রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৩ ০০:০০ টা

গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত করছে

গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত করছে

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত করছে। তিনি বলেন, জনমতকে উপেক্ষা করে বর্তমান সরকার একতরফা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। কেবলমাত্র নিজেদের দাম্ভিকতা ধরে রাখতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্ব্বী না থাকায় তাদের বিজয়ী ঘোষণা ইতিহাসের ন্যক্কারজনক ঘটনা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে একগুঁয়েমি প্রত্যাহার করতে হবে। গতকাল সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে তিনি একথা বলেন। ড. মোশাররফ হোসেন আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের সমালোচনা করে বলেন, এর নাম কী গণতন্ত্র ? আর এই গণতন্ত্রের জন্যে কী আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণ দিয়েছেন? জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা কী এই জন্যে শহীদ হয়েছেন ? স্বৈরাচারী মনোভাব ত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের গণদাবি মেনে নিয়ে মহান বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের কবর রচনা করছে : শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় সরকারকে 'একতরফা নির্বাচনে'র পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির নেতারা বলেছেন, আওয়ামী লীগ 'একদলীয় নির্বাচন' করে গণতন্ত্রের কবর রচনা করছে। সরকারের উদ্দেশে তারা বলেন, এখনো সময় আছে, একতরফা নির্বাচনের খেলা বন্ধ করুন। নির্দলীয় সরকার দিয়ে দ্রুত বিদায় হউন। নইলে পরিণতি শুভ হবে না। নেতারা বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আজ সেই গণতন্ত্রকে আওয়ামী লীগ হত্যা করতে বসেছে।

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে গতকাল বিএনপি আলোচনা সভার আয়োজন করে। সকালে বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ. মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, খন্দকার মাহবুব হোসেন, শাহজাহান ওমর, ফজলুল হক মিলন, খায়রুল কবীর খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও বাক স্বাধীনতাকে বন্দী করে গণতন্ত্র চর্চা হয় না। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এদেশে সাহসী সন্তানরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু আজ এ সরকার গণতন্ত্রকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সংকট সৃষ্টির জন্য সরকারের একগুয়েমিকে দায়ী করেন তিনি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৭৫ সালে আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। এবার একতরফা নির্বাচনে ১৫১ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করার মধ্যদিয়ে দ্বিতীয়বার তারা (আওয়ামী লীগ) গণতন্ত্রকে হত্যা করল।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী দেশের গোলামির জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করিনি। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, মাথা উঁচু করে থাকবে। তাই আজ সময় এসেছে গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনের দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধে সবাইকে অংশ নেওয়ার।

চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মাহবুব হোসেন সরকারের উদ্দেশে বলেন, একদলীয় নির্বাচনের খেলা বন্ধ করুন। নইলে ১৭ ডিসেম্বরের পর আন্দোলনের যে পর্যায় শুরু হবে, তাতে আপনারা নিজেদের পতন ডেকে আনবেন। '৭১-এর ১৬ ডিসেম্বরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনী একদিন আত্দসমর্পণ করেছিল। নির্দলীয় সরকার দিয়ে পদত্যাগ না করলে এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই এই জালিম সরকারেরও পতন মঞ্চ তৈরি করা হবে।

 

 

সর্বশেষ খবর