সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রাজশাহীতে মায়ের হাতে ছেলে রংপুরে বাবার হাতে মেয়ে খুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী ও রংপুর

রাজশাহী মহানগরীতে এক মা তার সাত বছরের শিশু সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার পর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। গত শনিবার গভীর রাতে বুধপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে মা তসলিমা বেগমকে (৩০) পুলিশ আটক করেছে। নিহত শিশু সন্তানের নাম শাহরিয়ার আলম কাব্য। এদিকে রংপুর শহরের তাজহাট এলাকায় এক বাবা তার ২২ মাসের শিশুকন্যাকে গলা টিপে হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সকালে পুলিশ কলাবাগানের ভিতর থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে।

কাব্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মডেল স্কুলের শিশু শ্রেণির ছাত্র। তসলিমা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, কাব্যের বাবা রফিকুল ইসলাম মেহেরচণ্ডি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার একটি ওষুধের দোকানও আছে। ঈদের ছুটিতে কাব্য নগরীর সাধুর মোড় এলাকায় নানা-নানীর বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। শনিবার সন্ধ্যায় কাব্যকে তার বাবা নানার বাড়ি থেকে নিয়ে আসেন। এরপর ছেলেকে বাড়িতে রেখে ওষুধের দোকানে যান। গভীর রাতে বাড়ি ফিরে তিনি ঘর বন্ধ পান। অনেক ডাকাডাকি করেও দরজা না খোলায় তিনি প্রতিবেশী কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকেন। এ সময় তারা ঘরের ভিতর কাব্যর রক্তাক্ত লাশ পান। মা তসলিমা বেগমও ওই সময় আহত অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিলেন। মতিহার থানার ওসি হুমায়ন কবির জানান, কাব্যর মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। মা তসলিমা বেগমের মাথাতেও ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, সন্তানকে কুপিয়ে হত্যার পর মা তসলিমা বেগমও আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছিলেন। তসলিমাকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনাস্থল থেকে একটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে। কাব্যর লাশ রামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বাবার হাতে ২২ মাসের শিশু খুন : রংপুর শহরের তাজহাট এলাকায় এক বাবা তার ২২ মাসের শিশুকন্যাকে গলা টিপে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সকালে পুলিশ কলাবাগানের ভিতর থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে। আরিফা নামের এই শিশুর বাবার নাম আলাল হোসেন। তিনি কিশামত বিশুমানজাই এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। নিহতের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আলাল তার স্ত্রী সেবা খাতুনকে নিয়ে চট্টগ্রামে রিকশা চালান। মেয়ে আরিফা নগরীর ডিমলা কানুনগোটলা এলাকায় নানী আফরোজা বেগমের বাড়িতে থাকত। ঈদ করার জন্য আলাল ও সেবা বাড়িতে আসেন। ঈদের পরদিন স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে যান আলাল। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে স্ত্রীকে রেখে মেয়ে আরিফাকে নিয়ে আলাল নিজ বাড়িতে চলে যান। পরে সেবা বারবার মুঠোফোনে মেয়েকে ফেরত চাইলেও কোনো কাজ হয়নি। সেবা খাতুন বলেন, ‘এক বছর ধরে চট্টগ্রামে স্বামীর সঙ্গে থাকি। স্বামীর সঙ্গে অন্য এক মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। এজন্য সে প্রায়ই আমাকে তালাক দিতে চায়। এনিয়ে অনেকবার ঝগড়া হয়েছে। আমাকে মারপিটও করেছে। বৃহস্পতিবার মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার পর অনেকবার মোবাইলে মেয়েকে ফেরত চেয়েছি। কিন্তু দিচ্ছি-দেব বলে আর ফেরত দেয়নি। তারপর স্বামীই একমাত্র সন্তানকে হত্যা করেছে।’ কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল ইসলাম জানান, লাশের গলায় জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাকে অন্য কোথাও গলাটিপে হত্যার পর লাশ কলাবাগানে ফেলে রাখা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আরিফার নানী আফরোজা বেগম বাদি হয়ে আলাল হোসেনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

সর্বশেষ খবর