শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

কূটনীতিকদের সঙ্গে সিরিজ বৈঠক রাজনীতিবিদদের

পরিবেশের পক্ষে বিপক্ষে বললেন আওয়ামী লীগ বিএনপি নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের কথা শুনলেন কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা। গতকাল সকালে গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি বর্তমানে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকার কথা বললেও বিএনপি প্রতিনিধি পাল্টা অভিযোগ করেন। বিএনপির মতে, নির্বাচনের অনুকূলে সামান্য সুষ্ঠু পরিবেশ নেই।

কানাডা, আইআইডি ও এনডিআইর উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশ নেন অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, সুইডেন, নরওয়ে ও জাপানের কূটনীতিকরা। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সভায় রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, গওহর রিজভী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি। বিএনপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন। এ ছাড়া বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য শমসের মবিন চৌধুরী, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত  হোসেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ব্রতী’র প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ, সুজনের ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ বিভিন্ন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক সংস্থা ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

বৈঠক শেষে এইচ টি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সবকিছু করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কিছু বিষয়ে সমস্যা আছে। তা সমাধানের জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘এ নির্বাচন যাতে গ্রহণযোগ্য হয়, সে জন্য যা যা প্রয়োজন তা আমরা বলেছি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না হওয়া সত্ত্বেও আমরা নির্বাচনে এসেছি। এখন আমরা দেখছি আমাদের জার্নি হচ্ছে লং হিল জার্নি, আমরা আরও নিচের দিকে যাচ্ছি। আশা করি, বাকি দিনগুলোতে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। নির্বাচন কমিশনের প্রতি এখন পর্যন্ত জনগণের  কোনো আস্থা সৃষ্টি হয়নি। নির্বাচনটি নির্বাচনের আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে গেছে বিভিন্ন কারণে। এই প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া  থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে ইসিকে প্রমাণ করতে হবে তারা একটি ?নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায়।’ নইলে প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন আরও ‘খারাপের’ দিকে যেতে পারে।

দীপু মনি বলেন, ‘নির্বাচনটা কীভাবে আরও ভালো করা যায়  সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গত ১০ বছরে ও তার আগে ২০০৭-০৮ সালেও নির্বাচনী পুরো প্রক্রিয়ায় যে ধরনের সংস্কার করা হয়েছে, ওইসব সংস্কারের মাধ্যমে আজকে একটা সিস্টেম দাঁড়িয়েছে, যার মাধ্যমে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।

এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দৃশ্যমান ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশন না হওয়ার কিছু আলামত দেখা যাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু সদস্যের তৎপরতায়। এগুলো দে (কূটনীতিকরা) আর অবজারভিং। এটা হয়তো বাংলাদেশের ভালো অর্জনগুলোকে ম্লান করতে পারে।

শারমিন মুরশিদ বলেন, ‘অনুষ্ঠানে সরকার ও বিরোধী দলের যারা প্রতিনিধি ছিলেন, তারা যথেষ্ট খোলাসাভাবে তাদের  বোধগুলো তুলে ধরেছেন। আশা করি এ ধরনের আলোচনা সবার মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করবে, টেনশন ও অস্থিরতা কমাবে।’

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অপেক্ষায় আছি-বি. চৌধুরী : গতকাল সন্ধ্যায় নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য সফররত যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) একটি প্রতিনিধি দল যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে তার বারিধারার বাসভবনে বৈঠক করে। বৈঠক শেষে অধ্যাপক বি. চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অপেক্ষায় আছি। আমরা চাই, নির্বাচনে ভোটাররা অবাধে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

এনডিআই প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংস্থাটির লিঙ্গ, নারী ও গণতন্ত্রবিষয়ক পরিচালক সেন্দ্রা পেপেরা, সিনিয়র অ্যাসেসিয়েট ইভান ডহেরটি, এশিয়ার প্রোগ্রাম অফিসার  মেইভ ভিলান ও গভর্নেন্স কনসালট্যান্ট কাজী শাহিদুল ইসলাম। বৈঠকে বি. চৌধুরী ছাড়াও বিকল্পধারার মহাসচিব  মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, বি. চৌধুরীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা শমসের মবিন চৌধুরী বীরবিক্রম, সহ-সভাপতি প্যানেলের সদস্য মাহমুদা চৌধুরী, প্রেসিডিয়াম সদস্য  গোলাম সারোয়ার মিলন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ খবর