বলিউডের ত্রিকোণ প্রেমের ছবি 'পেরেশান পারিন্দা' ছবিতে অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের সাদিয়া নাবিলা। ছবিটির জন্য হিন্দি শিখতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে সাদিয়াকে। গত ২৮ মার্চ ভারতজুড়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি মুক্তি পায়। এরপর থেকে সবাই সাদিয়াকে বাহবা দিচ্ছেন।
২০১২ সালে অস্ট্রেলিয়ায় পড়তে যান বাংলাদেশের সৈয়দপুর উপজেলার এ তরুণী। তথ্য প্রযুক্তির ওপর ব্যাচেলর শেষ করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ক্যানবেরা থেকে। বর্তমানে ক্যানবেরা বলিউড ডান্স স্কুলে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন।
বাংলাদেশি মেয়ে চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারই শুরু করেছেন বলিউড দিয়ে। ক্যারিয়ার ভাবনা ও সমসাময়িক অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে সাদিয়া কথা বলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে।
বাংলাদেশি ছবিতে কাজ করবেন কী না জানতে চাইলে সাদিয়া বলেন, ভালো কাজ পেলে অবশ্যই করবো। বাইরের কাজের চাইতে দেশের কাজের প্রতি টানটা আরও অনেক বেশি কাজ করে। দেশে অনেক পরিশ্রমী অভিনয় শিল্পী আছেন। তাদের বিপরীতে ভালো কাজ পেলে অবশ্যই করবো। এমনকি দেশমুখী হতেও দ্বিধাবোধ করবো না। তবে সব কিছুই কাজের মানের পর নির্ভর করছে।
২০১৭ সালে 'মিস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ড ওয়াইড' প্রতিযোগিতায় প্রথম রানার আপ নির্বাচিত হন সাদিয়া। মূলত সেখান থেকেই বলিউডের ছবিতে কাজের সুযোগ পেয়ে যান। যেটা তার কাছে ছিল স্বপ্নের মতো। সম্প্রতি জিটিভির 'সুপারস্টার অস্ট্রেলিয়া শো'টা শেষ করেছেন। সেখানে সেরা দশে ছিলেন।
বাঙালি হওয়ায় আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় কাজ করতে গিয়ে কোনো বৈষম্য ও বাধার শিকার হতে হয়? এমন প্রশ্নে সাদিয়া বলেন, একদম না। এখানকার ভালো একটা দিক হচ্ছে এরা শুধু মেধাবীকেই প্রাধান্য দেয়। তবে এটা ঠিক যে এখানকার মিডিয়াতে জায়গা করে নেয়াটা একটু কঠিন। কারণ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মের চাহিদা অনেক বেশি।
'পেরেশান পারিন্দা' ছবিটি মুক্তির পর ভারত থেকে কিছু ছবির প্রস্তাব পেয়েছেন সাদিয়া। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি এখনো কিছুই জানাইনি। একটু ভাবতে হবে। কিছু সময়ের জন্য এখন আবার মডেলিং নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। মন মতো কাজ পেলে আবার অভিনয়ে ঢুকে পড়বো। সেটা দেশে হোক অথবা বাইরে।
ছোটবেলা থেকে অভিনয় ও মডেলিংয়ে আগ্রহ ছিল সাদিয়ার। তখন থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও মঞ্চে পারফর্ম করেছেন। সাদিয়া জানান, ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতির সাথে জড়িত তিনি।
৫ বছরে বয়সেই প্রথম মঞ্চে পারফর্ম করেন। তখন থেকেই বাবা-মা দু'জনই সব শো আর প্রতিযোগিতায় তাকে নিয়ে দৌড়াদোড়ি করতেন। ছোটবেলার স্মৃতি বলতে সব নাচ আর গানের একাডেমি সম্পর্কিত স্মৃতি। সংস্কৃতির সাথে ছিলেন, আছেন আর সব সময় থাকার ইচ্ছা আছে তার।
শুধু নাচ, মডেলিং বা অভিনয় নয়, সামাজিক কার্যক্রমেও সাদিয়া নিজেকে জড়াতে চান। তিনি বলেন, নিকট ভবিষ্যতে একটা এনজিও নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে। মানুষের জীবনে অনেক সময় এমন পরিস্থিতি আসে যখন তারা অনেক কষ্টে থাকে কিন্তু কাউকে কিছু বলতে পারে না। তাদের জন্য ইতিবাচক কিছু করার ইচ্ছে আছে। উদাহরণ- অজ্ঞাত পরিচয় থেকে তাদের কার্ডে কিছু ইতিবাচক কিছু লিখে পাঠাবো। সাথে থাকতে পারে কিছু ফুল, রঙিন নোট যা তাদের মন ভালো করে দেবে। আমার সাথে আরও মানুষ যুক্ত হওয়ার পর এই প্রজেক্টটাকে আরও বড় করবো।
বিডি প্রতিদিন/২৯ এপ্রিল ২০১৮/আরাফাত