বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

শেষ দফায় কঠিন লড়াই

কয়েকটি আসনে মোদিসহ হেভিওয়েট, পশ্চিমবঙ্গের সচিবকে সরাল ইসি

নয়াদিল্লি ও কলকাতা প্রতিনিধি

শেষ দফায় কঠিন লড়াই

সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের শেষ দফার ভোটে অনেক আসনে হাড্ডাহাডি, লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। শেষ দফায় আগামী ১৯ মে আটটি রাজ্যের ৫৯ আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ (১৩), পাঞ্জাব (১৩), পশ্চিমবঙ্গ (৯), বিহার (৮), মধ্যপ্রদেশ (৮), হিমাচল প্রদেশ (৪), ঝাড়খ  (৩), চ ীগড় (১)টি আসন। শেষ দফাতেই ভোটাররা ঠিক করবেন কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি নেতা ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বা লোকসভার সাবেক স্পিকার মীরা কুমার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন কিনা। এদিকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করায় পশ্চিবঙ্গের স্বরাষ্ট্র সচিবকে সরিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

শেষ দফার নির্বাচন ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ও বিরোধী-উভয়ের কাছেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই ৫৯টি আসনের মধ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পায় ৪০টি আসন। এর মধ্যে বিজেপি একার দখলে ছিল ৩০টি আসন। তৃণমূলের দখলে ছিল ৯টি আসন, ৪টি আসন পেয়েছিল আম আদমি পার্টি (আপ), ৩টি আসন কংগ্রেস, ২টি আসন ঝাড়খ  মুক্তি মোর্চা (জেএমএম), ১টি আসন পায় জনতা দল ইউনাইটেড। এ দফায় অন্যতম নজরকাড়া লোকসভা আসন হলো উত্তরপ্রদেশের ‘বারানসি’। এ আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের প্রার্থী অজয় রাই, সমাজবাদী পার্টি ও বহুজন সমাজ পার্টির জোট প্রার্থী হয়েছেন শালিনী যাদব। এ আসনে মোদির জয় সহজ মনে হলেও উত্তরপ্রদেশসহ আট রাজ্যে একাধিক আসনে কঠিন লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলেছে। উত্তরপ্রদেশের গাজীপুর, কুশিনগর আসনে বিজেপি প্রার্থীদের জয় সরু সুতোর ওপর দাঁড়িয়ে। গাজীপুর আসনে ২০১৪ সালের নির্বাচনে অল্প ব্যবধানে জয় পেয়েছিলেন বর্তমান সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনোজ সিনহা। এবার তার বিরুদ্ধে সপা-বসপা জোট প্রার্থী আফজল আনসারী। কুশিনগরের সপা-বসপা জোট প্রার্থী জোর টক্কর দিতে চলেছে বিজেপি প্রার্থীকে। গতবার কংগ্রেস প্রার্থী আর পি এন সিংয়ের বিপক্ষে ১০ শতাংশেরও কম ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির প্রার্থী রাজেশ পান্ডে। বিহারে পালিতপুরা এবং সাসারাম-এ দুই আসনে আশ্চর্যজনক ফল দেখা যেতে পারে আগামী ২৩ মে। সাসারাম কেন্দ্রে হেভিওয়েট প্রার্থী কংগ্রেসের মীরা কুমার। গতবারের নির্বাচনে মীরাকে হারিয়েছিল বিজেপির চেড্ডি লাল পাসওয়ান। জয়ের শতকরা হার ৭.৪৮ শতাংশ। ২০০৪ ও ২০০৯ সালে এই কেন্দ্রেই জয় পেয়েছিলেন মীরা কুমার। পালিতপুরা আসনে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) প্রার্থী মিশা ভারতীকে (লালুর কন্যা) হারিয়ে বিজেপির প্রার্থী রাম কৃপাল যাদব জয়ী হলেও তার জয়ের শতকরা হার ছিল মাত্র ৪.১২ শতাংশ। আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদবের একসময়ের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী হলেও ২০১৪ সালের নির্বাচনের ঠিক আগের মুহূর্তে দল পরিবর্তন করে বিজেপিতে নাম লেখান রাম কৃপাল। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী জোট প্রার্থী হিসেবে মিশা ভারতী কঠিন লড়াই দিতে পারেন।

 ঝাড়খে  বিজেপির দখলে থাকা গোড্ডা আসন এবং জেএমএমের দখলে থাকা দুমকা ও রাজমহল আসন দুটিতে শক্ত লড়াই হতে চলেছে।

 গতবার চার আসনে লড়াই করে দুটি আসনে জয় পেয়েছিল শিবু সোরেনের দল জেএমএম। গোড্ডা আসনটি বরাবরই কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী নিশিকান্ত দুবে ছয় শতাংশের কম ভোট পেয়ে কংগ্রেস প্রার্থী ফুরকান আসনারির বিপক্ষে জিতেছিলেন। এবারও এ আসনটি নিজের দখলে রাখতে চাইলেও দুবেকে জোট প্রার্থী ঝাড়খ  বিকাশ মোর্চার প্রদীপ যাদবের বিপক্ষে কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জেতা অন্তত চারটি আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত মিলেছে। বসিরহাট, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর এবং জয়নগর-চারটি কেন্দ্রেই গতবার তৃণমূল প্রার্থীদের অল্প ব্যবধানে জয়ের মুখ দেখতে হয়েছিল। কিন্তু এবার এই প্রতিটি কেন্দ্রে ত্রিমুখী লড়াই দেখা যাবে।

পাঞ্জাবে এই ধাপে ১৩ আসনে ভোট হবে এর মধ্যে ৯টি আসনে অন্যরকম ফলের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। গতবারের নির্বাচনে শিরোমণি আকালি দলের (এসএডি) চার সাংসদ, আপের দুই সাংসদ এবং বিজেপির এক সাংসদের জয়ের ব্যবধান এতটাই কম ছিল যে সেখানে বর্তমান সাংসদের আসন ধরে রাখাটা যথেষ্ট কঠিন। এ রাজ্যে এবার ১০ আসনে লড়ছে শিরোমণি আকালি দল। এর মধ্যে ভাতিন্ডা, আনন্দপুর সাহিব, ফিরোজপুর ও খাবদুর সাহেব আসনগুলোতে হাড্ডাহড্ডি লড়াইয়ের মুখে পড়তে হতে পারে এসএডিকে। 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর