গতকাল একজনের সাথে চোখাচোখি হলো। আমি গাড়িতে বসে ছিলাম, আর সে বারবার গাড়ির সামনে দিয়ে ঘুরঘুর করছিল। তাকে দেখে আমার আর গাড়ি থেকে নামতে ইচ্ছা হলো না, আমাকে দেখে তার আর গাড়িতে উঠতে ইচ্ছা হলো না। আমার গাড়ির ঠিক পাশেই তার গাড়ি রাখা, না সে নিজের গাড়িতে উঠছে, নাতো আমার গাড়ির দিকে এগোচ্ছে।
সাত বছর; অনেক সময়! মানুষকে মানুষ থেকে দূরে নেওয়ার জন্য অনেক সময়। যেখানে সাত সেকেন্ডের ব্যবধানে সম্পর্ক বদলে যায়, সেখানে সাত বছর আসলেই অনেক সময়। নাহ; তার সাথে আমার কখনো প্রেম ছিল না, তার সাথে বন্ধুত্বও ছিল না। দেশের বাইরে কর্পোরেট মিটিং থেকে পরিচয়। তারপর কারণে, অকারণে বিভিন্ন বাহানায় কাছে আসার চেষ্টা। যখন বুঝতে পারলাম এসবই বাহানা তখন আমি আর বন্ধুত্বের হাতও বাড়াইনি। বন্ধুত্ব পবিত্র ব্যাপার, প্রেমের মতন নষ্ট এবং ঝামেলার ব্যাপার বন্ধুত্বে জড়ানো ঠিক নয়। তবে এতোবছর পর দেখা হওয়াতে মনের গভীরে কোথায় যেন একটা টান অনুভব করলাম, যে টান সেসময়ও ছিল না।
একটা সময় ছিল যখন আমাকে বিয়ে করার জন্য তার কতো অনুনয়, বিনয়, পাগলামি দেখেছি। হয়তো তাকে জীবনের অংশ বানাতাম; তবে খুব বেশি ধনীর দুলাল আমার কখনোই পছন্দ ছিল না। যখন তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার এই একটি মাত্র কারণ জানিয়েছিলাম, সে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। সেই একই বিস্ময়মাখা চাহনি আমি কাল রাতেও দেখেছি। ওই চোখজোড়ায় হাজারবার ছিল শুধু একটি প্রশ্ন “ভালো আছোতো?” সব থেকে অবাক হয়েছি যখন শুনলাম আমার সাথে থাকা মানুষটিকে সালাম দিয়ে সে জিজ্ঞাসা করেছে ভালো আছেন…।
রাত বাড়ছে। গাড়ি চলছে, চাকা ঘুরছে। বাড়ি ফিরতে ফিরতে নিজেকে প্রশ্ন করছি, “যদি এই মানুষটার সাথে প্রেম হতো, বিয়ে হতো, বিচ্ছেদ হতো…. তাহলেও কি এমন টান অনুভব করতাম? এখনতো মানুষ হিসেবে সম্মানটুকু আছে, তখন মনে হয় অমানুষের খাতায় তার নামটাও লিখতাম।”
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ