শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

দয়া করে এ প্লাসের জন্য চাপ দেওয়া বন্ধ করুন

আকতারুজ্জামান ও জয়শ্রী ভাদুড়ী

দয়া করে এ প্লাসের জন্য চাপ দেওয়া বন্ধ করুন

অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, পৃথিবীর অন্য দেশে শিশুদের পরীক্ষার সংখ্যা কমানো হচ্ছে। অথচ আমাদের দেশে উল্টো অবস্থা। পঞ্চম শ্রেণির শিশুদের পরীক্ষা নেওয়া রীতিমতো জুলুম। তাদের জীবন থেকে খেলাধুলা বিনোদন সরিয়ে দিয়ে দিনভর শুধু পড়াশোনা। অভিভাবক ও শিক্ষকদের বলতে চাই, দয়া করে এ প্লাসের জন্য শিশুদের এভাবে চাপ দেওয়া বন্ধ করুন। দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, সকালে উঠে স্কুল, স্কুল থেকে ফিরে কোচিং এরপর গৃহশিক্ষক। শিশুদের জীবন অসহ্য হয়ে উঠছে। শিশুমনোবিজ্ঞান এভাবে পড়াশোনাকে অনুমোদন দেয় না। এত পরীক্ষার চাপ দিয়ে শিশুদের জীবন দুর্বিষহ করার কোনো অর্থ হয় না। এতগুলো পরীক্ষা নেওয়া একটা অসুস্থ সিদ্ধান্ত। ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোর বিষয়ে ড. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ইংলিশ মিডিয়াম, মাদ্রাসা থেকে শুরু করে যে কোনো প্রতিষ্ঠানের সিলেবাস, শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া এবং গুণগত মান অবশ্যই শিক্ষা মন্ত্রালয়ের অনুমোদনে পরিচালিত হতে হবে। সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলা উচিত নয়। ‘এ’ লেভেল, ‘ও’ লেভেল কিংবা কিন্ডারগার্টেন যে প্রতিষ্ঠানই হোক না সরকারের আওতার বাইরে ইচ্ছামতো চলা কোনো যুক্তির মধ্যে পড়ে না। এসব প্রতিষ্ঠানের সিলেবাসেও বেশ কিছু বিষয়ে সমস্যা আছে। তিনি বলেন, ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা ইংরেজিতে ভালো হলেও অন্য বিষয়ে দুর্বলতা লক্ষ্য করা যায়। এ কারণে উচ্চ শিক্ষার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলে তাদের চান্স পাওয়ার আনুপাতিক হার কম দেখা যায়। অভিভাবকদের ভুল ধারণা থাকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়লেই ভালো হবে। এর মধ্য দিয়ে উচ্চশিক্ষায় সমস্যা থেকে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়ে বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ বলেন, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা যদি যথার্থ এবং নির্ভরযোগ্য হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার দরকার পড়ে না। দুই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা যেত। এ বিষয়ে যদি প্রশ্ন থাকে তাহলে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে হবে। মেডিকেলে যদি গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে পারে তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্যা কোথায়। লাখ লাখ শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের প্রয়োজনে এই সিদ্ধান্ত নিতে জাতীয় সংসদে প্রয়োজনে বিল পাস করার দাবি জানাই।

সর্বশেষ খবর