শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

চলতি মাসেই প্রধানমন্ত্রীর আরও দুই সফর

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর থেকে গতকাল ফেরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলতি মাসেই আরও দুই দফায় বিদেশ সফর করবেন। তিনি ১৬ অক্টোবর দুই দিনের সফরে যাচ্ছেন ইতালি। ২৭ অক্টোবর যাবেন আরব আমিরাতে। প্রধানমন্ত্রী ইতালিতে এশিয়া-ইউরোপ মিটিং বা আসেমের সম্মেলনে যোগ দেবেন। বহুল প্রতীক্ষিত আমিরাত সফরে গিয়ে তিনি ভিসা সমস্যা মোচনের চেষ্টা করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সহযোগিতা গভীরতর করার উদ্দেশ্যে গঠিত জোট এশিয়া-ইউরোপ মিটিং বা আসেমের এবারের সম্মেলন ১৬-১৭ অক্টোবর হবে ইতালির মিলানে। দশম আসেম সামিটে ইউরোপের ২৭ ও এশিয়ার ১৬টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানরা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী লাওসে অনুষ্ঠিত আসেমের সর্বশেষ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে জোরালো ভূমিকা নিয়েছিলেন। জানা যায়, বাংলাদেশ আসেমের মতো এ ধরনের জোটকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ কারণে গত বছরও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের নেতিবাচক মনোভাব কাটানোর অব্যাহত প্রচেষ্টার আরেকটি উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্রও হতে যাচ্ছে এ সফর। কারণ বিশ্বের অনেক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এ সামিটে অংশ নিচ্ছেন। উত্তর আমেরিকার বলয়মুক্ত হয়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলো ১৯৯৬ সালে ‘আসেম’ গঠন করে। বাংলাদেশও বর্তমানে বলয়মুক্ত হয়ে মাথা উঁচু করার কূটনীতিই চর্চা করছে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০১২ সালে নবম শীর্ষ সম্মেলনে এ গ্রুপে যোগ দেয়। সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানদের অংশগ্রহণে শীর্ষ সম্মেলনে অর্থ, বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, দুর্যোগ মোকাবিলা, ইমিগ্রেশন, জলবায়ু পরিবর্তন, তথ্যপ্রযুক্তি; খাদ্য, পুষ্টি ও জ্বালানি নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, বিশ্বায়নব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সরকারি পর্যায়ে আলোচনার পাশাপাশি সদস্য দেশগুলোর আইনপ্রণেতা, ব্যবসায়ী ও সিভিল সোসাইটি নিজেদের মধ্যে মতবিনিময় করেন। অন্যদিকে, আরব আমিরাতে প্রধানমন্ত্রীর সফর আয়োজনের চেষ্টা চলছে চলতি বছরের শুরু থেকেই। এমনকি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রথম সফর হওয়ার কথা ছিল আমিরাতে। কিন্তু আমিরাতের শীর্ষ নেতৃত্বের কর্মব্যস্ততা এবং অন্যান্য জটিলতায় সফর আয়োজন সম্ভব হয়নি। তবে চেষ্টা চলছিল। কারণ দুবাইয়ের সঙ্গে ঢাকার যে টানাপড়েন তা শীর্ষ পর্যায়ের সফর ছাড়া দূর করা সম্ভব নয়। ওয়ার্ল্ড এক্সপো-২০২০ আয়োজনের ভেন্যু নির্ধারণে গত বছর হওয়া ভোটাভুটিতে বাংলাদেশ আমিরাতকে ভোট না দিয়ে রাশিয়াকে দেওয়ার পর থেকেই এ টানাপড়েনের শুরু। যদিও দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশ আমিরাতের পক্ষে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু মনঃক্ষুণ্ন আমিরাত কূটনৈতিক পাসপোর্ট ছাড়া বাংলাদেশিদের অফিশিয়াল ভিসাসহ অন্যসব ভিসা প্রায় বন্ধ করে দেয়। প্রবাসীরাও স্থানীয়ভাবে নানা ধরনের বৈরী আচরণের শিকার হতে থাকে। এ ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটাতেই প্রধানমন্ত্রীর সফর আয়োজনের চেষ্টা চলছিল। কিন্তু আমিরাতের পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পর সম্প্রতি আমিরাতের উপ-প্রধানমন্ত্রী মানসুর বিন জায়েদ আল নাহিয়ান শেখ হাসিনাকে একটি আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছেন। সেই আমন্ত্রণের পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ অক্টোবর দুবাই যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরের সময়সীমা এখনো নির্ধারণ হয়নি।

সর্বশেষ খবর