দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষায় এই বাজেটের বিকল্প নেই বলে মনে করেন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান-বিআইডিএস’র জ্যেষ্ঠ গবেষক ড. নাজনীন আহমেদ। তার মতে- বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কাঠামো যেভাবে এগোচ্ছে, আগামী ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটেও সে অনুযায়ী হয়েছে। অর্থমন্ত্রী কাঠামোগত সংস্কারের যে প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, সে জটিলতা দূর করতে পারলে, এই বাজেট ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে ড. নাজনীন আহমেদ আরও বলেন- এই বাজেট দেশের মোট দেশজ উৎপাদন-জিডিপি প্রবৃদ্ধির আকার হিসেবে বড় নয়। তবে রাজস্ব আয় চ্যালেঞ্জিং হবে। রাজস্ব খাতে বড় পরিবর্তন হয়নি। নতুন মূল্য সংযোজন কর-মূসক বা ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়েও প্রশ্ন আছে। আর রাজস্ব আয়ের চেয়ে নতুন ভ্যাট আইনের বাস্তবায়ন আরও বেশি চ্যালেঞ্জ হবে। প্রস্তাবিত বাজেটের রাজস্ব আদায় করা অসম্ভব নয়। কিন্তু ভ্যাট আইন কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সেটা দেখার বিষয়। এই অর্থনীতিবিদ মনে করেন, আগামীতে বড় করাদাতাদের ওপর একটা চাপ আসবে। এক্ষেত্রে যে সব বড় বড় ফাঁকি দেন, তাদের রাজস্ব কাঠামোতে শক্তভাবে আনা হয়নি। যদিও কর আদায়ের পরিমাণ দিনে দিনে বাড়ছে। এক্ষেত্রে অগ্রগতি আগের চেয়ে ভালো। এই ধারাবাহিকতা রক্ষায় রাজস্ব কাঠামোগত পরিবর্তনে অর্থমন্ত্রী নজর দেবেন, এটাই প্রত্যাশা করছি।
ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা দেখা গেছে। বড় ৭ প্রকল্পে ৬ ভাগের ৭ ভাগ অর্থই খরচ হয়েছে। এখন দেখার বিষয় হলো- অর্থ খরচ যে হচ্ছে, তা মানসম্মত কিনা।
এটা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তার মতে- বাজেটে বেসরকারি খাতে প্রণোদনা ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করবে। রেমিট্যান্সে প্রবাসীদের ২ শতাংশ প্রণোদনার ফলে হুন্ডি ব্যবসা নিরুৎসাহিত হবে। সরকারের জন্য ভালো হবে। অর্থ পাচারও রোধ হবে। খেলাপি ঋণ প্রসঙ্গে বিআইডিএস’র এই জ্যেষ্ঠ গবেষক বলেন, ঋণখেলাপিদের দেউলিয়া ঘোষণা করলে সমস্যার সমাধান হবে না। তাদের কাছ থেকে ঋণের অর্থ উদ্ধারের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ হলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক কমে আসবে এবং আর্থিক খাতে স্বচ্ছতাও ফিরে আসবে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।