১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন আমাদের অধিকার বোধের চেতনার জন্ম দিয়েছিল। সেই চেতনার ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা ১৯৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করি। ভাষা আন্দোলন আমাদের চেতনায় যে প্রচণ্ড আবেগের তরঙ্গ তৈরি করে, সেই আবেগের প্রবাহে লালিত হয়েছে আমাদের সংগ্রামী সত্তা। একুশের আনুষ্ঠানিকতায় নগ্নপায়ে প্রভাতফেরির মিছিলে, শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপনে, একুশের সংকলন প্রকাশে, একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে সাংস্কৃতিক উৎসবের আয়োজনে লালিত সেই চেতনা ছিল সৃজনশীলতার উৎসও। একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়ে এমন আবেগ আনুষ্ঠানিকতা আর আন্তরিকতা সত্ত্বেও আমাদের যা করণীয় ছিল তা আমরা করতে পারিনি। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের যতটা উৎকর্ষ সাধন করা প্রয়োজন ছিল তা হয়নি। ফেব্রুয়ারি মাস এলেই বাহ্যিকভাবে আমাদের ভাষাপ্রীতি বেড়ে যায়। সারা বছর মাতৃভাষার শুদ্ধতা ও ব্যবহারিক বিষয় নিয়ে কারও ভাবনা নেই। আমি মনে করি, সময় এসেছে আবেগ কমিয়ে এখন বাংলা ভাষার ব্যবহারিক দিকে নজর দিতে হবে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হচ্ছে বেশ ঘটা করে কিন্তু বিশ্ব দরবারে আমরা পৌঁছাতে পারছি না। এজন্য একটি পৃথক ইনস্টিটিউট হতে পারে। তাদের কাজ হবে কেবলই মাতৃভাষার শুদ্ধতা নিশ্চিত করা ও অনুবাদ। আমাদের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট হয়েছে অথচ তাদের কাজ সম্পর্কে আমরা অবগত নই। এ প্রতিষ্ঠানটি সম্পূর্ণ আবেগের ফসল। সুতরাং এমন একটি প্রতিষ্ঠান চাই, যারা মাতৃভাষার শুদ্ধতা বজায় রাখবে। বাংলা ভাষার ধ্রুপদী রচনাগুলো তারা অনুবাদ করবে। আবার বিশ্ব সাহিত্যের ধ্রুপদী রচনাগুলো বাংলায় অনুবাদ করে সবার হাতে পৌঁছে দেবে। মেধাবী, চৌকস কিছু কর্মী নিয়ে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে এ কাজটি করা জরুরি। আঞ্চলিক পর্যায়ে ভাষার আঞ্চলিক ব্যবহার হতে পারে কিন্তু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মান বাংলা ব্যবহার করতে হবে। বাংলা তো শ্রুতিমধুর ভাষা। এজন্য এর বিজ্ঞান সম্মত ব্যবহার করতে হবে। আরেকটি বিষয় জরুরি, আমাদের দেশের গণমাধ্যমগুলোকে প্রমিত বাংলা ভাষা ও বানান অনুসরণ করতে হবে। এখানে এক এক পত্রিকা একেক রকম বানান লেখে। পশ্চিমবাংলায় এক রকম লেখা হয়। এক্ষেত্রে সমতা বিধান করতে হবে। ভাষা নিয়ে ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে তো বাংলা ভাষার অবস্থা শেষ পর্যায়ে, এখন আমাদের দেশের ভাষা নষ্ট করার নানা ষড়যন্ত্র আছে। সেটা প্রতিরোধ করতে হবে। যেহেতু একুশ শতকে বসে আমরা একুশের চেতনার কথা বলছি তখন একুশ শতকের প্রযুক্তির বিষয়, গতিশীলতার বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় জীবনে সাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও সর্বস্তরে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় তাকে প্রতিষ্ঠা করতে পারছি না। মাতৃভাষাকে আমরা এখনো উচ্চতর জ্ঞানচর্চার বাহন রূপে তৈরি করতে পারিনি। এটি বড় বেদনার বিষয়। লেখক : কবি
শিরোনাম
- আমিরাতকে হারিয়ে শেষ চারে ভারতের সঙ্গী পাকিস্তান
- গাজা নগরীতে দুই দিনে দেড় শতাধিক হামলা ইসরায়েলের
- গাজাবাসীকে ফের জোরপূর্বক উচ্ছেদের নিন্দায় পোপ
- স্বর্ণের দাম কমেছে
- ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের
- ছাত্র সংসদ আর জাতীয় নির্বাচন এক নয় : টুকু
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র কেনা বন্ধ করলো কলম্বিয়া
- রেমিট্যান্স প্রবাহে ২৮.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
- বিশ্ব বাণিজ্যে রূপান্তর ঘটাবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা : বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা
- আবারও রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
- দুর্গাপূজা ঘিরে স্বৈরাচারের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে : তারেক রহমান
- র্যাংকিংয়েও আফগানদের টপকে গেল টাইগাররা
- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে পাঁচজনের মৃত্যু
- ‘পিআর ইস্যুতে আলোচনার টেবিল রেখে রাজপথে যাওয়া স্ববিরোধিতা’
- শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের কেউ ভোট দিতে পারবেন না
- ভাঙ্গা থানায় ভাঙচুরের ঘটনায় নিক্সন চৌধুরীসহ ২৯ জনের নামে মামলা
- ‘অপারেশন প্যাসিফিক এঞ্জেল ২৫-৩’ এ উড্ডয়ন প্রশিক্ষণ অনুশীলন
- ‘পিআর পদ্ধতির দাবি জনগণের প্রত্যাশার প্রতি মুনাফেকি’
- ফেব্রুয়ারিতেই স্বচ্ছ ও উৎসবমুখর নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা
- দুর্গাপূজায় কোনো ধরনের হুমকি নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা