‘না’ থেকে ‘হ্যাঁ’ বলতে কলকাতার অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়ের সময় লাগল পাঁচদিন। পুলিশি জেরায় মুখে অবশেষে বিক্রম স্বীকার করলেন, দুর্ঘটনার রাতে তিনি মদ পান করেছিলেন।
এর পাঁচ দিন আগে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন বিক্রম। সেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, ২৮ এপ্রিল রাতে তিনি পান করেননি তিনি। এমনকী দুর্ঘটনার পরপরই হাসপাতালে থাকাকালীনও বিক্রমের সঙ্গে পুলিশের যেটুকু কথা হয়েছিল, সেখানেও এই দাবিই উঠে এসেছিল। যদিও প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য বলছিল অন্য কথা।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবর, অবশেষে মঙ্গল-বুধবার মিলিয়ে ৭ ঘণ্টারও বেশি জেরার মুখে বিক্রম স্বীকার করলেন, দুর্ঘটনার আগে মদ তিনি পান করেছিলেন, তবে মাতাল ছিলেন না। এবং একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর যে ছবি এবং ভিডিও নিয়ে এত বিতর্ক হচ্ছে, সেখানে তাঁর হাতে ধরা গ্লাসে মোটেই মদ ছিল না।
কলকাতা পুলিশের অফিসাররা যদিও মনে করছেন, ‘‘বিক্রমের স্বীকারোক্তিতে এখনও কিছু অসঙ্গতি রয়েছে।’’ শীঘ্রই বিক্রমকে ফের জেরা করা হতে পারে।
খবরে আরও বলা হয়, দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটল, তা নিয়েও এ দিন একটি নতুন ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিক্রম। দুর্ঘটনার পরে তিনি বলেছিলেন, বাঁ দিকের গলি থেকে একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে এসে তাঁর গাড়িকে চেপে দেয়। সিসিটিভি ফুটেজে অবশ্য তেমনটি ধরা পড়েনি। মঙ্গলবারের পর থেকে জেরায় বিক্রম একাধিক বার বলেছেন, ট্রামলাইনে গাড়ি ‘স্কি়ড’ করে যাওয়ায় ফুটপাথের পাশের স্তম্ভে ধাক্কা লেগেই নিয়ন্ত্রণ হারান। নিজে আহত হন, মারা যান তাঁর সঙ্গিনী জনপ্রিয় মডেল সনিকা সিংহ চৌহান।
লালবাজার সূত্রের খবর, বিক্রমের বয়ানে পুরো সন্তুষ্ট নন তদন্তকারীরা। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর বিক্রম ‘মনে নেই’ বলে এড়িয়ে গেছেন। তবে সনিকা এবং বিক্রমের এক বন্ধুকে জেরা করে সে দিনের রাতের ঘটনাক্রম নিয়ে মোটামুটি একটা ধারণা হয়েছে পুলিশের।
মঙ্গলবার রাত থেকে মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে অভিনেতা বিক্রমকে দু’দফায় জেরা করেন টালিগঞ্জ থানার তিন অফিসার। মঙ্গলবার রাত সোয়া একটার দিকে থানা থেকে বের হওয়ার সময় কোনো মন্তব্যই করতে চাননি বিক্রম। তাঁর চোখেমুখে ছিল একরাশ বিরক্তি। তাঁকে কড়া পুলিশি পাহারায় থানার বাইরে এনে গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। বুধবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে বাবা এবং আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে ফের থানায় হাজির হন তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/১১ মে, ২০১৭/মাহবুব