শিরোনাম
বুধবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিদেশে দূতাবাসে নিয়োগ পাচ্ছে পুলিশ

সাখাওয়াত কাওসার

বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাস এবং হাইকমিশনে কাজ করবে পুলিশ। এতে করে পূরণ হতে যাচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশি এবং পুলিশ সদস্যদের দীর্ঘদিনের এই দাবি। অতীতে পুলিশের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনায় সাড়া না মিললেও গতকাল মিলল প্রধানমন্ত্রীর সবুজ সংকেত। সূত্র বলছে, শিগগিরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পুলিশ সদস্যদের কীভাবে ডেপুটেশনে নিয়োগ দেওয়া যায় তা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবে পুলিশ সদর দফতর। বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অন্য ক্যাডারদের মধ্যে প্রশাসন, তথ্য এবং ইকোনমিক ক্যাডারের অফিসাররা ডেপুটেশনে দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশ সদর দফতরের উপমহাপরিদর্শক (সংস্থাপন) হাবিবুর রহমান গতকাল বলেন, বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাস এবং হাইকমিশনে পুলিশ সদস্যরা কাজ করলে দেশের মানুষ তথা দেশই উপকৃত হবে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবির বিষয়ে অত্যন্ত ইতিবাচক। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাঠামো অনুযায়ী আমরা আমাদের কর্মকর্তাদের ডেপুটেশনে পাঠাব। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন, তাই শিগগিরই এ বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করব।  জানা গেছে, পুলিশ সপ্তাহ-২০১৯ উপলক্ষে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পুলিশ সুপার থেকে তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের বিশেষ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে পুলিশ কর্মকর্তা থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেন উপমহাপরিদর্শক (হাইওয়ে) আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি নাগরিকরা বসবাস করছেন। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। তবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিভিন্ন সময়ই নানা ধরনের আইনগত সমস্যার শিকার হন। এর বাইরে বিদেশে বসে অনেক নাগরিক দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। অপরাধের বহুমাত্রিকতার কারণে বিদেশে বসে সাইবার ক্রাইম সংঘটিত করছে অপরাধীরা। একের পর এক মানি লন্ডারিংয়ের কারণে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আবার প্রবাসীদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স এবং পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের জন্য প্রায়ই নানা ভোগান্তির শিকার হতে হয়। এক্ষেত্রে দূতাবাস এবং হাইকমিশনগুলোতে পুলিশ সদস্যদের ডেপুটেশনে রাখা হলে প্রবাসীরা উপকৃত হবেন এবং রাষ্ট্র উপকৃত হবে। কর্মকর্তাদের বক্তব্য শোনার পর দূতাবাস এবং হাইকমিশনে পুলিশ সদস্যদের ডেপুটেশনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি দূতাবাসে পুলিশ দেওয়ার কথা বলেছিলাম। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে বিভিন্ন দেশে ৭৪টি মিশন অফিস রয়েছে। কোনো কোনো দেশে একাধিক শহরেও দূতাবাসের কার্যক্রম রয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি অ্যাডমিন বা ইকোনমিক ক্যাডারসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদেরও প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে নানা কারণে অপরিহার্যতা থাকার পরও পুলিশ সদস্যদের দূরে রাখা হচ্ছে। বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাস এবং মিশন অফিসগুলোতে পুলিশ সদস্যদের রাখার বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটির পক্ষ থেকে দাবি তোলা হলেও তা এড়িয়ে গেছে কর্তৃপক্ষ। পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, দূতাবাস বা মিশনগুলোতে সহকারী পুলিশ সুপার থেকে পুলিশ সুপার পদমর্যাদার পদ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের প্রেষণে পাঠানো হতে পারে। কারণ দূতাবাসে যে ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকতে হবে তাতে পুলিশ সুপারের উপরের পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়াটা সমীচীন হবে না। তবে আরেক কর্মকর্তা বলেন, দূতাবাসের কার্যক্রম বিবেচনা করে সেখানে যুগ্ম সচিব বা সহকারী সচিব পদমর্যাদার লোক প্রয়োজন সেখানে সেই পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। সূত্র বলছে, দূতাবাসগুলোতে অ্যাম্বাসেডর বা হাই কমিশনারের নিচে মিনিস্টার, কনস্যুলার প্রথম সেক্রেটারি, দ্বিতীয় সেক্রেটারি ও তৃতীয় সেক্রেটারি পদমর্যাদার  লোকজন থাকে। এ ছাড়া কনস্যুলার সার্ভিস, ইনফরমেশন বা লেবার কাউন্সিলর পদেও লোকজন নিয়োগ দেওয়া হয়। দূতাবাস বা মিশনে অ্যাম্বাসেডরের নিচেই সাধারণত পররাষ্ট্র ক্যাডারের লোকজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর বাইরে অন্য পদগুলোর কোনো একটিতে পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।

সর্বশেষ খবর