মিলা ইসলাম। নামটি শুনলে নিমিষেই কয়েকটি গান মনে বেজে ওঠে। 'রূপবানে নাচে কোমর দুলাইয়া', 'বাপুরাম সাপুরে' কিংবা 'দোলা দে রে পাগলা'। গানগুলো কষ্ট করে মনে করতে হয় না। আর এর থেকেই মিলার জনপ্রিয়তা আন্দাজ করা যায়।
মিলার সঙ্গে বর্তমান সময়ের বাংলা গান দুভাবে জড়িত। এক. নারী কণ্ঠের ভাটার সময়ে তিনি জোয়ার নিয়ে এসেছেন। দুই. বাংলার গান যখন প্রায় রুগ্ন, তখন তার গানগুলো রুগ্ন শরীরে স্যালাইন হয়ে এসেছে। দুটি সুন্দর উপমা দেওয়া হলো মিলাকে। এবার বিষাদের পালা। আর বিষাদের গল্পের মূল বিষয় মিলার দীর্ঘ ডুব। অনেকে তার এই ডুবকে অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া বললেও, আমরা আড়ালে চলে যাওয়া বলতে চাই। কোনো শিল্পী সম্পর্কে এভাবে বলাটাই সম্ভবত 'সুন্দর'। টানা পাঁচ বছর- অর্থাৎ ১৮২৫ দিন। চাট্টিখানি কথা নয়। এতগুলো দিন তিনি ভক্ত-শ্রোতাদের সঙ্গে সম্পর্কহীন ছিলেন। কোনো গান নেই, কনসার্ট নেই। মানে মিলাই নেই।
মিলা নেই... মিলা নেই... এখন মিলা আছে। ঈদে প্রকাশ হয়েছে তার নতুন পাঁচটি গান। গানগুলো ভিডিও আকারে প্রকাশ হয়েছে। সঙ্গে ৯০ মিনিটের একটি তথ্যচিত্র। জি-সিরিজ থেকে প্রকাশিত এই অ্যালবামের শিরোনাম 'আনসেন্সরড'। অ্যালবামের গানগুলোর শিরোনাম- 'ঈশ্বর', 'নাচো', 'টোনা', 'আনমনা' এবং 'অ্যাই সালা'। এরই মাঝে মিলা ভক্তদের মাঝে গানগুলো ছড়িয়ে গেছে।
নিজের 'ডুব' নিয়ে মিলার বক্তব্য বেশ সোজাসাপটা। অবশ্য তিনি সবসময়ই স্ট্রেইট ব্যাটে খেলেন। মিলা জানান, যেহেতু গান নেই, তাই অযথাই টেলিভিশন-রেডিও-পত্রিকায় উপস্থিত থাকতে চাননি তিনি। কাজ ছাড়া এভাবে নিজেকে জাহির করার পাত্রী তিনি নন। অপেক্ষায় ছিলেন নতুন কিছু নিয়ে শ্রোতাদের সামনে আসতে। এখন এসেছেন, তাই চেহারাও দেখাচ্ছেন, কথাও বলছেন।
মিলা 'ডুব' দিয়েছিলেন। তাই বলে ঘুমিয়ে ছিলেন না। কাজ করছিলেন। আর সেই কাজেরই সুফল 'আনসেন্সরড' অ্যালবাম। নিজের মতো করে গানগুলো তৈরি করেছেন। নিজেই নিজের গানগুলো করেছেন এবার। লিখেছেনও। তাই সময়ও বেশি লেগেছে।
মিলা এখন 'ধীরে বহে মেঘনা'র মতো আস্তে আস্তে এগুচ্ছেন। আর এ নিয়ে তার ভাষ্য- 'গত পাঁচ বছরে আরও অনেক গান করতে পারতাম। করিনি। অনেক অনুরোধ ছিল। আসলে আমি আমার গানকে সহজলভ্য করতে চাইনি মোটেও।' তাই বলে না পাঁচ বছরে মাত্র পাঁচটি গান! না। দশটি গান তৈরি আছে তার। বাকি পাঁচটি গান নিয়ে আসছে কোরবানির ঈদে নতুন অ্যালবাম প্রকাশ হচ্ছে। শেষ খবরটি মিলা ভক্তদের জন্য 'ঈদ বোনাস'।