সোমবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধু বিপিএলের জমকালো উদ্বোধন

মেজবাহ্-উল-হক

বঙ্গবন্ধু বিপিএলের জমকালো উদ্বোধন

চোখ ধাঁধানো জমকালো বর্ণিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠল বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বঙ্গবন্ধু বিপিএল)। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি ২০১৯-এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করছি।’ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আতশবাজির বর্ণিল আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে যায় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের আকাশ। এ সময় স্টেডিয়ামের ৯টি জায়ান্ট স্ত্রিনেই ভেসে ওঠে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল বসুন্ধরা গ্রুপ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান আকর্ষণ ছিল বলিউডের তারকা জুটি সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফ। এতে সংগীত পরিবেশন করেছেন ভারতের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কৈলাশ খের ও সনু নিগম। বাংলাদেশি শিল্পীদের মধ্যে মঞ্চ মাতিয়েছেন জেমস, ‘ডিরকস্টার’-এর শুভ ও রেশমী মির্জা। ছিল লেজার শো-ও। প্রধানমন্ত্রী স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন জেমসের প্রথম গানের পর। বিপিএলের উদ্বোধন ঘোষণা করার পর তিনি মঞ্চের সামনে বিশেষ আসনে বসেই উপভোগ করেন জেমস, কৈলাশ খের ও সনু নিগমের গান এবং সালমান-ক্যাটরিনার পারফরম্যান্স। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বক্সে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান। এ ছাড়া এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এমপি, গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গাজী গোলাম দস্তগীর বীরপ্রতীক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান ও ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান এবং অন্যান্য অতিথি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ আকর্ষণ ছিল ভারতের জনপ্রিয় শিল্পী সনু নিগমের কণ্ঠে গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার ও শিল্পী অংশুমান রায়ের কালজয়ী সেই বাংলা গান-

‘শোনো একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি

আকাশে-বাতাসে ওঠে রণি

বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ

বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ।’

যে গানটি বাজানো হতো স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রাত্যহিক ‘বজ্রকণ্ঠ’ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ প্রচারের পর। এই গানটি গেয়ে স্টেডিয়ামে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি করেন সনু নিগম।

এর আগে তিনি আরও একটি বাংলা গান গেয়েছেন। উপস্থিত সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে শুরু করেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের বিখ্যাত গান

‘ধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা

তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা

ও সে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা

এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি

সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি

সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি।’

এই গানের পর প্রধানমন্ত্রী করতালি দিয়ে অভিনন্দন জানান সনু নিগমকে। ঠিক সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে মঞ্চে ওঠেন ভারতের জনপ্রিয় এই সংগীত শিল্পী। শুরু করেন ‘ক্রেজি দিল মেরা’ হিন্দি গান দিয়ে। একে একে ‘দিবানা মে হু দিবানা তেরা’, ‘শোকরাল্লা ওয়ালহামদুলিল্লাহ’, ‘কাভি আল বিদা না কাহনা’, ‘সাজনা পেহলা পেহলা পেয়ার হ্যায়’, ‘ইয়ে দিল দিবানা’, ‘মেরে হাত মে সারি জিন্দেগি’, ‘তুঝে লাগে না দিল জরিয়া’, কাল হো না হো’র মতো বলিউডের সেরা গানগুলো গেয়ে তিনি মাতিয়েছেন বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। কাল রাতে এক ঘণ্টায় মঞ্চে মোট ১২টি জনপ্রিয় গান গেয়েছেন সনু নিগম।

এর আগে সন্ধ্যা ৬টা ৪৪ মিনিটে মঞ্চে ওঠেন জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা জেমস। তার প্রথম গান ‘সুলতানা বিবিয়ানা সাহেব বাবুর বৈঠকখানা।’ এই গানের পরই স্টেডিয়ামে আসেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্বোধন ঘোষণার পর আরও তিনটি গান পরিবেশন করেন এই ব্যান্ড কিংবদন্তি। এরপর গেয়েছেন ‘সবাই বলে ওই আকাশে লুকিয়ে আছে, কোথায় আছে কেমন আছে মা’। পরে জেমস গেয়েছেন জনপ্রিয় হিন্দি গান ‘চল চলে আপনে ঘর হাম সফর’। তার শেষ গানটি ছিল ‘তারায় তারায় রটিয়ে দেব তুমি আমার’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টায় তারকা ব্যান্ড ‘ডিরকস্টার’-এর শিল্পী শুভর ‘ডাক দিয়েছেন দয়াল আমারে’ গান দিয়ে। তার দ্বিতীয় গানটি ছিল ‘নিটল পায়ে রিনিক ঝিনিক’। এরপর মঞ্চে ওঠেন রেশমী মির্জা। তিনি গেয়ে শোনান ‘তোমরা দেখো গো আসিয়া’। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন কণ্ঠশিল্পী জুয়েল ও সংগীতা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট চ্যানেল নিউজ টোয়েন্টিফোর।

সর্বশেষ খবর