রুবেল-হ্যাপির মামলা ইস্যুটি ইতিমধ্যেই স্মৃতির পুরনো খাতায় জমা পড়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে হ্যাপি যে আবার জিডি করেছেন সেটাও সবার জানা। কিন্তু নতুন খবর হলো, যে আপত্তিকর ছবি ও স্কাইপে কথাবার্তার কারণে হ্যাপি ফের জিডি করলেন তা অনেকেরই অজানা।
১৬ এপ্রিল মিরপুর থানায় নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়ে একটি জিডি [নম্বর ১০৫৬] দায়ের করেন হ্যাপি। এর পরপরই আবারও আলোচনায় চলে আসেন আলোচিত এই অভিনেত্রী। কেউ কেউ এ ঘটনাকে হ্যাপির স্ট্যান্ডবাজি বলে আখ্যা দেওয়া শুরু করেন। সমালোচকরা বলতে শুরু করেন প্রচারণার জন্য আবারও পাগলামি শুরু করেছেন হ্যাপি।
এ বিষয়ে হ্যাপি বলেন, আমার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের পুলিশ পরিদর্শক হালিমা খাতুন ফৌজদারি বিধান কোষের ১৭৩ ধারা মতে চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেন। পরে আমার আইনজীবী তুহিন হাওলাদার ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে ওই চূড়ান্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে বাদী হিসেবে আদালতে না-রাজি আবেদন দাখিল করার সিদ্ধান্ত নেই। এ খবর বিভিন্ন মিডিয়া ও লোকমুখে শুনে রুবেল ওই চূড়ান্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে না-রাজি আবেদন আদালতে দাখিল করতে আমাকে নিষেধ করেন।
এছাড়া আমাকে বিভিন্নভাবে একের পরে এক হুমকি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ এপ্রিল সন্ধ্যার পর ইনবক্সে আমার একটি আপত্তিকর ছবি রুবেল সেন্ড করেন। এরপর স্কাইপের মাধ্যমে ফোন করে রুবেল আমাকে ওই আপত্তিকর ছবির খবর জানায়। রুবেল আমাকে বলে, 'একটা ছবি দেইখা পাগল হইয়েন না। আরও বহুত [অনেক] কিছু আছে, ঠিক আছে। ভয় পাইয়েন না। করমু না [করব না] কিছু। আপনি যদি কিছু করেন তহন [তখন] কিন্তু খবর আছে। আমার [রুবেল] কোনো ধরনের ইনটেনসি নেই আপনার এ ধরনের ফালতু জিনিস মার্কেটে ছাইড়া দিমু। কিন্তু আমার ক্যারিয়ার, আমার লাইফ, আমার ফ্যামিলি সব কিছু শেষ করে দেবা আমি তাহলে বাঁইচা [বেঁচে] থাকব ক্যামনে। আপনি [হ্যাপি] শান্ত থাকেন। তাহলে আমি [রুবেল] আপনার যত ভিডিও আছে [অন্তরঙ্গ মুহূর্তের আপত্তিকর ছবি], পিক [পিকচার/ছবি] আছে এগুলো কোনো দিন কোথাও আপনি দেখবেন না।' রুবেল আমাকে আরও বলে, 'তবে কোনো কিছু করার আগে চিন্তা কইরা কথা বইলেন, ঠিক আছে। হুটহাট মাথা গরম কইরা নিজের ক্ষতিটা ডাইকা নিয়া আইনেন না। মানুষের কাছে অনেক শুনছি কিন্তু হ্যাপি। মানুষের কথা শুইনা কোনো কিছু কইরেন না। মান-সম্মানটা আর নষ্ট কইরেন না। আপনার [অন্তরঙ্গ মুহূর্তের আপত্তিকর ছবি] সব পাঠাইয়া দেতাছি আপনারে। আপনি দেখেন আর ডিলিট করেন, ঠিক আছে।' এছাড়া আপত্তিকর অনেক কথা বলে আমাকে হুমকি দিয়ে মিরপুর থানায় করা মামলার চূড়ান্ত রিপোর্টের বিরুদ্ধে আদালতে না-রাজি আবেদন দিতে নিষেধ করে। আমার কাছে রুবেল হোসেনের সেই হুমকির কথোপকথন রেকর্ড আছে। যা ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে। অডিও লিংকটি শোনার পর হ্যাপি-রুবেলের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে কাদা ছোড়াছুড়ি। কেউ কেউ বলছেন, হ্যাপি আলোচনায় আসতে এ ঘটনা টেনে নিয়ে এসেছেন। কেউবা বলছেন, রুবেলের উচিত হয়নি বিশ্বকাপের পর দেশে ফিরে হ্যাপির সঙ্গে স্কাইপে বা ফোন করে আবারও কথা বলা। তাদের মতে, রুবেল এখন ন্যাশনাল হিরো। ইতিমধ্যে মামলাও চলছে তার নিজস্ব গতিতে। সুতরাং হ্যাপিকে ফোন করে আবারও পুরনো বিষয়কে নাড়া দেওয়া উচিত হয়নি তার। স্কাইপে এবং ওইসব ছবিতে অন্তরঙ্গের কথা বলছেন, তাহলে কি স্বেচ্ছায় ছবিগুলো তোলা হয়েছিল? এ বিষয় হ্যাপি বলেন, দেখুন ওই সময় আমি জানতাম না যে, রুবেল আমাকে বিয়ে করবে না। বলতে পারেন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে বেশ কিছু ছবি তুলেছে। কিছু ছবি রয়েছে যা প্রকাশের অযোগ্য। এমনকি ঘুমানো অবস্থায়ও আমার ছবি তুলে রেখেছে। আর এখন সেগুলো অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।
সম্প্রতি মিরপুর থানায় দায়ের করা জিডি প্রসঙ্গে হ্যাপি বলেন, বর্তমানে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারছি না। আমি এ ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে চাই।