস্তে গান শেখা শুরু হলো। স্কুলের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় প্রথম হতাম। এরপর চলে এলাম রাজশাহী। আপুরা গান শিখতেন আর আমাকে বেশির ভাগ সময় নাচে ব্যস্ত রাখতেন। আর নাচে আমি কখনই দ্বিতীয় হইনি। এভাবেই বড় হওয়া। - শোবিজ প্রতিবেদক