১১ জুলাই, ২০১৯ ২০:৪৮

নামকরা স্কুল-কলেজের পিছনে ছুটবেন কেন?

রিয়াজুল হক

নামকরা স্কুল-কলেজের পিছনে ছুটবেন কেন?

রিয়াজুল হক

জহির খুলনার হ্যানে রেলওয়ে মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পায়। না, এটা তথাকথিত কোন নামকরা স্কুল ছিল না। ওই বছর একমাত্র জহির সেখান থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। 

জহিরের বাসার খুব কাছে ছিল খুলনা কলেজ। এখানে ভর্তি হবার জন্য অভিভাবক কিংবা শিক্ষার্থীদের লাইন লেগে থাকে না। অনেক নামকরা প্রতিষ্ঠানে যারা ভর্তি হবার সুযোগ পায় না, তারা এখানে ভর্তি হয়। কলেজ বাসার কাছে হলে ক্লাস করতে সুবিধা হবে, সময় নষ্ট হবে না, শিক্ষকদের সঙ্গে জহিরের আব্বা সহজে যোগাযোগ রাখতে পারবেন, এসকল চিন্তা করেই জহিরের খুলনা কলেজে ভর্তি হওয়া।

যাহোক, জহির এইচএসসি পরীক্ষায়ও জিপিএ-৫ পায়। তার সঙ্গে অন্য একজন সেই বছর কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। বুঝতেই পারছেন, উপরের দুইটি স্কুল/কলেজের ৭০ ভাগ কিংবা ৮০ ভাগ শিক্ষার্থীরা জিপিএ-৫ পায় না। প্রতি বছর দুই/এক জন করে সেখান থেকে জিপিএ-৫ পায়। কোন কোন বছর হয়তো কোন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পায়ও না। 

আমরা সকলেই জানি কোন শিক্ষার্থী যদি পঞ্চম শ্রেণিতে স্কলারশীপ পায়, অষ্টম শ্রেণিতে স্কলারশীপ পায়, এসএসসি/এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পায়, এরপর যদি ভালো কোন ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি না পারে, তবে তার পূর্বের সকল ভালো লেখাপড়ার ইতিহাস অনেকাংশে ব্যর্থ হয়ে যায়। জিপিএ-৫ এর সংখ্যার উপর ভিত্তি করে যদি প্রতিষ্ঠানের নামধাম নির্ধারণ করা হয়, সেই অর্থে উপরের দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিশ্চয় নামধামওয়ালা হবে না।

তবে সেখানে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে কেউ নম্বর কম পায় না, কোন শিক্ষার্থী একটু ভালো করলে শিক্ষরা আরেকটু চেষ্টা করে যাতে সেই শিক্ষার্থী আরও ভালো করে, কোন শিক্ষার্থী খারাপ করলে শিক্ষকরা নিজেরা তাদেল বাসায় চলে যায় এবং অভিভাবকদের বিষয়টা সম্পর্কে অবহিত করেন।

জহিরের খুব ইচ্ছা ছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়ার। আর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ দেশের অত্যন্ত নামকরা প্রোগ্রাম, এটা অনেকেই জানেন। এইচএসসি পাশ করার পর সে সেইভাবে প্রস্তুতি নিতে থাকে এবং ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েই সে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ’তে চান্স পায়।

এখন আপনারাই বলেন, নার্সারি/প্লেতে আপনার সন্তান কয়টি বই পড়ত, কোন প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি/এইচএসসি পাশ করেছে, এটা কি কোন গুরুত্ব বহন করে? মূল বিষয় হচ্ছে, লেখাপড়া করা। সেটা আপনি যেখান থেকেই করেন না কেন, তাতে কিছু যায় আসে না।

লেখক: উপ-পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

বিডি প্রতিদিন/১১ জুলাই, ২০১৯/আরাফাত

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর