শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০১৯ ০০:০০ টা

নতুন চ্যাম্পিয়ন দেখবে বিশ্ব

ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ফাইনাল

দুবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতকে হারিয়ে এক দিন আগেই ম্যানচেস্টারে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে নিউজিল্যান্ড। গতকাল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড। দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালের টিকিট পায় ব্ল্যাক ক্যাপসরা, আর ইংলিশদের এটি চতুর্থ ফাইনাল। এর আগে একবারও শিরোপা জিততে পারেনি দুই দলের কেউই। তাই এবার এক নতুন চ্যাম্পিয়নকে দেখতে যাচ্ছে ক্রিকেটবিশ্ব।

প্রথম সেমিফাইনালে ভারতের সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে পাত্তাই দেয়নি স্বাগতিকরা। অসিরা মাত্র ২২৩ রানে অলআউট হয়ে যাওয়ার পর ম্যাচের ফল যেন প্রথম ইনিংসেই অনেকটা নির্ধারিত হয়ে যায়! ২২৪ রানের জয়ের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১০৭ বল হাতে রেখেই গন্তব্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড। ৮ উইকেটের দুরন্ত এক জয়। নিরুত্তাপ এই ম্যাচে দর্শকদের দারুণ বিনোদন দিয়েছে জেসন রয়ের ঝড়ো ব্যাটিং। মাত্র ৬৫ বলে ৮৫ রান করেছেন ইংলিশ ওপেনার। তার ইনিংসে ছিল ৯টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৫টি বিশাল ছক্কার মার। ম্যাচের ১৬তম ওভারে স্মিথের ওভারে টানা ৩ বলে হাঁকানো ছক্কা ৩টি ছিল দেখার মতো। শেষের ছক্কায় বল তো এজবাস্টনের গ্যালারির তৃতীয় ফ্লোরে গিয়ে আঘাত করে। জেসন রয়ের তা বে ব্যাটিংয়ের পরও এ ম্যাচের নায়ক ক্রিস ওকস। কারণ এই ইংলিশ পেসারই কাল অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইনআপে ধস নামিয়েছেন। মাত্র ২০ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ওয়ানডে ক্রিকেটে বড় স্কোর করতে হলে সব সময়ই পাওয়ার প্লের প্রথম ১০ ওভার হচ্ছে ‘এক্স-ফ্যাক্টর’! কিন্তু কাল অসিরা শুরুতেই ঝড়ের কবলে পড়েছে। এই ১০ ওভারে মাত্র ২৭ করেছে তারা। উইকেটও হারাতে হয়েছে ৩টি। অথচ এই সময়ে ইংলিশরা বিনা উইকেটে করেছিল ৫০ রান। আসলে কাল ইংলিশরা একেবারে অলআউট ক্রিকেট খেলেছে। কোনো বিভাগেই তারা অস্ট্রেলিয়াকে এগিয়ে থাকতে দেয়নি। কাল অস্ট্রেলিয়ার কোনো পরিকল্পনাই কাজে লাগেনি। স্কোর বোর্ডে বড় সংগ্রহ করে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে মানসিকভাবে আঘাত করতে চেয়েছিল তারা। কিন্তু তাদের কৌশলটা যেন বুমেরাং হয়ে যায়। দলীয় ১০ রানের মধ্যে সেরা দুই ব্যাটসম্যান ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারোন ফিঞ্জকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। ১৪ রানের মাথায় পিটার হ্যান্ডসকম্ব আউট হয়ে যাওয়ায় যেন রীতিমতো বিপাকে পড়ে যায় অসিরা। ইংলিশ পেসে দিশাহারা হয়ে শেষ পর্যন্ত মাত্র ২২৩ রানেই অলআউট হয়ে যায় তারা। ক্রিস ওকসের পাশাপাশি অসাধারণ বোলিং করেছেন জোফরা আর্চারও। তিনি ৩২ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট। তবে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দারুণ লড়াই করেছেন স্টিভেন স্মিথ। অসির সাবেক অধিনায়ক ওয়ান ডাউনে নেমে ৮ নম্বর উইকেট হিসেবে আউট হওয়ার আগে করেছেন ৮৫ রান। এ ছাড়া অ্যালেক্স ক্যারির ব্যাট থেকে এসেছে ৪৬ রান। এবারের বিশ্বকাপটা কেমন যেন ‘আনপ্রেডিকটেবল’ হয়ে গেছে! কখনো ৩ শতাধিক স্কোরও অনায়াসে চেজ হয়ে যাচ্ছে। আবার খুব ছোট টার্গেট দিয়েও জয় পেয়েছে অনেক দল। তাই কাল অস্ট্রেলিয়া ২২৩ রান করার পর হয়তো ক্রিকেটামোদীদের ২০ বছর আগের এই বার্মিংহামের সেই ঐতিহাসিক ‘টাই’ ম্যাচটির কথা স্মৃতিপটে ভাসছিল!

সর্বশেষ খবর