শৈশব থেকে নাচে আগ্রহী ছিলেন নুসরাত উর্মি। মা-বাবার অনুপ্রেরণা তাকে নাচের সঙ্গে যুক্ত হতে সবচেয়ে উৎসাহিত করেছে। ধীরে ধীরে নাচের বিভিন্ন মুদ্রা রপ্ত করেছেন। তবে পরবর্তীতে ভারতীয় ধ্রুপদী নাচ উর্মির জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেছেন উর্মি।
২০১০ সালে কানাডায় পাড়ি জমানোর সময় উর্মির শঙ্কা ছিল, এই বুঝি নৃত্যশিল্পী হিসেবে তার পথচলা থেমে যাচ্ছে। তবে সেখানে গিয়ে নাচের সঙ্গে যুক্ত থাকার নানান উপায় ঠিকই খুঁজে বের করেন তিনি।
পেশায় শিক্ষক উর্মি কানাড়া প্রবাসী বাংলাদেশি সন্তানদের ধ্রুপদী নাচ শেখানো শুরু করেন। এর মাধ্যমে নিজের নৃত্যশিল্পী সত্তাকে অক্ষুণ্ন রাখেন। মহামারির শুরু থেকে জুমনির্ভর হয়ে পড়েছে তার প্রশিক্ষণ। তবুও খুশি উর্মি। অন্তত নৃত্যকলা সম্পর্কে তার জ্ঞান-অভিজ্ঞতা তরুণদের সঙ্গে বিনিময় করতে পারছেন।
উর্মি ভাষায়, ‘নাচ ছাড়া জীবন আমি কল্পনাই করতে পারি না।’
ভরতনাট্যম, কাত্থক ও মণিপুরির মতো ভারতীয় ধ্রুপদী নাচ থেকে শুরু করে বাংলাদেশের লোকজ ঐতিহ্যের সাপুড়ে নাচে পারদর্শিতা অর্জন করেছেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী উর্মি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উৎকর্ষতার জন্য ‘ব্লু ব্লেজার’ সম্মাননা পেয়েছেন। এ ছাড়া দুই দফায় স্বর্ণপদক পেয়েছেন। তবে নিজের অর্জন নিয়ে কোনো অহমিকা নেই উর্মির। দুই দশকের বেশি সময়ে ধরে শিখছেন তিনি, এখনো শিখতে চান। শেখা, নাচ পরিবেশন করা এবং শেখানোর মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতাকে আরও শানিত করতে চান তিনি।
নাচের সৃজনশীলতার সংযোগ ও ফিউশনের মাধ্যমে নিজের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা বাড়াতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন উর্মি। নাচে অভিনবত্ব ও ফিউশনের ছোঁয়া আনতে এখন সাহয্য নিচ্ছেন ভারতের কলকাতার বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার তনুশ্রী শংকরের।
চলতি বছরের প্রথমদিকে কলকাতা সফরের পরিকল্পনা ছিল উর্মির। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনতে হয়েছে। তবে থেমে নেই নাচকে ঘিরে কর্মকাণ্ড। মিউজিক ভিডিও নির্মাণে মনোযোগী হয়েছেন উর্মি। কানাডার অপরূপ, নৈসর্গিক স্থানগুলোতে বেশ কয়েকটি মিউজিক ভিডিও বানিয়েছেন দিপংকর দত্তের কোরিওগ্রাফিতে। ক্যামেরায় ছিলেন উর্মির স্বামী। এমন একটি ভিডিওতে শাড়ি পরিহিত উর্মিকে বরফের মাঝে নাচকে দেখা যায় আবৃত্তির তালে তালে। কানাডার বিভিন্ন নৈসর্গিক স্থান তুলে ধরা হয়েছে উর্মির মিউজিক ভিডিওতে।
মনোরোম স্থানে আরও কিছু মিউজিক ভিডিও ধারণের পরিকল্পনা আছে উর্মির। আর সুযোগ করে কলকাতায় গিয়ে নিজের প্রিয় শিক্ষকের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনা তার বহুদিনের স্বপ্ন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ