সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
ভোট নিয়ে উত্তাপ

আওয়ামী লীগ বিএনপির লড়াই কুমিল্লা সিটিতে

গোলাম রাব্বানী, ঢাকা ও মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

জমে উঠেছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। নগরী জুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই নগরীর চায়ের দোকান, অফিস-আদালত, বাসাবাড়ি সর্বত্র চলছে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, কুমিল্লা সিটির নির্বাচনী মাঠে লড়াই হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থীর মধ্যে। ৩০ মার্চ ভোট হবে এই সিটির। নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইসি আগাম পোস্টার অপসারণে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নির্দেশনা দিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু না হলেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা ভোটারদের দোয়া চাইছেন।

এদিকে এই সিটিতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আফজল খানের মেয়ে আঞ্জুম সুলতানা। তিনি কুমিল্লা পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন। গত রাতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডে তার নাম চূড়ান্ত করা হয়। এদিকে শনিবার রাতে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন সদ্য বিদায়ী মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তাকে মনোনয়ন প্রদান করেন। অন্যদিকে সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে হাফ ডজন নেতা দৌড়ঝাঁপ করেছেন। সবাই দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দৌড়ে টিকে গেলেন আঞ্জুম সুলতানা।

সূত্র জানায়, ২০১১ সালের ১০ জুলাই ১৮৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা পৌরসভা ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ পৌরসভা একত্র করে ৫৩ দশমিক ৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনে ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী অধ্যক্ষ আফজল খানকে পরাজিত করে বিজয়ী হন দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কু। এর আগে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশার বিষয়ে কুমিল্লা পৌরসভার সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আঞ্জুম সুলতানা সীমা বলেন, ‘সাবেক কুমিল্লা পৌরসভায় কাজ করেছি। আরও বড় পরিসরে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। দলের মনোনয়ন বোর্ডে আবেদন করেছি। আশা করছি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মূল্যায়ন করবেন।’ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে সদ্য বিদায়ী মেয়র ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কু জানান, ‘অনেক প্রতিকূলতার পরও বিরোধী দলে থেকে নগরবাসীর সেবা করেছি। এবার নির্বাচিত হতে পারলে অসম্পন্ন কাজগুলো সম্পন্ন করব।’ কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া বলেন, ‘টেস্ট কেস হিসেবে বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সাক্কু আমাদের যোগ্য প্রার্থী। এবারও তিনি নির্বাচিত হবেন বলে আশা করছি। কুমিল্লা কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে প্রত্যাশা করছি।’ জামায়াত থেকে মহানগর জামায়াতের আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, জাতীয় পার্টি (জাফর) থেকে এয়ার আহমেদ সেলিম ও স্বতন্ত্র মেজর (অব.) মামুনুর রশিদের নাম আলোচিত হচ্ছে। রিটার্নিং অফিসার ও কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল বলেন, ‘ইতিমধ্যে জেলা তথ্য অফিসকে চিঠি দিয়েছি। তারা বিলবোর্ড-পোস্টার নামানোর জন্য প্রচার করেছে। আমরা সম্ভাব্য প্রার্থীর বিলবোর্ড-পোস্টার, ব্যানার অপসারণ শুরু করেছি। নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে করার জন্য যা প্রয়োজন আমরা তাই করব।’ উল্লেখ্য, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ২ মার্চ। যাচাই-বাছাই ৫ ও ৬ মার্চ আর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৪ মার্চ। এখানে ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৭ হাজার ৩৮৪।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর