আগামী ২১ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে রফিক শিকদার পরিচালিত ‘বসন্ত বিকেল’ ছবিটি। এ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক হতে যাচ্ছে শাহ হুমায়রা সুবাহ’র। এই ছবি ও সমসাময়িক অন্যান্য ব্যস্ততা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে।
প্রশ্ন : বড়পর্দায় অভিষেক হচ্ছে, অনুভূতি কেমন?
সুবাহ : অবশ্যই ভালো লাগছে। প্রথমবার আমাকে বড় পর্দায় দেখা যাবে, এটা আমার জন্য অনেক আনন্দের। একদিকে যেমন এক্সাইটমেন্ট তেমনি টেনশনও কাজ করছে। শোবিজে যারা মডেলিং, মিউজিক ভিডিও ও নাটকে কাজ করেন তাদের প্রত্যেকেরই স্বপ্নের জায়গা চলচ্চিত্র। আমার স্বপ্ন ছিলো চলচ্চিত্রে কাজ করার। দর্শকের ভালোবাসা পেলে সেই স্বপ্নের পথে বহুদূর যেতে চাই। সামনে আরও ভালো ভালো কাজ উপহার দিতে চাই দর্শকদের।
প্রশ্ন : বসন্ত বিকেল ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা...
সুবাহ : চলচ্চিত্রে নতুন হিসেবে ‘বসন্ত বিকেল’ ছবিতে আমার কাজের অভিজ্ঞতা এক কথায় দারুণ। ফিল্মে নতুন হলেও পুরো টিমের পূর্ণ সহযোগিতা পেয়েছি। যখন যা দরকার হয়েছে বা চেয়েছি তাই পেয়েছি। শুটিংয়ের বাইরেও আমরা পুরো ইউনিট একটি পরিবারের মতো ছিলাম। যেখানেই শুটিং করতে গিয়েছে, সেখানকার মানুষের চলচ্চিত্র ও তারকাদের নিয়ে অন্যরকম একটা উন্মাদনা দেখেছি। পাবনাসহ উত্তরবঙ্গে শুটিং করতে গিয়ে সেখানের মানুষের আতিথেয়তা মুগ্ধ হয়েছে। তারা আমার সিনেমা দেখার আগেই, শুটিং দেখতে এসে ভক্ত হয়ে গেছে। ইউনিটের কাছে ডাব ও খেজুরের রস চেয়েছিলাম, পরে দেখলাম সেখানের স্থানীয়রাই ভ্যান ভর্তি ডাব আর খেজুরের রস নিয়ে হাজির। এই যে মানুষের ভালোবাসা আমার মনকে ছুঁয়ে গেছে।
প্রশ্ন : চলচ্চিত্র নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা?
সুবাহ : আমার শুরুটা মডেলিং দিয়ে তারপরে গান-মিউজিক ভিডিও ও নাটকে অভিনয় করেছি, তবে চলচ্চিত্রের প্রতি ভালো লাগা সবসময়ই ছিলো। অবশেষে সবার সাপোর্ট ও সহযোগিতায় সে লক্ষ্যে যাত্রা শুরু করেছি। প্রথম ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা ও সবার সাপোর্ট চলচ্চিত্রের প্রতি আরও ভালো লাগা তৈরি করেছে। মানুষের ভালোবাসাও কাছ থেকে দেখেছি, তাই সব কিছু মাথায় রেখে আসা আছে বাকিটা জীবন চলচ্চিত্রে কাজ করে কাটিয়ে দিতে চাই। এর পাশাপাশি সময় বিশেষ মডেলিং, মিউজিক ভিডিও ও অন্যান্য কাজও চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা আছে। তবে মেইন ফোকাসটা থাকবে ফিল্মে।
প্রশ্ন : ব্যক্তিগত জীবনের সংকট কাটিয়ে এখন কেমন আছেন?
সুবাহ : আমার ব্যক্তিগত জীবনের সেই ইস্যুগুলোর কারণে প্রচণ্ডভাবে ভেঙে পড়েছিলাম। খুবই বাজে অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে আমাকে যেতে হয়েছে। সব মিলিয়ে এরকম বাজে সময়কে পেছনে ফেলে এখন যেমন আছি- তা আমার জন্য আশীর্বাদ। চলচ্চিত্রের মানুষের সহযোগিতা, সবার ভালোবাসা, পরিবারের দোয়া ও আল্লাহর রহমতেই আমি কামব্যাক করতে পেরেছি। তবে খারাপ সময়ের সাথে লড়াই করে আমাকে ওভারকাম করতে হয়েছে, যা প্রত্যেকটা নারীর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
প্রশ্ন : শোনা যাচ্ছে, বিয়ের পাত্র খুঁজছেন...
সুবাহ : আসলে এখনই বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজছি বিষয়টা তেমন নয়। একটি অনুষ্ঠানে জানতে চাওয়া হয়েছিল বিয়ে করলে কেমন পাত্র চাই, জবাবে বলেছিলাম একটা কমপ্লিট প্যাকেজ চাই। হ্যান্ডসাম, টাকাওয়ালা আবার সেলিব্রেটি- যেমন সালমান খান। উনার মতো কেউ হলে বা উনি হলে তবেই বিয়ে করবো। তবে এখনই বিয়ে করতে চাই না, আপাতত আমার ক্যারিয়ারের প্রতি পূর্ণ ফোকাস থাকবে। আশা আছে, টানা দুই-চার বছর ফিল্ম নিয়েই ব্যস্ত থাকতে চাই। এরপর মনের মতো কাউকে পেলে বিয়ের কথা ভাববো।
প্রশ্ন : পাত্র শুধুই টাকাওয়ালা-সেলিব্রেটি-হ্যান্ডসাম, ভালো মানুষ নয় কেন?
সুবাহ : অবশ্যই তাকে ভালো মানুষও হতে হবে। আর আমি যেহেতু কমপ্লিট প্যাকেজের কথা বলেছি, অবশ্যই সেক্ষেত্রে মানুষটাকে অবশ্যই ভালো মনের অধিকারী হতে হবে। ভালো মানুষ এ বিষয়টাও থাকতে হবেই। আর বলিউড ভাইজান সালমান খানও কিন্তু একজন ভালো মানুষ। এ জন্য তার একটা আলাদা সুনামও রয়েছে।
প্রশ্ন : নতুন হিসেবে ফিল্মের সবার সহযোগিতা কেমন পেয়েছেন?
সুবাহ : যখন সিনেমায় আসি, তখন একসঙ্গে চার-পাঁচটা সিনেমা সাইন করে ‘বসন্ত বিকেল’ এর মধ্য দিয়ে কাজ শুরু করি। ছবিটির প্রযোজক-পরিচালক ও নায়কসহ টিমের প্রত্যেকেই যার যার নিজ জায়গা থেকে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তাদের সহযোগিতা থাকায় আমি কাজটা এনজয় করেছি। আর কয়েকটি সিনেমার ক্ষেত্রে মনে হয়েছিল, সেখানে অভিনয় করলে হয়তো ফাঁদে পড়তে হবে, সিনেমাগুলো শেষ পর্যন্ত না-ও হতে পারে- সেসব সিনেমা ছেড়ে দিয়েছি। এখন পর্যন্ত যাদের সঙ্গে কাজ করেছি, তারা প্রত্যেকেই পেশাদার। কাজের বাইরে অন্য কোন বিষয় আসেইনি। তাই কোনো বাজে অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়নি কখনো। বলতে গেলে ফিল্মে আমার শুরুর জার্নিটা বেশ ভালো ছিল।